, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

দেশে বাঘের মতো আমরাও নিরাপদ নই : হান্নান শাহ

প্রকাশ: ২০১৫-০৮-০১ ২৩:৪৩:৫৪ || আপডেট: ২০১৫-০৮-০১ ২৩:৪৩:৫৪

Spread the love

a s mআরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকা: সুন্দরবনের বাঘ যেমন নিরাপদ নয়, তেমনি বাংলাদেশে আমরা নিরাপদ নই বলে মন্তব্য করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ। তার জবাবে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, সব কিছুতে রাজনীতি করার কী আছে? সরকারের বাইরেও সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ একটি প্রয়াস নিতে হবে বাঘ রক্ষায়।

 

 

 

শনিবার ঢাকার টিসিবি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের ১২৩তম পর্বে আলোচক হিসেবে তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এমপি, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টস-এর এক অংশের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

 

 

 

অনুষ্ঠানের প্রথম প্রশ্ন ছিল- বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের প্রক্রিয়ায় দেখা যাচ্ছে যে, খুব বেশি সংখ্যক মানুষ দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যেতে আগ্রহী নয়, যেমনটা হয়েছিল ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়। এর কারণ কী বলে আপনারা মনে করেন?

 

 

 

এই প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক অবস্থা সব কিছু বিবেচনা করেই অনেকে বাংলাদেশে এসেছেন এবং যাননি। যারা এসেছেন তারা মুক্তির আনন্দ শিগগিরই পাবেন। সরকার খুব দ্রুত সে ব্যবস্থা নেবে।

 

 

অপর দিকে আ স ম হান্নান শাহ বলেন, বাংলাদেশ এখন অনেক নিরাপদ স্থান। তাই ছিটমহলবাসীরা এই দেশে আসেত চান। অনেকদিন পরে ছিটমহল চুক্তি কার্যকর হয়েছে তাই সরকারকে ধন্যবাদ। যারা বাংলাদেশে এসেছেন পূর্ণ স্বাধীনতার স্বাদ তারা পাবেন।

 

 

সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী বলেন, ভৌগলিক স্বাধীনতা কোথায় বেশি ভোগ করা যাবে তা বিবেচনা করেই তারা বাংলাদেশে এবং ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ড. সাদেকা হালিম বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে মিশে গেছেন অনেকে। অর্থনীতি এবং সামাজিক দুটো বিষয়ই একসঙ্গে কাজ করেছেন। যারা ভারতে চলে গেছেন বেশির ভাগই নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ভূমি হারিয়েছেন।

 

 

 

দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল- নাম যাই হোক না কেন, একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের জন্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নতুন করে দাবি করেছেন। নির্বাচন নিয়ে জটিলতা দূর করতে এ নিয়ে কী আলোচনা হতে পারে?

 

 

 

জবাবে কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি একটি সুস্থ রাজনীতির চর্চায় ফিরে এসেছেন। এতদিনে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। সংবিধান সম্মতভাবে নির্বাচন হবে। দেশে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে হবে।

 

 

বিএনপি নতুন কোনো প্রস্তাব (ফর্মুলা) দেয়ার পর সরকার বিবেচনা করবে আলোচনায় বসা যায় কি-না। তবে  বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য কোনো সহিংস পরিস্থিতি বিরাজ করছে না। মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য আলোচনার কোনো সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন খাদ্যমন্ত্রী।

 

 

সরকারের সঙ্গে সংলাপ করার বিষয়ে আ স ম হান্নান শাহ আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, সরকার চাইলে আমরা অবশ্যই ফর্মুলা দেবো। আমরা আলোচনায় যেতে চাই। কামরুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে হান্নান শাহ বলেন, সংলাপে বসার জন্য কি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দরকার। রুহুল আমিন গাজী বলেন, একটি সরকার চালাতে গেলে স্থিতিশীলতার প্রয়োজন আছে। আমাদের সকল নাগরিকেরই চাওয়া একটি নির্বাচন, যা নিয়ে কারো মনে কোনো প্রশ্ন থাকবে না।

 

 

 

ড. সাদেকা হালিম বলেন, আলোচনার দরজা তো সব সময়ই খোলা থাকা প্রয়োজন। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য যে নির্বাচন হয়েছিল তারা সে নির্বাচনে আসেননি। আগামী নির্বাচনে বিএনপির অবশ্যই আসা উচিত।

 

 

 

তৃতীয় প্রশ্ন ছিল- বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন যখন বেড়েই চলেছে, তখন এসব অপরাধ কঠোর হস্তে দমন করার লক্ষ্যে যথেষ্ট পদক্ষেপ কি দেখা যাচ্ছে? তার জবাবে কামরুল ইসলাম বলেন, সরকার সবগুলো অপরাধেরই বিচার করবে। তবে, সামাজিক সচেতনতা ছাড়া এর নির্মূল সম্ভব নয়।

 

 

নারী ও শিশু নির্যাতনের সমস্যাগুলো সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সমাধান করতে হবে বলে দাবি করেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। সাদেকা হালিম বলেন, নারীরা যেভাবে কাজ করছে সে অনুযায়ী আমাদের রাষ্ট্র, পরিবার, সমাজ কেউই নিরাপত্তা দিতে পারছে না। আ স ম হান্নান শাহ বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা প্রশ্রয় পাচ্ছে তাই ঘটনাগুলো বারবার ঘটছে। সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিলে এমন ঘটনা আবার ঘটতো না।

 

 
কামরুল ইসলাম বলেন, সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে, এসব ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য পুরো সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। মন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে রুহুল আমিন গাজী বলেন, আন্তরিকভাবে সরকারকে এ ব্যাপারগুলো দেখতে হবে।

 

 

 

সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কি যথেষ্ট চেষ্টা করছে? আ স ম হান্নান শাহ বলেন, সুন্দরবনের বাঘের সুরক্ষা আগের মতো আর নেই। সুন্দরবনের বাঘ যেমন নিরাপদ নয়। তেমনি বাংলাদেশে আমরা নিরাপদ নই। তার জবাবে খাদ্যমন্ত্রী  কামরুল ইসলাম বলেন, সব কিছুতে রাজনীতি করার কী আছে? সরকারের বাইরেও সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ একটি  প্রয়াস নিতে হবে বাঘ রক্ষায়।

 

 

সাদেকা হালিম বলেন, বাঘের বসবাসযোগ্য পরিবেশ রক্ষা করতে হবে, অবৈধ পাচার বন্ধ করতে হবে। বাঘের চামড়া যাচ্ছে ইন্ডিয়াতে আর হাড্ডি যাচ্ছে চীনে। তা দিয়ে তারা প্রসাধনী তৈনি করছে।

 

 

অনুষ্ঠানটির প্রযোজনা করেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং উপস্থাপনা করেন আকবর হোসেন। বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন এবং বিবিসি বাংলার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত বিষয়ে দর্শকরা সরাসরি প্যানেল সদস্যেদর কাছে প্রশ্ন বা মতামত প্রকাশ করতে পারেন।

 

 

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এন এ কে

Logo-orginal