, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

মেঘ ছুঁয়ে যাওয়া বর্ষার নীলাচল

প্রকাশ: ২০১৫-০৬-১১ ১১:৫৭:০১ || আপডেট: ২০১৫-০৬-১১ ১১:৫৭:০১

Spread the love

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
Decrease font Enlarge font

বান্দরবান: ভরবর্ষায় পাহাড় সাজে রাজকন্যার মতো। চলে মেঘ পাহাড়ের খেলা। তাদের সঙ্গ দেয় সবুজ বৃক্ষরাজি। বিশুদ্ধ শান্তির পরশ থাকে চারদিকে। প্রকৃতি যেন সবটুকু উজাড় করে দিয়ে পেখম মেলে বসে সৌন্দর্য বিকাশে।

আর বর্ষায় রূপসী বান্দরবানের অন্যতম পর্যটন এলাকা নীলাচলের সৌন্দর্য থাকে ভিন্ন। সাদা মেঘ ছুঁয়ে যায় বর্ষার নীলাচলে। দূর আকাশের মেঘ ভেসে আসে নীলাচলের চূড়ায়। ইচ্ছে হলেই ছুঁয়ে দেখতে পারে পর্যটকরা!

যান্ত্রিক জীবনের নানা কর্মব্যস্ততার ফাঁকে কিছুটা প্রশান্তি পেতে এ বর্ষাতেই ঘুরে আসুন বান্দরবানের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট নীলাচলে। কারণ বর্ষার ছোঁয়ায় পাহাড়গুলো যেন ফিরে পায় নতুন প্রাণ, চারিদিকে ঢাকা পড়ে সবুজের আবরণে।

বর্ষায় নীলাচল ভ্রমণের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এ মৌসুমে পর্যটকদের ভীড় কিছুটা কম থাকে। হানিমুন, আনন্দ ভ্রমণ ও পরিবার নিয়ে ঝামেলাহীন পরিবেশে ঘুরতে যাওয়ার আদর্শ স্থান হতে পারে নীলাচল। তাই সবুজে মোড়ানো প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্য এবং মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে হলে নীলাচল ভ্রমণে এ বর্ষা ঋতুকেই বেছে নিন।

বান্দরবান শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট উ‍ঁচুতে নীলাচলের অবস্থান। দূর থেকে দেখতে মনে হবে আকাশের নীল রংয়ের আচল পাহাড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। এ কারণেই পাহাড়টির নামকরণ করা হয়েছে নীলাচল। পাহাড়টি থেকে এক নজরে চোখে পড়বে বান্দরবান শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সৌন্দর্য।

নীলাচলে সম্প্রতি নতুন আকর্ষণ হিসেবে যোগ হয়েছে ‘ঝুলন্ত নীলা’ ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট নামে বেশ কিছু স্পট। পাহাড়ের ভাজে ভাজে তৈরি করা হয়েছে এ স্পটগুলো। এক একটি স্পট একেবারেই আলাদা আলাদা। একেক জায়গা থেকে পাহাড়ের দৃশ্যও একেক রকম। যেখান থেকে নীলাচলের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

মুহূর্তেই মন প্রাণ ভরে উঠবে মুগ্ধতায়। বিশেষ করে নীলাচলে সূর্যাস্তের দৃশ্য ভ্রমণ পিয়াসুদের মনে আনে স্বর্গীয় অনুভূতি। কথিত আছে, নীলাচলের নির্মল বাতাস রোগ নিরাময়ের টনিক হিসেবে কাজ করে।

চারিদিকের পাহাড়গুলোর ঢালুতে দেখতে পাবেন তঞ্চঙ্গ্য, বম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রাম। পাহাড়ি গ্রামগুলো দেখতে চাইলে পায়ে হেঁটে পাহাড়ের পাদদেশে চলে যেতে পারেন। তবে সাবধান, বর্ষায় পাহাড়ি রাস্তা বেশ বিপদজনক।

এছাড়া পূর্ণিমার রাত যদি নীলাচলে কাটাতে চান তাহলে সেভাবেই দিনক্ষণ ঠিক করে বেরিয়ে পড়–ন। জোৎস্না রাতে নীলাচলের সৌন্দর্য এনে দেবে অন্যরকম রোমাঞ্চকর অনুভূতি।

বান্দরবান শহর থেকে ভাড়ায় চালিত বেবি ট্যাক্সি, চান্দের গাড়ি, জিপ নিয়ে ১৫-২০ মিনিটে নীলাচল যাওয়া যায় খুব সহজেই। ভাড়া গুণতে হবে ৪০০-৮০০ টাকা। নীলাচলে পাহাড়ের ঢালুতে রয়েছে ৩টি নীল রঙের দৃষ্টিনন্দন কটেজ ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি রেস্টহাউজ। কটেজগুলো ভাড়ায় পাওয়া যায়, আর রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করতে হলে আগেই নিয়ে নিতে হবে জেলা প্রশাসনের অনুমতি।

নীলাচলে রয়েছে স্কেপ নামের একটি আকর্ষণীয় রেস্টুরেন্ট। যেখানে সাধারণ পর্যটকদের জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করার অনুমতি রয়েছে। তবে রিসোর্টের অতিথিরা সর্বক্ষণ থাকার সুযোগ পাবেন সেখানে।

স্কেপ রিসোর্টের পরিচালক জাকির হোসেন জানান, নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে অতিথিদের জন্য তিনটি কটেজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটিতে ২টি করে মোট ৬টি কক্ষ রয়েছে। প্রতি কক্ষের ভাড়া ৩ হাজার টাকা। অগ্রিম বুকিং ও সরাসরি যেকোন তথ্য পেতে যোগাযোগ করতে হবে ০১৭৭৭৭৬৫৭৮৯ নম্বরে।

কীভাবে যাবেন
ঢাকার ফকিরাপুল, কমলাপুর ও সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন ও বিআরটিসির এসি ও নন এসি বাস সর্ভিস রয়েছে। ভাড়া ৬শ থেকে ১ হাজার ২শ টাকার মধ্যে।

এছাড়া সড়ক, রেল কিংবা আকাশ পথে চট্টগ্রাম হয়ে সহজেই যাওয়া যায় বান্দরবান। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে পূরবী, পূর্বাণী পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে সকাল ৬ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ভাড়া ১১০-১৩০ টাকার মধ্যে।

প্রয়োজনীয় যেকোন তথ্য জানতে চাইলে নীলাচল পর্যটন স্পটের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (এনডিসি) সঙ্গেও ০৩৬১-৬২৫০৬ ও ০১৭১৪২৩০৩৫৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

Logo-orginal