, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

বিপাকে ভারত, গরুর বাজার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার!

প্রকাশ: ২০১৫-০৯-০৬ ১২:১৭:০৯ || আপডেট: ২০১৫-০৯-০৬ ১২:২০:৫৫

Spread the love

Coxs-Cow-News1

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকা: গরু পাচার রোধে কঠোর অবস্থান নিয়ে নিজেই বিপাকে পড়েছে ভারত। সেদেশের সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টে লেখক এসএনএম আবিদি বিশ্লেষণ করে দেখান, গরু পাচার বন্ধ হয়ে গেলে ৩১ হাজার কোটি রুপি অতিরিক্ত খরচ করতে হবে মোদি সরকারকে। অন্যদিকে রপ্তানি-বাধা না থাকায় বাংলাদেশের গরুর বাজার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার।

ফার্স্টপোস্টের বিশ্লেষণে দাবি করা হয়, ‘গরু পাচার রোধে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজানাথ সিং এর কঠোর অবস্থানের কারণে এরই মধ্যে চাপ পড়েছে ভারতীয় করদাতাদের উপরে।’ এসময় টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ঐ বিশ্লেষণে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গরু পাচার সম্পূর্ণ বন্ধ করা হলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে বছরে ৩১ হাজার কোটি রুপি অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে।’

এই ৩১ হাজার কোটি রুপির হিসেব দিতে গিয়ে বলা হয়, একটি গরু মারা যাওয়ার পাঁচ বছর আগেই দুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়। আর এই পাঁচ বছর গরুকে খাওয়াতে বা রাখালকে বেতন দিতে তাদের এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বরাতে ঐ বিশ্লেষণে দাবি করা হয় বর্তমানে ২৫ লাখ গরু দুধ দেয়া বন্ধ করে ফেলেছে।

গরু বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেলে অতিরক্ত এই ব্যয়ভার সরকারকে নিতে খামার মালিকদের প্রবল চাপ তীব্র হয়ে উঠছে। এখন ২৫ লাখ গরুকে অন্তত পাঁচ বছর গো-শালায় রেখে তাদের যত্ন করতে হবে এবং তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে বার্ষিক খরচ হবে ৩১ হাজার ২৫০ কোটি রুপি। আর এই সংখ্যা শিশু স্বাস্থ্যের জন্য মোদি সরকারের প্রতিশ্রুত অর্থের চারগুণ বেশি বলেও জানানো হয় ঐ প্রতিবেদনে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজানাথ সিং বিজেপি’র গরু রপ্তানি ও গরুর মাংস বাতিলের অভিযান অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যান। তিনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে সীমান্ত দিয়ে বিগত কয়েক দশক ধরে চলে আসা গরু পারপার বন্ধ করতে কঠোর নিষোধাজ্ঞা জারি করেন। এই নিষেধাজ্ঞার আগে প্রায় ২৫ লাখ গরু সীমান্ত দিয়ে পার হতো। বাণিজ্য হতো প্রায় এক বিলিয়ন ইউএস ডলারের। দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ছাড়াও এতে লাভবান হতো বিএসএফ এবং বিজিবি।

বিএসএফ এর মতে এখন এই আমদানি-রপ্তানির হার ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ কমে গেছে। ২০১৪ সালের মার্চে এই সংখ্যা ছিলো ৫.০৫ লাখ আর এবছর সেটো আরো ১.২ লাখ কমে গেছে।

আর এই আমদানি হার পতনের কারণে গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে ৪০ শতাংশ। আসন্ন ঈদুল-আযহা’র কারণে এই দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঈদে বাংলাদেশে গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এই চাহিদা মেটাতে মিয়ানমার, ভুটান ও নেপাল থেকে আমদানি করার চেষ্টায় এরইমধ্যে সফল হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যম ‘আমাদের সময়’ জানিয়েছে, বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ইতিমধ্যে মিয়ানমার থেকে গরু আসতে শুরু করেছে। বিএসএফ জওয়ানরা বাংলাদেশে গরু পাচার পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার পর এদেশে বছরে ৩১ হাজার কোটি রুপি বা বাংলাদেশি টাকায় ৩৯ হাজার কোটি টাকার বাজার এখন ধীর সুস্থে মিয়ানমার দখল করে নিচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে গরু আসতে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। ভুটান-নেপাল-পাকিস্তান থেকেও গরু আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ জেড এইচ

Logo-orginal