, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

অস্ট্রেলিয়াতে কেমন আছেন বাংলাদেশীরা

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-৩০ ১৮:২৪:৩৫ || আপডেট: ২০১৫-০৭-৩০ ১৮:২৪:৩৫

Spread the love

মাঈনুল ইসলাম নাসিম (অস্ট্রেলিয়া) ফাইল ফটো,
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, অস্ট্রেলিয়াঃ বাংলাদেশে থাকাকালীণ হয় কোন ব্যাংকে বা সরকারী-বেসরকারী অফিসে জব করতেন অফিসার হিসেবে কিংবা শিক্ষকতা করতেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে, তাদের অনেকেই সুদূর অস্ট্রেলিয়াতে এসে এখন ট্যাক্সি চালাচ্ছেন বা কোন বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্ক মানুষের সেবাযত্নের কাজ এমনকি হোটেল-রেস্টুরেন্ট কিংবা শপিংমলের সাধারণ ওয়ার্কার হিসেবে ঘোরাচ্ছেন জীবনের চাকা।

আবার অনেকে বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস বা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে এসে তার ধারাবাহিকতা রক্ষা না করেই ঢুকে পড়ছেন উপরোক্ত যে কোন জবে। হাজার হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার আয় ঠিকই করছেন তাঁরা কিন্তু কষ্টার্জিত সব ডিগ্রীকে মাটিচাপা দেবার পরিসংখ্যান দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, স্কিল্ড মাইগ্রেন্টস হিসেবে বিগত বছরগুলোতে যারা বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসেছেন তাদের প্রায় ৯০ ভাগই এসেছেন নন-পারমানেন্ট (রেসিডেন্স) ভিসায় এবং আসার পর তাদের অধিকাংশেরই পাল্টে যায় সব হিসেব-নিকেশ। পড়াশোনা বা ক্যারিয়ারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে জবটি তিনি পাবেন বা করবেন এমন স্বপ্নে বিভোর হয়ে বাংলাদেশকে ‘গুডবাই’ জানিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রাখার পর তার নাগাল পাননি শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ বাংলাদেশী।

হাজার হাজার ডলার বাধ্যতামূলক পেমেন্টের পাশাপাশি নতুন করে পড়াশোনা করা হয়ে উঠেনি বা উঠছে না তাঁদের। পড়াশোনা বা ক্যারিয়ারের সাথে দূরতম সম্পর্ক নেই এমন কর্মজগতেই তাঁরা আজ মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন।

ট্যাক্সিক্যাব-রেস্টুরেন্ট-বৃদ্ধাশ্রম-শপিংমল যে যেখানে কাজ করছেন, মাসান্তে হাজার ডলার হাতে যখন আসছে তখন পেছন ফিরে তাকাবার ফুসরত নেই কারো। পেমেন্ট করে পড়াশোনা আরো করে কাঙ্খিত জবটি পাবার চিন্তা অবশ্য তাঁদের কেউ কেউ করেও থাকেন, কিন্তু অজানা আশংকায় আবার ভীত হন যদি শেষতক জলে যায় কষ্টার্জিত সব অর্থ।

বিগত দিনে বিভিন্ন শহরে অনেকের হয়েছেও তাই। ফলে ‘রিস্ক’ নেয়াকেও বোকামি ভেবেছেন বা ভাবছেন ক্যারিয়ার বিসর্জন দেয়া এই বাংলাদেশীরা। এতো গেলো আজীবনের অর্জিত সব ডিগ্রী মাঠে মারা যাবার কথা। ভোগান্তি এখানেই শেষ নয়। নন-পারমানেন্ট রেসিডেন্ট হিসেবে ন্যূনতম ২ বছর বৈধভাবে বসবাসের পর পারমানেন্ট রেসিডেন্সির জন্য আবেদন করতে গিয়ে জীবনের সবচাইতে বড় ধাক্কাটি খেতে হয় এখানকার বাংলাদেশীদের।

নন-পারমানেন্ট থেকে পারমানেন্ট রেসিডেন্সিতে যেতে অস্ট্রেলিয়ার আইনে ৩ মাস সময়ের কথা বলা হলেও বাংলাদেশীদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩ বছর বা তার চাইতেও বেশি। প্রতীক্ষার ট্র্যাজেডি এখনো চলমান। অত্যন্ত নেক্কারজনক এই ইস্যুতে মূলতঃ বাংলাদেশের নাগরিকরাই এদেশে ভয়াবহ বৈষম্যের শিকার।

অস্ট্রেলিয়াতে আগমনের পর থেকে পারমানেন্ট রেসিডেন্সি পাবার আগ অবধি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবার ক্ষেত্রে এক প্রকার অমানবিক পরিস্থিতিতেই দিনাতিপাত করতে হয় অধিকাংশ বাংলাদেশীদের।

বিশেষ করে হাসপাতাল সহ হেলথ্ সেক্টরের সর্বত্র ক্যাশ এমনকি কিস্তিতে হলেও সবকিছুই পেমেন্ট করতে হয় বৈধ রেসিডেন্সি থাকা সত্বেও। সঙ্গতকারণেই নতুন করে পড়াশোনার পেছনে হাজার হাজার ডলার খরচা করার সময় বা সুযোগ পাননি বা পাচ্ছেন না বাংলাদেশী এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠী।

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এ কে

Logo-orginal