, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

মামলায় নেই, অথচ তারেক চার্জশিটে: বিএনপি

প্রকাশ: ২০১৫-০৮-২৭ ১৮:০৩:২০ || আপডেট: ২০১৫-০৮-২৭ ১৮:০৩:২০

Spread the love

bnp

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকা: গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে নাশকতার পরিকল্পনার ঘটনায় দায়ের মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগপত্রকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটি এই দাবি করে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গাজীপুরের ওই ঘটনায় দায়ের মিথ্যা মামলায় তারেক রহমানের নামই ছিল না। অথচ অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর অপচেষ্টার অংশ হিসেবেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে যখন লাখো বন্যার্ত মানুষ সরকারি ত্রাণ ও সহায়তার অভাবে দারুণভাবে বিপন্ন, পেঁয়াজ-মরিচসহ নিত্যপণ্যের মূল্য নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় জনগণ ভীষণ ক্ষুব্ধ, ক্ষমতাসীন দলের ও জোটের অভ্যন্তরীণ বিবাদে সরকার বিব্রত, খুন-খারাবি যখন চরম পর্যায়ে, গুম-খুন-শিশু হত্যা-নারী নির্যাতন-চাঁদাবাজি এমনকি হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পদ দখলের ঘটনা যখন সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করে জনগণকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে, ঠিক সেই সময় জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর অপচেষ্টার অংশ হিসেবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জনগণ সরকারের এসব ষড়যন্ত্র বুঝতে পারে এবং আরো বেশি করে সরকারের প্রতি বীতিশ্রদ্ধ হয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের ক্রসফায়রকে জনগণ যেমন ভাদ্র মাসের আষাড়ে গল্প হিসেবে বিশ্বাস করে না, তেমনি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের মিথ্যা মামলার অভিযোগপত্র বিশ্বাস করে না। সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা হিসেবে জিয়া পরিবারের প্রতি প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে এটি করেছে।

তিনি দাবি করেন, অভিযোগপত্রে ১৯ নং আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জয়দেবপুর থানার ১৮ কিলোমিটার দূরে মনিপুর খাসপাড়া এলাকায় তারেক জিয়া মোড়ে বাস পোড়ানোর ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

নজরুল ইসলাম বলেন, গত ২১ জানুয়ারি সংঘটিত এই ঘটনার উপস্থিত সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী ১৮ জনকে আসামি করে পুলিশ এফআইআর দাখিল করেছিল। সেখানে তারেক রহমানের নাম নেই। অন্যান্য অজ্ঞাত ৪০/৪৫ জনের মধ্যে তার নাম আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, মহান স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে কি করে অজ্ঞাত আসামিদের একজন হতে পারেন? চার্জশিটে বলা হয়েছে, তিনি লন্ডনের এক বাসায় বসে তার এক ব্যক্তিগত সহকারী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়রের ছেলেকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী বলে যার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী। তিনি কখনো তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন না, এখনো নেই। তিনি কিংবা মেয়রের ছেলে মঞ্জুরুল আহসান রনি- কেউই বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতা নন। কথিত আসামিরাও বিএনপি কিংবা কোনো অঙ্গ দলের পরিচিত নেতাকর্মী নন। এই মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, আমরা জানতে পেরেছি তারা সবাই এখন জামিনে মুক্ত।’

এছাড়া, যে স্থানে বাস পোড়ানার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তা ঢাকা-ময়মনসিংহ রোড থেকে প্রায় ৩ মাইল দূরে গ্রামঞ্চলে। ওটা এমন কোনো শিল্পাঞ্চল নয় যে, সেখানে বাস পুড়িয়ে দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যায়। কাজেই এ ব্যাপারে যে অভিযোগ চার্জশিটে আনা হয়েছে, তা শুধু অযৌক্তিক নয় হাস্যকরও বটে, যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, জনগণের ভোট ছাড়াই এক নির্বাচনী প্রহসন করে এই সরকার ক্ষমতার মসনদে বসে আছে। তাদের ক্ষমতার নৈতিক ভিত্তি নেই এবং এই ক্ষমতা দখলের রাজনীতির প্রতি জনগণের সমর্থনও নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনও কখনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

নজরুল ইসলাম বলেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয় বলেই বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। এজন জনগণের নির্বাচিত এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। সেজন্য আমরা চাই- অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিযোগীতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হোক।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অতীতেও কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, এই সরকারও পারবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও প্রতিহিংসামূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার লক্ষে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করা থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ প্রমুখ।

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

Logo-orginal