, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বিএনপির ময়নাতদন্ত

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-০৫ ১৮:০৬:৩৩ || আপডেট: ২০১৫-০৭-০৫ ১৮:০৬:৩৩

Spread the love

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম ডেস্কঃ এমনই শিরোনাম দিয়ে লিড নিউজ করেছে আজকের মানব্জমিন,
আরটিএম দর্শকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হল ।

ইতিহাসের এক বিশেষ সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব। মুক্তিযোদ্ধা জিয়ার স্বীকৃতি মিলেছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই। তবে তার ক্ষমতা আরোহণ বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না।

যদিও ব্যক্তিগত সততার জন্য তিনি ছিলেন প্রশংসিত। ১লা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮। আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির। জিয়াউর রহমানের মর্মান্তিক মৃত্যু এ দলের অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে পড়লেও খালেদা জিয়ার হাত ধরে এগিয়ে যায় বিএনপি। একটি পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তারেক রহমানও। চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়া দল বিএনপি এখন এক অনিবার্য ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন বিপর্যয় দলটি অতীতে কখনোই মোকাবিলা করেনি। সামনে কী আছে তা জানেন না বিএনপির কেউই। এমনকি রাজনৈতিক পণ্ডিতরাও। দলটির জন্য এ এক অনিশ্চিত ঘোর অমানিশার সময়। কেন এ বিপর্যয়? বিএনপির শেষ গন্তব্যই বা কোথায়। এমন সব প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করেছেন আমাদের রাজনৈতিক সংবাদদাতা
কাফি কামাল। তার লেখা ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ ছাপা হলো প্রথম পর্ব-

স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম পাঁচ বছর বাংলাদেশের জাতীয় জীবন ছিল চাওয়া-পাওয়ার এক জটিল হিসাব-নিকাশের পর্ব। আওয়ামী লীগ তার হিরন্ময় ঐতিহ্য বাঁচাতে চায়নি, ঘাতকের হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সপরিবারে খুন হলেন, আওয়ামী লীগ হঠাৎ ছিটকে পড়লো। উত্তরণ ঘটলো নতুন এক রাজনৈতিক শক্তি বিএনপির। এই দুই অবস্থার অন্তর্বর্তীকালে স্বাভাবিক গণতন্ত্র নিভে গিয়েছিল, এসেছিল তাঞ্জানিয়ার জুলিয়াস নায়ারের কর্তৃত্বপরায়ণ মডেলের সরকার ব্যবস্থা -বাকশাল।

তাজউদ্দীন আহমেদ ও ড. কামাল হোসেনের মতো বঙ্গবন্ধুর অনেক ঘনিষ্ঠজন হতবিহ্বল আর বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদের ভাষায়, স্বাধীনতার শত্রুরা হয়েছিল উল্লসিত। একজন ত্রস্ত বিচলিত কামাল হোসেন লন্ডনে দেশান্তরী হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধুর সামনে গিয়ে সাহস করে বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমি আপনার মৃত্যুসনদে (বাকশালে সমর্থন) সই দিতে পারি না।’ ’৭৫-এর বিয়োগান্তক পটপরিবর্তন পরবর্তী তিন মাস ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে অস্থির-অনিশ্চয়তাময় এক ঘোর অমানিশা। নির্মোহ জীবনদৃষ্টির অধিকারী জিয়াউর রহমান অন্য অনেকের মতোই যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে চলে যান অনেকটাই পেছনের কাতারে। কিন্তু তাঁর অবদান ও যোগ্যতার স্বীকৃতি তিনি বঙ্গবন্ধুর হাতেই পেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু জিয়াকে বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত করেন। জিয়াকে সেনাবাহিনী প্রধান করতে না পারার ক্ষতিও মুজিব পুষিয়ে দিতে বিশেষভাবে উদ্যোগী হন। তার প্রমাণ হলো যা উপমহাদেশে কখনও ছিল না, জিয়াকে সম্মানিত করতেই মুজিব সৃষ্টি করেছিলেন সেনা উপপ্রধানের পদ। সুতরাং মুজিব পরবর্তী বাংলাদেশেই কেবল জিয়া পাদপ্রদীপে এসেছিলেন তা ঠিক নয়। তিনি তাঁর বিশেষত্বের স্বীকৃতি বঙ্গবন্ধুর হাতেই পেয়েছিলেন।

জিয়াকে জার্মানিতে রাষ্ট্রদূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েও শেখ মুজিব তা জিয়ার অনুরোধেই বাতিল করেছিলেন। সুতরাং মুজিব-জিয়া সম্পর্কে কোন চিড় নেই। সম্প্রতি জিয়ার জন্মদিনের আলোচনায় অধ্যাপক বি. চৌধুরী বেগম খালেদা জিয়ার সামনেই বলেন, শহীদ জিয়া কখনও মুজিবের সমালোচনা করেননি। আর আজ বিএনপি নেতারা কি করেন।

আজ যারা মুক্তিযোদ্ধা জিয়াকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তারা আসলে প্রকারান্তরে শেখ মুজিবের প্রজ্ঞাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেন। জিয়া মুক্তিযুদ্ধে কি করেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে কি করেছেন, তার সবটাই ঘটেছে ১৯৭২ সালে মুজিবের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আগে।

সুতরাং মুজিবের জিয়া মূল্যায়নের তারিখ ও ঘটনাবলী বিবেচনায় নিলে জাতীয় রাজনীতিতে তিক্ততা কিছুটা হলেও দূর হতে পারে। অবশ্য জিয়া কি প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র ক্ষমতার শীর্ষে এলেন, সেটা বিচার্য।

অনেকের মতে জিয়া যদি কোন কারণে ক্ষমতায় না গিয়ে আওয়ামী লীগকে দ্রুত ক্ষমতায় বসাতে সক্ষম হতেন, বিএনপি গঠন না করতেন, তাহলে জিয়া আওয়ামী লীগের অনেক বেশি প্রিয়ভাজন হতেন। কিন্তু কোটি টাকা দামের প্রশ্ন হলো, জিয়ার হাতে যখন ক্ষমতা এসেছিল তখন আওয়ামী লীগ সরকারিভাবে লুপ্ত ছিল। আর বাকশাল পুনরুজ্জীবন যে সম্ভব ছিল না, তার প্রমাণ হলো আওয়ামী লীগ নিজেই কখনও আর বাকশাল হতে চায়নি।সুত্রঃ মানব্জমিন,
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এ কে

Logo-orginal