, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

মধ্যপ্রাচ্যে পেশীশক্তি দেখাচ্ছে সৌদি আরব

প্রকাশ: ২০১৫-০৮-০৮ ১৬:৫৭:৫৯ || আপডেট: ২০১৫-০৮-০৮ ১৬:৫৭:৫৯

Spread the love

mmlo

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হঠাৎ করেই সৌদি আরবে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহাসিক রক্ষণশীলতা, (পাগলা) নৌকা নাড়াইস না, বড়র ক্ষেত্রে ধীরগতিতে চলাল দৃষ্টিভংগী কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত ইস্যু-সবকিছুই যেন অতীত।

 

 

 

এর পরিবর্তে এখন জায়গা দখল করেছে নতুন আর সিদ্ধান্তমূলক মনোভাব। এর আগে তেলসমৃদ্ধ এই রাজতান্ত্রিক দেশটি এভাবে কখনো সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়নি।

 

 

 

ইয়েমেন গত চার মাসের বেশি সময় ধরে হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে সৌদি আরব।

 

 

 

সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধী ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের প্রতি নাটকীয় সমর্থন দিচ্ছে সৌদি আরব।

ইরানের সাথে চুক্তি সত্ত্বেও ওয়াকিবহল মহাল জানাচ্ছে যে ভবিষ্যতে ইরান যদি পরমাণু অস্ত্রের মালিক হতে চায় তবে সৌদি আরবও একই পথ ধরবে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্রের প্রতিযোগিতা আরো বাড়বে।

 

 

 

 

এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে?

 

২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে লোহিত সাগরের তীরের একটি সুরক্ষিত প্রাসাদে এই প্রতিবেদকের (বিবিসির প্রতিবেদক ফ্রাঙ্ক গার্ডনার) সামনে ছিলেন শুধু দুজন। তৎকালীন ক্রাউন প্রিন্স এবং বর্তমান বাদশা সালমান বি আবদুলআজিজ এবং তার প্রিয়পুত্র প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।

 

 

 

 

তার ১৬ মাস পরই বাদশা আবদুল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হন সালমান।

 

 

 

এখানে আয়োজিত এক বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা প্রিন্স সালমান মরক্কো থেকে তড়িঘড়ি করে ছুটে এসেছিলেন এই কারণে যে যুক্তরাষ্ট্র আসাদ সরকারের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করতে চায়।

 

 

 

আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে নার্ভ গ্যাস ব্যবহার করে শত শত লোককে হত্যার জবাব দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘোষণা দেয়।

 

 

 

তবে রাশিয়ার মধ্যস্ততায় আসাদ তার রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ হস্তান্তর করার ঘোষণা দিলে শেষ মুহূর্তে সেই হামলার পরিকল্পনা বাতিল হয়।

 

 

তরুণ কিন্তু উচ্চাভিলাসী

 

কিন্তু এ ঘটনা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্কে মোড় পরিবর্তনকারী।

 

 

 

সৌদি আরব চরমভাবে বুঝতে পারে যে তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র তাদের পরিত্যাগ করেছে। সৌদি আরব আশা করেছিল যে আন্তর্জাতিক সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইরান সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আসাদের পতন ঘটবে এবং সেখানে সৌদি আরব সমর্থিত সুন্নী সরকার গঠিত হবে।

 

 

 

এটা যখন ঘটল না তখন সৌদি প্রিন্সরা এবং নীতি নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নিলেন যে এখন থেকে তারাই বিষয়গুলোর দেখভাল করবেন।

 

 

এগিয়ে এলেন তরুণ, সামরিক বিষয়ে অনভিজ্ঞ কিন্তু খুবই উচ্চাভিলাসী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।

 

 

মাত্র ৩০ বছর বয়সে সম্ভবত তিনিই বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

 

ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানের দৃশ্যমান মুখ তিনিই।

 

 

 

সৌদি আরবের খবরে প্রায়ই এই শ্মশ্মুমণ্ডিত প্রিন্সকে সামরিক অভিযান নিয়ে জেনারেলদের সাথে বৈঠকে করতে দেখা যায়।

 

 

 

অনেককে অবাক করে দিয়ে তিনি তার জুয়াখেলায় জয়ী বলে মনে হচ্ছে। তবে এতে সাধারণ ইয়েমেনীদের চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।

 

 

চার মাসের অব্যাহত হামলার পর হুথিরা এখন ব্যাকফুটে।

 

 

তবে হামলার ফলে ইয়েমেনে প্রায় ৩০০০ লোক নিহত এবং ৮০% মানুষই এখন ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সৌদি নেতৃত্ব এর শেষ দেখতে চাচ্ছেন।

 

সৌদি আরবের কাছে এটা শুধু তার দক্ষিণ সীমান্ত রক্ষার ইস্যু নয়। সৌদিরা মনে করছেন যে তারা ক্রমাগত ইরানের মিত্রদের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে পড়ছেন এবং তারা এই ধারা ঘুরিয়ে দিতে চাচ্ছেন।

 

 

 

ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর গঠিত শিয়া নিয়ন্ত্রিত সরকার ইরানের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। তিকরিত থেকে ইসলামিক স্টেটকে হটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে শিয়া সমর্থিত মিলিশিয়ারা।

 

 

সিরিয়ায় ইরানের প্রক্সি হেজবুল্লাহ সৌদি সমর্থিত সুন্নী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়ছে।

 

 

 

ইরানের কুদস বাহিনী সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ এবং বাহরাইনে শিয়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে অসন্তোষ উসকে দিচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই সন্দেহ রিয়াদের।

 

 

অনেকে মনে করেন সিরিয়ায় যেভাবে সুন্নী জিহাদিদের সৌদি আরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তাতে এই জিহাদিরা এক সময় সৌদি আরবের রাজপথে এবং অন্যত্র সহিংসতা ঘটাবে।

 

 

তবে কিছু কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, আরব বসন্তের ফলে আরবজাহানে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে তাতে নিজের স্বার্থ রক্ষা ছাড়া সৌদি আরবের আর কোনো পথ খোলা নেই।

 

 

সৌদি আরব তাই নতুন জোট গড়ছে, নিজের জন্য তৈরি করছে নতুন পথ। ওয়াশিংটন কী ভাবল তা নিয়ে মাথা ঘামালে তার চলছে না।

সূত্র: বিবিসি

 

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এন এ কে

Logo-orginal