, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

Avatar Arfat

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-২৯ ০৯:৫৬:১০ || আপডেট: ২০১৫-০৭-২৯ ০৯:৫৬:১০

Spread the love

140806112551_bangla_breaking_640x360_bbc_nocredit

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকা:   একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ট্রাইব্রুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।

বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই রায় দেয়। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

রায় ঘিরে সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতে আগতদের তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। এছাড়া সারাদেশে ৭৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

সকাল নয়টার দিকে বিচারপতিরা এজলাসে বসেন। মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে রায় ঘোষণা শেষ হয়। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।

চট্টগ্রামের রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা, সুলতানপুর ঊনসত্তরপাড়ায় হিন্দু বসতিতে গণহত্যা এবং হাটহাজারীর এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছেলেকে অপহরণ করে খুনের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

রায়ে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে আনীত ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ৯টি সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন। এর মধ্যে ৩, ৫, ৬ ও ৮ নং অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড, ২, ৪ ও ৭ নং অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে ২০ বছর করে জেল এবং ১৭ ও ১৮ নং অভিযোগে তাকে ৫ বছর করে জেল দেয়া হয়।

এক বছর নয় মাস পর আপিলের রায়ে সেই সাজাই চূড়ান্ত সাব্যস্ত হল। ২০১০ সালে বিচার শুরুর পর ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের মধ্যে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী হলেন পঞ্চম ব্যক্তি, আপিল বিভাগে যার মামলার নিষ্পত্তি হল।

২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের ভোরে তখনকার সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে হরতালে গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের এক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তর দেখানো হয়। তখন থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। সেটি হাতে পেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা ফাঁসির আসামিকে পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ।

পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবে আসামিপক্ষ। আদালত তা পুনর্বিবেচনার জন্য গ্রহণ করলে শুনানি করে নিষ্পত্তি হবে, আর রিভিউ খারিজ করলে সেদিনই নিষ্পত্তি হবে যাবে।

রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়ে গেলে এবং তাতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে আসামিকে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। তিনি স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি ফয়সালা হয়ে গেলে সরকার কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।

দুই জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায় বাস্তবায়নের আগে পালিত প্রক্রিয়াগুলো এক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকছে।

এর আগে আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ৭ জুলাই রায় ঘোষণার জন্য ২৯ জুলাই ধার্য করে আদেশ দেয় আদালত।

আদালতে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট এএসএম শাহজাহান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড রায়ের বিরুদ্ধে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিল আবেদনটি আপিল বিভাগে পঞ্চম আপিল মামলা। ২০১৩ সালের ২৯ অক্টোবর এ আপিল দায়ের করা হয়।

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এ এইচ বি

Logo-orginal