n_carcellar1957
প্রকাশ: ২০১৫-০৯-০৪ ২০:৩১:৩৭ || আপডেট: ২০১৫-০৯-০৪ ২০:৩১:৩৭
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, লামা: লামায় হত্যা করে মাটিতে পুতে রাখা হাতির কঙ্কাল উদ্ধারের তিনদিন অতিবাহিত হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বন বিভাগ।
হাতি হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আদৌ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া কিনা ? এই নিয়েও রযেছে চরম অনিশ্চয়তা।
অভিযোগ উঠেছে, প্রতিটি হাতি হত্যার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বন বিভাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে দায় এড়িয়ে গেছে। বন্য প্রাণী হত্যা আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও রহস্য জনক কারণে নিরবতা পালন করছে বন্য পশু-পাখি সংরক্ষন এবং নিরপত্তার ব্যবস্থাকরণের দায়িত্বে থাকা বন বিভাগ।
ফলে একে একে হারিয়ে যেতে চলেছে সকল ধরনের বন্য পশু-পাখি।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের হাতে কোন লজিস্টিক নেই যে খুনিদের সহজে বের করতে পারবো। হাতি হত্যার সাথে জড়িতদের নাম ঠিকানা বের করতে না পারার কারণে মামলা করা যায়নি।
তবে প্রতিটি ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে।
পুলিশ চাইলে তদন্ত করে অপরাধিদের বের করে জিডি গুালোকে মামলা হিসেবে রূপ দিতে পারে। বন আইনে বন বর্মকর্তাদের হাতপা বাঁধা উল্লেখ করে রফিকুল ইসলাম বলেন, অপরাধিদের খুঁজে পেলে কোর্টে মামলা হয়। তবে না পেলে থানায় জিডিতেই ক্ষান্ত হতে হয়।
লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ডলুর ঝিরি এলাকায় সানমারের রাবার বাগানে হাতি হত্যার বিষয়ে বলেন, ঘটনায় জড়িতদের মামলা পক্রিয়াধিন রয়েছে বলে এই বন কর্মকর্তা জানান।
লামা বন বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, গত এক যুগে লামার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৯টি হাতি হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ২০০৩ সালে লামার ইয়াংছা এলাকায় একটি হাতি এ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে বন বিভাগ দাবী করে।
তবে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারী ওই হাতিটি ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে হত্যা করে দাঁত তুলে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
বাকী হাতি গুলো শিকারীরা শিকার বিভিন্ন সময় খাবারে বিষ প্রয়োগ ও ফাঁদ পেতে হত্যা করে মূল্যবান দাঁত, হাঁড় নিয়ে যায়।
চলত বছরের ১ফেব্র“য়ারি বিকালে লামার গজালিয়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি চাকমা ঝিরি এলাকায় প্রায় ৬ বছর বয়সী একটি হাতি হত্যা করে র্দুবৃত্তরা হাতির মাথা, সুর ও দাঁত কেটে নিয়েগেছে।
২ফেব্র“য়ারি সোমবার সেনাবাহিনী, বন বিভাগ, প্রানী সম্পদ বিভাগ যৌথ অভিযানে মৃত হাতির মাথা বিহীন দেহটি উদ্ধার করে।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ডলুর ঝিরি এলাকায় সানমার কোম্পানির রাবার বাগানে মাটিতে পুতে রাখা মৃত হাতির কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ ও বন বিভাগ।
সানমার কোম্পানির রাবার বাগানের পাশ্ববর্তি বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে জানাযায়, প্রায় সময় বন্যহাতি তান্ডব চালিয়ে গাছ-গাছালি চুড়মার করে। ফলে বাগানের মালিক এসব হাতির পাল তাড়াতে কুমারী এলাকার এক ব্যক্তিকে পাহারাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়। প্রায় এক মাস আগে কোন এক রাতে বন্যহাতির পাল বাগানে প্রবেশ করলে বাগানের পাহাড়দার হাতির পালকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে।
এতে একটি হাতি গুলিবিদ্ধ হয়ে বাগানের লাল পাহাড়ের দক্ষিণ স্থানের ঝিরিতে মারাযায়। পরে হত্যার এ ঘটনা জানাজানি হলে ওইদিন ভোরে বাগানে শ্রমিকরা মৃত হাতিটি কৌশলে মাটিতে পুঁতে ফেলে। এর পর খবর পেয়ে পুলিশ, বন বিভাগ মৃত হাতিটিকে খুঁজেও আর বের করতে পারেননি।
এর আগে পুলিশ ও বন কর্মকর্তারা হাতির খোঁজে বাগানে যাওয়ার খবর শুনে বাগানে কর্মরত শ্রমিক এবং কেয়ারটেকার সটকে পড়ে।
গত সোমবার অতিবর্ষণের কারণে হাতি পুতে রাখার স্থান থেকে মাটি সরে গেলে মৃত হাতিটি ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশ ও বন বিভাগকে খবর দেয়।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সানমার রাবার বাগানের ম্যানেজার মুফিজুর রহমান বলেন, সানমারের বাগানের ভেতর হাতি হত্যার কোন ঘটনা ঘটেনি।
তবে বাহিরে কেউ হাতি হত্যা করে বাগানে নিয়ে পুতে তাদের সমস্যায় ফেলতে পারে বলেও তিনি জানান।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক বন কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, ভাই হাতি হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিলে পাওয়া যায় ৪থেকে ৫লক্ষ টাকা।
মামলা করলেতো কেউ একটাও দিবে না। এদিকে একের পর এক হাতির হত্যার ঘটনায় বন বিভাগের এহেন নিরবতাকে দায়িত্বহীনতা বলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, লামা-আলীকদম পরিবেশ রক্ষা পরিষদের সভাপতি ও লামা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম।
হাতির কঙ্কাল উদ্ধারের ব্যাপারে লামা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে বন বিভাগ এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলেই মামলা হবে।
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এ এইচ বি