, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

একাদশে ভর্তি নিয়ে ভোগান্তি

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-০২ ১৫:২২:৩২ || আপডেট: ২০১৫-০৭-০২ ১৫:২২:৩২

Spread the love

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকা: আবেদন না করেও অখ্যাত বা দূরদূরান্তের কলেজে মনোনীত হয়েছে কেউ। কেউ কেউ আবেদন করেছে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার জন্য, কিন্তু মনোনীত হয়েছে বিজ্ঞানে। কেউ মুক্তিযোদ্ধার কোটায় আবেদনই করেনি, অথচ তাকে মনোনীত করা হয়েছে সেই কোটায়। এ জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তি করছে না সেই শিক্ষার্থীকে। কেউ ভালো ফল করেও ভালো কলেজে মনোনীত হয়নি, কিন্তু তুলনামূলকভাবে খারাপ ফল করেও ভালো কলেজে ভর্তি হয়েছে। কেউ কেউ এমন সব কলেজে মনোনীত হয়েছে, যার অস্তিত্ব শুধু কাগজেই আছে।

 

 

একাদশ শ্রেণির ভর্তি বিষয়ে এ ধরনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অসংখ্য ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী এখন প্রতিদিন ভিড় করছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে।

 

 

বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট মঞ্জুরুল কবীর  বলেন, এই কয়েক দিনে সমাধানের জন্য প্রায় ১০০ আবেদন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পাঠানো হয়েছে। বুয়েট এই ভর্তির তালিকা তৈরিতে কারিগরি সহায়তা করেছে।

 

 

গতকাল বুধবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপকলেজ পরিদর্শকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে লিখিতভাবে আবেদন করছেন, অনেকে মৌখিকভাবে সমস্যার সমাধান চেয়েছেন।

 

 

উপকলেজ পরিদর্শক অদ্বৈত কুমার রায় জানান, তাঁর কাছে প্রায় ১০০টির মতো আবেদন জমা পড়েছে। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বোর্ডেও একই ধরনের সমস্যা নিয়ে আসছে অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক।

 

 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ নিয়ে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অন্তত ২০ জনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। সবাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের দুষছেন। তাঁদের বক্তব্য হলো, মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের সৃষ্ট সমস্যার কারণেই তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এঁদের কয়েকজনের অভিযোগ হলো, সমস্যা সমাধান করতে এসে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে দুর্ব্যবহার পেতে হচ্ছে।

 

এমন পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে প্রথম দফায় ভর্তির কাজ। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুশ্চিন্তাটা আরও বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ভর্তি শেষ হওয়ার আগেই গতকাল ক্লাস শুরুর তারিখ দিলেও বাস্তবে ক্লাস শুরু হয়নি।

 

এ ব্যাপারে শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান  বলেন, যেসব সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো সমাধান করে দেওয়া হবে। নতুন পদ্ধতি হওয়ার কারণে এবার কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে সব শিক্ষার্থীই ভর্তি হতে পারবে। তিনি বলেন, সমাধান জানাতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষাবোর্ডের কোনো কোনো কর্মকর্তা দুর্ব্যবহার করছেন বলে তিনিও শুনেছেন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

চার দফায় পিছিয়ে গত রোববার রাতে একাদশ শ্রেণির ভর্তির জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি ধরা পড়ে। গতকাল দুপুরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপকলেজ পরিদর্শকের কার্যালয়ে ঘণ্টা খানেক দাঁড়িয়ে অন্তত ৫০-৬০ জনকে অভিযোগ নিয়ে আসতে দেখা যায়। এদের কেউ লিখিত আবেদন করেছে, কেউ বা মৌখিকভাবে সমস্যা জানিয়ে সমাধান জানতে চাইছে।

 

 

মা ও এক শিক্ষককে নিয়ে ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে আসা আঁখি আক্তার জানায়, কে বা কারা তার পক্ষে আবেদন করায় ময়মনসিংহের মোক্ষপুর কলেজে তাকে মনোনীত করা হয়েছে। অথচ সে স্থানীয় ইছাপুর কলেজে ভর্তি হতে চায়।

 

 

মাদারীপুরের তুহিন মাতব্বরের সমস্যা হলো, সে অনলাইনে অপশন দেখে ঢাকার সরকারি বিজ্ঞান কলেজে বাণিজ্য শাখার জন্য আবেদন করেছে, কিন্তু তাকে মনোনীত করা হয়েছে বিজ্ঞান শাখায়। পরে জানা গেল, বিজ্ঞান কলেজে বাণিজ্য শাখাই নেই।

 

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সূত্রমতে, এবার পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই একসঙ্গে সব কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কাজ অনলাইনে করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে শিক্ষা বোর্ড। ১১ লাখ ৫৬ হাজার ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী কে কোন কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে, সেই তালিকা করতে গিয়ে বোর্ডকে কারিগরি সহায়তা দেওয়া বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজিও (আইআইসিটি) কারিগরি সমস্যায় পড়ে। এ কারণে তালিকা প্রকাশের সময় চার দফায় পেছাতে হয়েছে।

 

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা এবং একাধিক নামকরা কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, পদ্ধতি হিসেবে এটি খুব ভালো। এটি ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। কিন্তু পূর্বপ্রস্তুতি না নিয়ে এটি করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে।

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে/সূত্র: প্রথম আলো

Logo-orginal