, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

সূচের ফোঁড়ে কিশোরীর স্বপ্ন

প্রকাশ: ২০১৫-০৬-১৬ ১০:০৮:৫৩ || আপডেট: ২০১৫-০৬-১৬ ১৩:১২:৫০

Spread the love

Mirsarai Photo (2)

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকেঃ ‘খালেদা আক্তার দরিদ্র পরিবারের সন্তান। দারিদ্রতার কারণে বেশি পড়া-লেখাও করা সম্ভব হয়নি। ছিল পরিবারের বোঝা হয়ে। কিন্তু এখন পরিবারের বোঝা নয়;বরং সে পরিবারকে সহযোগীতা করে। একই ধরনের পরিবর্তন শুধু খালেদার নয় আরো অনেক কিশোরীর।’

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গ্রামের অবহেলিত নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বেনারশী পল­ী। উপজেলার মঘাদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুদশর্ন রায় এ বেনারশি পল্লী গড়ে তোলেন। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উক্ত বেনারশি পল­ীতে চাকুরি দেওয়া হয়। নবরূপা বেনারশি পল­ী নামে এর আত্মপ্রকাশ।
খালেদা আক্তার বলেন, ‘আমি এখন বেনারশি পল্লীতে কাজ করে আমার পরিবারকে সহযোগীতা করে আসছি। প্রথমে আমাকে বেনারশি শাড়ি তৈরির কাজ শিখায় পল্লীর কর্ণধার সুদর্শন দাদা (সুদর্শন রায়)। এখন আমি মাসে চার হাজার টাকার বেতন পায়। পরিবার নিয়ে ভালোই আছি।’

এ ব্যাপারে নবরূপা বেনারশি পল্লীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সূদর্শন রায় জানান, ‘গ্রামের অবহেলিত কিশোরীদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এই পল্লীতে চাকুরি দেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রশিক্ষণ চলা কালীন প্রত্যেকে ৫০ টাকা ভাতা প্রদান করা হয়। ২ মাস প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মাসিক ৪হাজার টাকা বেতন অথবা চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই বেনারশি পল্লীতে প্রায় আড়াইশ জন গ্রামীন নারী কাজ করে থাকে।।’

এছাড়া ৩৯টি প্রশিক্ষণ শালায় কয়েকশ নারী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তিনি আরো জানান, পাশ্ববর্তি দেশ ভারত ও নীলফামারি জেলা থেকে মাসিক বেতনের ভিত্তিতে তিনি প্রশিক্ষক নিয়োগ করেছেন। এখানে তৈরি হয় বিয়ের ও সাধারণ শাড়ি। প্রতিটি বিয়ের শাড়ি ৪ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা ও সাধারণ শাড়ি ২ হাজার ৪ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়।

গতকাল নবরূপা বেনারশি পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, খুব মনোযোগ সহকারে বিভিন্ন বয়সের নারীরা কাজ করছে। তবে অধিকাংশই গ্রামের অল্প শিক্ষিত কিশোরী। রাবেয়া, রোজিনা নামের একাধিক কিশোরী বলেন, ‘আগে ঘরে অলস সময় কাটাতাম। গল্পগুজব করতাম। কিন্তু এখন ঘরে বসে টাকা আয় করছি। পরিবারের দারিদ্রতা ঘুচিয়েছি।’

সুূদর্শন রায় আরো বলেন, বিভিন্ন এলসির মাধ্যমে ভারত থেকে শাড়ি তৈরির উপাদানের যোগান দেওয়া হয়। প্রশিক্ষিত নারীরা দেশের বোঝা নয় সম্পদ। তিনি দেশের শিল্পপতিদের এই শিল্প গড়ে তোলার আহবান জানান।

Logo-orginal