, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

নারীর মর্যদা কেউ দিয়েছে কি….?

প্রকাশ: ২০১৫-০৬-০৯ ১০:৫১:৫০ || আপডেট: ২০১৫-০৬-০৯ ১০:৫১:৫০

Spread the love

271386_112603485561705_1717449170_o

এই পৃথিবীতে বসবাসকারী মানব জাতির মধ্যে অর্ধেক নারী আর অর্ধেক নর। আর এই মানবজাতিরাই হল পৃথীবির শ্রেষ্টজাতি। পৃথিবীর ইতিহাসে বহু ঘটনার জন্ম দিয়েছে এই মানবজাতি। একক ভাবে তা শুধূ পুরুষেরাই ইতিহাস সৃষ্টি করেছে তা নয়, নারীদের ও বহু গৌরবময় ইতিহাস পৃথিবীতে রয়েছে।
মানবমন্ডলির মধ্যে দুটি প্রবনতা রয়েছে, একটি জৈবিক প্রবণতা, আর অন্যটি নৈতিক প্রবণতা। এই দুটির সমন্বয়ে মানুষ সৃষ্ট। ফেরেস্তাদের জৈবিক প্রবণতা নেই, আছে শুধু নৈতিক প্রবণতা। তারা আল্লাহর হুকুম পালন করতে বাধ্য, এবং ইচ্ছা শক্তির স্বাধীনতা ও তাদের নেই। আর পশুদের নৈতিক প্রবনতা নেই, আছে শুধু জৈবিক প্রবণতা। তাদের কোন জবাবদিহীতা নেই, তারা মানুষের অধীন। আর মানুষের রয়েছে দুটি মূল্যবান সম্পদ, জৈবিক এবং নৈতিক শক্তি। এই দুটির সমন্বয়ে মানুষ অসাধ্যকে সাধন করে নিতে পারে।
পুরুষ আর নারী একে অন্যের পরিপুরক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নারীর মর্যাদা নিয়ে, কে দিয়েছে নারীর মর্যদা…?
মানুষের সৃষ্টির্কতা হচ্ছেন মহান আল্লাহ তাআলা, যিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনিই মানব মন্ডলির মর্যাদা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন; হে মানব মন্ডলী! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকি (আল্লাহভীরু), আল্লাহ সবকিছুর খবর রাখেন।(সূরা: হুজুরাত ১৩) এখানে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে উভয়ের মর্যাদা আল্লাহর নিকট ।

কারণ সৃষ্টির্কতা কারো উপর জুলুম করেন না, তিনি ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেছেন। ভেবে দেখুন পৃথিবীর সুন্দর্য বৃদ্ধি করেছে নারী পুরুষ মিলে, পারিবারিক বন্ধন, স্বামী স্ত্রীর সুন্দর সংসার সু মধূর মিলন। যাহা জান্নাতের সুখ দুনিয়ার জীবনে। যেটা উভয়ের পরস্পরের সহজহযোগিতার কারণেই সম্ভব। পারিবারিক জীবনে স্বামী স্ত্রীর মনের মিল না হলে, সে সংসার দুনিয়ার জন্য জাহান্নামের টুকরায় পরিণত হয়।

জান্নাতের পরিবেশ সৃষ্টি করা এটা একার পক্ষে সম্ভব নয় উভয়ের সহযোগিতার মাধ্যমেই সম্ভব। তাই প্রিয় নবীজি (সা:) বলেছেন তোমাদের মধ্য তাঁরাই উত্তম যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম, আর আমি আমার স্ত্রীদের কাছে উত্তম। (ইবনে মাযা- আয়শা রা: থেকে) একজন পুরুষের উত্তম হওয়ার জন্য তার স্ত্রীর মর্যাদা কতটুকু তা ইসলাম নির্ধারণ করে দিয়েছে।
নারীর সামাজিক মর্যাদা, পারিবারিক মর্যাদা, মায়ের মর্যাদা, বোনের মর্যাদা, এবং স্ত্রীর মর্যাদা। একজন ঈমানদার মুসলমানের জন্য তার মা পৃথিবীর সব চেয়ে বড় মূল্যবান সম্পদ। যে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত তথা জান্নাত। একই ভাবে বোন ভাইয়ের জন্য অনেক আদরের। একজন বড় ভাই ছোট বোনের জন্য অনেক বড় অবিভাবক।
মা, বোন, স্ত্রী, এই তিন জনের প্রতি এক জন ঈমানদার মুসলমানের যে গভীর শ্রদ্ধা, স্নেহবোধ, ভালবাসা, তা একটু চিন্তা করলেই একজন নারী বুঝতেই পারে ইসলাম তাদেরকে কতটুকু মর্যাদা দিয়েছে । মা, বোন. স্ত্রী, এই তিনজন ছাড়াও নানী, দাদী, খালা, ফুফু, শাশুরী, চাচী, মামী, ভাবী, তাদের মর্যাদা কি ইসলাম কম দিয়েছে? আল্লাহ তাআলা কোন বিষয়ে বাদ দেন নাই।
মুমিনা নারী, মুমিন পুরুষ তাদের সর্ম্পক কেমন হবে তাও কুরআন করিমে বলে দিয়েছেন। মহান প্রভূ আল্লাহ বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন।

আর মুমিন পুরুষ ও মুমিনা নারীরা হচ্ছে পরস্পর একে অন্যের বন্ধু, তারা সৎ বিষয়ের আদেশ দেয় এবং অসৎ বিষয় হতে নিষেধ করে, আর সালাত (নামাজ) এর পাবন্দী করে ও যাকাত প্রদান করে, আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ মেনে চলে, এসব লোকের প্রতি আল্লাহ অবশ্যই করুণা বর্ষণ করবেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমতাবান, হিকমতওয়ালা। আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিনা নারীদেরকে এমন উদ্যানসমূহের ওয়াদা দিয়ে রেখেছেন যেগুলোর নিম্নদেশে বইতে থাকবে নহরসমূহ, যে (উদ্যান) গুলোর মধ্যে তারা অনন্তকাল থাকবে, আরও (ওয়াদা দিয়েছেন) ঐ উত্তম বাসস্থানসমূহের যা চিরস্থায়ী উদ্যানসমূহের অবস্থিত হবে, আর আল্লাহর সন্তুষ্টি হচ্ছে সর্বাপেক্ষা বড় (নিয়ামত) এটা হচ্ছে অতি বড় সফলতা।( সূরা: তাওবা ৭১-৭২ )

এখানে অন্য কোন জাতি বা ধর্মের ব্যপারে আলোচনা করতে চাইনা, তবে নারীদেরকে ইসলামের ব্যাপারে পড়া-শোনার জন্য আহ্বান করছি। এবং ইসলাম যে, মর্যাদা নারীদেরকে দিয়েছে, তা তাদের জানা উচিত।
লেখকঃ আলমগীর রোস্তম আালী

Logo-orginal