n_carcellar1957
প্রকাশ: ২০১৫-০৮-২২ ১১:৫৩:৫৯ || আপডেট: ২০১৫-০৮-২২ ১১:৫৩:৫৯
গাজী জয়নাল আবেদীন,চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাউজানের টানা বর্ষণে ফলে সৃষ্ট বন্যা ও পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির স্রোতে তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা আবাদী জমি। নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ফসল ও বীজতলা। নিজের অথবা ঋণ করা টাকা বিনিয়োগ করার পরও রোদ,বৃষ্টি ও ঝড়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিলে তিলে গড়ে তোলা ফসলের ক্ষেত ঘন ঘন সংগঠিত হওয়া বন্যায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে অতি লোকসানের মুখে পড়ে কৃষকরা এখন সর্বশান্ত। পুনরায় চাষে বিনিয়োগ করার সামর্থ অনেকের নেই। আবার অনেকে হারিয়ে ফেলেছে চাষ করার আগ্রহ। ফলে তরিতরকারী ও শস্য খাদ্য সংকটে পড়বে রাউজান ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার হতে টানা বৃষ্টির মধ্যে উপজেলার হলদিয়া, বেরুলিয়া, কুন্ডেশ্বরী, হাজীপাড়া, শরীফ পাড়া, কাজীপাড়া, শাহনগর, সত্তারপাড়া, জলিলনগর, হরিষখান পাড়া, ছিটিয়াপাড়া, পাচঁখাইন, নোয়াপড়া ও উরকিরচর এলাকার অধিকাংশ আবাদী জমির ফসল ও বীজতলা বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট হাটু পানিতে ডুবে আছ্।ে অনেক জায়গায় ধসে পড়েছে রাস্তাঘাট আর খালের পাড়। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
পাহাড় হতে নেমে আসা পানির ঢল ও বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছে অনেক ফসল। আখ ক্ষেতে আখ শূণ্য, রোপনকৃত আমন চারার উপর মাটির আস্তরণ আর অনেক শাক সবজির ক্ষেতে ফসলের লেশ মাত্র নেই। অনেক এলাকায় ফসলি জমির উপর পানি থৈ থৈ করছে।
উপজেলার হলদিয়া গ্রামের স্থানীয় কৃষক সামশুল আলম জানান, এবার বেগুনে ভাল ফলন হয়েছিল। দুই একদিনের মধ্যে বেগুন বাজারে বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু পাহাড়ী ঢলে গাছ সহ সব বেগুন ভেসে গেছে।
পূর্ব রাউজানের আব্দুর রহমান নামের এক কৃষক জানান, তার ৫০০ বীজতলার বরবটি সব নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সব পুঁজি আর শ্রম পন্ড হয়ে গেল।
অন্যদিকে গত প্রায় এক পক্ষকাল ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও কাপ্তাই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ার ফলে সৃষ্ট বন্যার পানির চাপে রাউজানের আমন চাষীরা বীজতলা হারিয়ে সর্বশাস্ত হয়েছিল। ওই সময়ের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মধ্যে যারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আবার দুর দুরান্ত থেকে আমন চারা সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করেছে তারা আবারও শংকার মধ্যে পড়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট পানিবদ্ধতায় আবার আটকে পড়েছে কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছে, উপজেলার উত্তার পূর্বাংশের পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি সর্তা, ডাবুয়া, কাঁশখালী, বেরুলিয়া, রাউজান খাল হয়ে তীব্র বেগে নামছে। এই পানির চাপ সহ্য করতে না পেরে ওসব খালের বিভিন্নস্থানে পাড় ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গা অংশে তীব্র বেগে পানি ছুটতে গিয়ে ফসলি জমির উপর বহু কৃত্রিম খালের সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েকজন আমন চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই বন্যার পানি কয়েকদিন স্থায়ী হলে তাদের আবাদী জমির চারা নষ্ট হয়ে যাবে। এ মৌসুমে আর কোনো কৃষকের আমন চাষাবাদ হবে না। তবে গত শুক্রবার থেকে পানি নামতে শুরু করলে দেখা যায় বীজ তলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন নতুন বীজতলা তৈরি করার সময় প্রায় পেরিয়ে গেছে। তাই পুনরায় বীজ তলা তৈরি করে আমন চাষ করা সম্ভব নয় বলে জানান অনেক কৃষক ।
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে