, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

ঈদে ঘুরে আসুন সবুজের বুকে মেঘের রাজত্বে

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-২০ ১০:২৭:২৯ || আপডেট: ২০১৫-০৭-২০ ১০:২৭:২৯

Spread the love

Khagrachhari-sajek-pic-2

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, খাগড়াছড়ি: সাজেকে যেন সবুজের বুকে মেঘের রাজত্ব চলে। কথাটি আশ্চর্যজনক হলেও সত্য। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের উত্তর-পূর্ব কূল ঘেঁষে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালি। পাশেই ভারতের মিজোরাম। বর্ষা মৌসুমে চিরসবুজ সাজেক সাদা মেঘে আচ্ছাদিত থাকে। এক কথায় সাজেককে মেঘের বাড়ি বললেও ভুল হবে না। অনেকে আবার সাজেককে বাংলার দার্জিলিং হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে। সবমিলিয়ে সাজেক এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমির নাম।

 

 

 

সাজেক এক সময়ে ছিল দুর্গম জনপদের নাম। আধুনিক জীবনযাত্রা, রাত্রিযাপন কিংবা দিনেদিনে যাতায়াতের কথা অকল্পনীয় ছিল সাজেক নিয়ে। কিন্তু বর্তমান সরকারের আন্তরিকতা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অক্লান্ত প্রচেষ্ঠার ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্যন্ত স্থান করেছে নিয়েছে বর্তমানের সাজেক।

 

 

সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, আধুনিক পর্যটনের আদলে সাজেককে সৃজন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও সৌর বিদ্যুৎয়েল ব্যবস্থা হয়েছে সাজেকে। এতে করে আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে সেখানকার অদিবাসীদের।

 

 

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেনাপ্রধানসহ একাধিক সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা সাজেক পরিদর্শন করেছেন। সাজেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সাজেককে জনসাধারণের সুবিধার্থে আরও বেশি দৃষ্টিনন্দন করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি উন্নত জীবনযাত্রার সাঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে সেখানে বসবাসরত পাংখোয়া, লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষরা।

 

 

সাজেক ভ্যালি:
সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অন্তর্গত হলেও সড়ক পথে যোগাযোগ করতে হয় খাগড়াছড়ি দিয়ে। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৬৯ কিলোমিটার। আঁকাবাঁকা সর্পিল পাহাড়ি পথ ফেরিয়ে যেতে হয় সাজেকে। পথিমধ্যে চোখ আটকে যাবে পাহাড়ি নদী কাচালং-মাচালং ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার দৃশ্য দেখে। সাজেক ঢুকতেই রুইলুই পাড়া। রুইলুইতে পাংখো ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতি। সড়কগুলোও উন্নত কাঠামোর আদলে গড়া। রুইলুই পাড়ায় সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় পর্যটকদের জন্য বেশকিছু বিনোদনের মাধ্যম রাখা হয়েছে। এরমধ্যে হ্যারিজন গার্ডেন, ছায়াবীথি, রংধনু ব্রিজ, পাথরের বাগান উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য একাধিক বিশ্রামাঘার ও ক্লাবঘরও রয়েছে রুইলুই পাড়ায়। সাজেকের সবশেষ সীমানা কংলাক। কংলাক রুইলুই থেকে আরও দেড়ঘণ্টার পায়ে হাঁটার পথ। কংলাকে পাংখোয়াদের আদি নিবাস। পাংখোয়ারা সবসময় সবার উপরে থাকতে বিশ্বাসী তাই তারা সর্বোচ্চ চূড়ায় বসবাস করে। কংলাকের পরেই ভারতের মিজোরাম।

 

 

কীভাবে যাবেন:
ঢাকার গাবতলী, কলাবাগান, শ্যামলী, কমলাপুর থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দ্যেশে বিভিন্ন কোম্পানির নৈশকোচ ছেড়ে আসে। এসব বাসে করে খাগড়াছড়ি তারপর স্থানীয় চাঁদের গাড়ি (জিপগাড়ী) কিংবা মাইক্রো-কার নিয়ে সাজেক যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের গাড়িভাড়া চাঁদের গাড়ি আসা যাওয়ায় ৪,৫০০-৫,০০০ টাকা এবং মাইক্রো-কারে ৬,০০০-৭,০০০ টাকায়। এছাড়াও যারা মোটরসাইকেলে ভ্রমণ করেন তারা মোটরসাইকেলে করে সাজেকে যেতে পারেন। চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় ও কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকেও খাগড়াছড়ির উদ্দ্যেশে বাস ছেড়ে আসে।

 

 

থাকা ও খাওয়া:
চাইলে এখন সাজেকে রাত্রিযাপন করা অসম্ভব ব্যাপার না। সেনাবাহিনী ও স্থানীয় এনজিও সংস্থার পরিচালিত রিসোর্ট রয়েছে সাজেকে। পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপদে সাজেকে রাত্রিযাপন করা যায় এসব রিসোর্টে। এছাড়াও স্থানীয়দের ঘরবাড়ি ও নিজস্ব থাবু নিয়ে সাজেকে রাত্রিযাপন করা যায়। খাবারের সুব্যবস্থাও রয়েছে রিসোর্টগুলোতে। দেশিয় খাবারের পাশাপাশি পাহাড়ি খাবারের স্বাদও গ্রহণ করতে পারবেন পর্যটকরা। পরিচিতি কিংবা কথায় মিললে হয়ে যেতে পারেন স্থানীয় কোনো পরিবারের পেইং গেস্টও। খাগড়াছড়ি জেলা সদরে সরকারি পর্যটন মোটেল ছাড়াও বেসরকারি মালিকানাধীন উন্নতমানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।

 

 

খাগড়াছড়ির অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো:
খাগড়াছড়ি জেলার অন্যান্য দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো হল আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গপথ, রিসাং ঝর্ণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, আলুটিলা তারেং, পানছড়ির অরণ্য কুটির বৌদ্ধ বিহার, মানিকছড়ির রাজবাড়ি, রামগড়ের সীমান্তবর্তী চাবাগান, মাইসছড়ির দেবতাপুকুর, মহালছড়ির এপিবিএন লেক, জেলা সদরের পানখাইয়াপাড়ার নিউজিল্যান্ড পার্ক ও জেলা পরিষদের হর্টিকালচার পার্ক উল্লেখযোগ্য।

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

Logo-orginal