, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

আফগান পার্লামেন্টে তালেবান হামলা, নিহত ৭

প্রকাশ: ২০১৫-০৬-২৩ ১০:৩৭:৩৪ || আপডেট: ২০১৫-০৬-২৩ ১০:৩৭:৩৪

Spread the love

 afganistan

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ইন্টা. ডেস্ক:   আফগানিস্তানে পার্লামেন্টে অতর্কিতে জঙ্গি হামলা। চারদিক ছেয়ে যায় ধোঁয়ায়। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ আর এমপিদের আর্তচিৎকার এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। যে যেভাবে পারেন সেভাবেই পালাচ্ছিলেন পার্লামেন্টের অধিবেশন ছেড়ে। তখনও স্পিকার তার আসনে। সবাইকে শান্ত হতে বলেন। কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় তার দু’পাশ থেকে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা গিয়ে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। অধিবেশনের সরাসরি সমপ্রচারে এমন দৃশ্য ধরা পড়েছে।

 

গতকাল সকালে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশন চলছিল। এমপিরা যার যার আসনে বসে আছেন। এমন সময় সশস্ত্র জঙ্গিরা সেখানে হামলা করে। এতে হামলাকারীদের ৭ জনই নিহত হয়। পরে এর দায় স্বীকার করেছে তালেবান জঙ্গিরা। গতকাল বিশ্বের সব মিডিয়ায় গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয় এ খবর। কোন কোন টেলিভিশন তাদের নিয়মিত সমপ্রচার বন্ধ করে আফগানিস্তানের হামলা তুলে ধরতে থাকে।

 

গতকাল দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির মনোনীত প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা ছিল পার্লামেন্টে। তাকে যখন পরিচয় করিয়ে দেয়া হবে পার্লামেন্টে ঠিক তার পূর্ব মুহূর্তে ওই হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। পার্লামেন্টের ভেতর এ সময় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। চারদিকে সৃষ্টি হয় এক ভীতিকর পরিবেশ। দু’ঘণ্টা চলে এ লড়াই। একপর্যায়ে হামলাকারী ৭ জনই মারা পড়ে। তবে তাদের দলে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলাকারীও ছিল।

 

এ খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দূর থেকে দেখা যায় আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি। রাস্তায় রাস্তায় উদ্বেগাকুল মানুষের ছোটাছুটি। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় কাবুল। তবে ন্যাটো বাহিনীর অনুপস্থিতিতে আফগান বাহিনীর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ন্যাটো বাহিনী গত ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে তাদের মিশন শেষ করে।

 

কাবুল পুলিশের মুখপাত্র এবাদুল্লাহ কারিমি বলেন, পার্লামেন্ট ভবনের গেটের কাছে মূল সড়কে প্রথমে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরিত হয়। এরপরই একদল হামলাকারী পার্লামেন্টের সামনের ভবনে প্রবেশ করে।

 

উপ-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাজিব দানিশ বলেন, হামলা চালিয়েছে ৭ জঙ্গি। এ হামলায় আহত হয়েছেন ১৫ জন। তারা সবাই বেসামরিক মানুষ। হামলাকারীরা পার্লামেন্টের ভেতর রকেটচালিত গ্রেনেড ছুড়ে মারে। তবে এতে সেখানে বড় ধরনের কোন ক্ষতি হয় নি।

 

ঘটনার সময় পার্লামেন্টের ভেতর ছিলেন এমপি মোহাম্মদ রেজা খোশাক। তিনি বলেন, সবেমাত্র সেশন শুরু হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হবে। তার জন্য আমরা অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ আমরা বিকট শব্দে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। এর আগে বেশ কয়েকটি ছোটখাটো বিস্ফোরণ ঘটে। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পার্লামেন্ট। এমপিরা পার্লামেন্ট ছাড়তে থাকেন পড়িমরি করে।

 

তালেবানরা গত এপ্রিল থেকেই আফগানিস্তানজুড়ে হামলা শুরু করে। এর মধ্যে তারা সরকারি প্রশাসনিক ভবনগুলোকে টার্গেটে পরিণত করেছে। সমপ্রতি পবিত্র রমজানে তালেবানদের প্রতি হামলা বন্ধ রাখার আহ্বান জানান দেশের সিনিয়র এক ধর্মীয় নেতা। কিন্তু তারা সে আহ্বানকে থোড়াই কেয়ার করছে। এর আগে ২০১২ সালে আত্মঘাতী একটি গ্রুপ পার্লামেন্টে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল। তারা ওই সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন অংশে সমন্বিতভাবে হামলা করে। তার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু কূটনৈতিক অবস্থান।

 

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে তালেবানদের ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। পার্লামেন্টে হামলা চালানোর জন্য তারা এর দায় স্বীকার করেছে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ টুইটারে এক পোস্টে বলেছেন, বেশ কয়েকজন মুজাহিদীন পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করেছে।

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এ এইচ বি

Logo-orginal