, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

জোড়া খুন: সাংসদপুত্র রনির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-২১ ১৪:৪৭:২৩ || আপডেট: ২০১৫-০৭-২১ ১৪:৪৭:২৩

Spread the love

rony-ed1

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকা: এলোপাতাড়ি গুলি করে দুই চালক হত্যা মামলায় বখতিয়ার আলম রনির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রনি মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি পিনু খানের ছেলে।

 

 

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক দীপক কুমার দাশ।

 

 
চার্জশিটে রনিকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত তার গাড়িচালক ইমরান ফকিরের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে চার্জশিটে অব্যহতির সুপারিশ করা হয়েছে।

 

 

 

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল হকের আদালতে মঙ্গলবারই চার্জশিটটি উত্থাপন করা হবে। আগামী ১৩ আগস্ট এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

 

 
চার্জশিটের ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জোড়া খুনের ঘটনায় রনিকে একমাত্র আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ‘গুলি করার সময় রনি নেশাগ্রস্থ ছিলেন’- এমন কোনো কিছু চার্জশিটে উল্লেখ নেই। কারণ নেশাগ্রস্থ থাকার বিষয়টি ফাইন্ড আউট করার মতো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।

 

 

তিনি আরও বলেন, ‘হত্যার উদ্দেশ্যেই সংসদ সদস্যের গাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছে’- তারও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারটিও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়নি। গাড়িটি আটক করা হবে কি-না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত।

 

 

তিনি আরও বলেন, গাড়ির চালক ইমরানকে প্রাথমিকভাবে আসামি করা হলেও তদন্ত সাপেক্ষে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সময় রনির সঙ্গে থাকা তার তিন বন্ধু টাইগার কামাল, জাহাঙ্গীর ও কামাল মাহমুদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হলেও তাদের আসামি করা হয়নি।

 

 

গত ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে রনি তার মা সংসদ সদস্য পিনু খানের জিপ গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়লে দৈনিক জনকণ্ঠের অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম নিহত হন। নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৫ এপ্রিল রাতে অজ্ঞাত আসামিদের নামে রমনা থানায় একটি মামলা করেন।

 

 

গত ২৪ মে মামলাটির তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তা ও অন্যান্য সোর্সের মাধ্যমে রনির ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করা হয়। গত ৩১ মে জিপ গাড়িটির চালক ইমরান ফকিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান ফকির পুরো ঘটনার বর্ণনা দিলে রনিকে একই দিন ধানমণ্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

 

 

পরে সংসদ সদস্য পিনু খানের বিলাসবহুল প্রাডো জিপ গাড়িটিও (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩-৬২৩৯) জব্দ করেন গোয়েন্দারা।

 

 

গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশে তিন দফায় মোট দশদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তবে রনি তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে গুলির কথা স্বীকার করলেও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।

 

 

গত ৩০ জুন থেকে ১ জুলাই দু’দিন এবং ২৪ থেকে ২৭ জুন ও ৯ থেকে ১২ জুন দু’দফায় আরও চারদিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এমপিপুত্র রনিকে।

 

 
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ ও তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি’র উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস জানান, প্রথম দফার রিমান্ডে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে তার লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে গুলির কথা স্বীকার করেছেন এমপিপুত্র রনি। তিনি বলেছেন, গত ১৩ এপ্রিল মধ্যরাতে রাস্তায় যানজট থাকায় বিরক্ত হয়ে কোমর থেকে পিস্তল বের করেন তিনি। মদ্যপ থাকায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। রাস্তায় এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়েন। মুহূর্তেই রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। গাড়ি নিয়ে চলে যান তিনি। নিজে জানতেনও না, তার ছোঁড়া গুলিতেই দু’জন মারা গেছেন।

 

 
রনির গাড়ির চালক ইমরান ফকির দু’জনকে হত্যার জন্য রনিকেই দায়ী করে গত ১ জুন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অন্যদিকে ঘটনার দিন রনির সঙ্গে গাড়িতে থাকা তার বন্ধু টাইগার কামাল ও জাহাঙ্গীর গত ১৮ জুন এবং কামাল মাহমুদ ১৯ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করে সাক্ষ্য দেন। তারা তিনজনও সাক্ষ্যে বলেন, রনি তার লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ওই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটান।

 

 

 

জিপ গাড়িটির চালক ইমরান ফকির ও রনির তিন বন্ধুকে চার্জশিটে মামলার রাজসাক্ষী করা হয়েছে।

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

Logo-orginal