Ziaul Hoque
প্রকাশ: ২০১৫-১১-২১ ১৫:৫৮:১৩ || আপডেট: ২০১৫-১১-২১ ১৬:০৩:২৯
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, চট্টগ্রাম : কাউছার নিয়াজ সায়মন। ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে দাপিয়ে বেড়ান বাঁশখালী উপজেলার সর্বত্র। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে থাকে তার সরব উপস্থিতি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতার আশীর্বাদে গত সম্মেলনে কাউন্সিলর হওয়ারও সুযোগ পেয়েছেন। তাকে জেলা ছাত্রলীগের পদে আনতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ওই নেতা লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
তবে ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে তোর মধুর সম্পর্ক এবং নিজেকে আওয়ামী লীগের আদর্শধারী হিসেবে দেখালেও প্রকৃতপক্ষে অন্তরে ধারণ করেন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শ। আর সরকারি দলে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে তিনি খোদ সরকার বিরোধী নাশকতার মহাপরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিলেন। মজুদ করেছিলেন সরকার বিরোধী বিভিন্ন লিফলেট, পোস্টার ও বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র।
একই অঙ্গে দুই রূপধারী এই শিবির ক্যাডারকে গত বুধবার দিবাগত রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপরই মূলত তার মুখোশ উন্মোচন হয়ে যায়। গ্রেপ্তার এই বাঁশখালীর কাথরিয়া ইউনিয়নের মো. হোসেনের ছেলে কাউছার নিয়াজ সায়মনের কাছ থেকে দুটি রাম দা, দুটি চাপাতি, তিনটি ছুরি, একটি দা, বিপুল পরিমাণ গুলতি, উস্কানিমূলক লিফলেট, জামায়াত শিবিরের সাংগঠনিক বই ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ মুক্তি পরিষদের নামে ছাপানো ছয় হাজার লিফলেট উদ্ধার করা হয় বলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অভিযানে নেতৃত্বধানকারী নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার (বন্দর) এ বি এম ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পর আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে চালানো অভিযানে হামাজারবাগের বাসা থেকে সায়মনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ সরকার বিরোধী লিফলেট ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এসময় সে নিজেকে বাঁশাখালী ছাত্রলীগের নেতা বলে দাবি করে। তবে পরে যাচাই-বাছাই শেষে তাকে আমরা মূলত শিবির ক্যাডার হিসেবেই চিহ্নিত করেছি।’ এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল জামিল চৌধুরী সাকি বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের কোনো পদে সায়মন নেই। সে মাঝেমধ্যে সুমন ভাইয়ের সাথে (কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি) আমাদের অনুষ্ঠানে আসত। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে কাউন্সিলর হওয়ার বিষয়টিও শুনেছি।’
বাঁশখালী ছাত্রলীগের নেতারা জানান, ছাত্রলীগের কোনো পদে না থাকলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী সুমনের আশ্রয় প্রশ্রয়ে তিনি নিজেকে বড় ছাত্রনেতা হিসেবে দাবি করতেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে কাউন্সিলর হওয়ার পর আরো বড় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরানুল হক ইমরানের সাথেও তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক। ইমরান স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর আশীর্বাদে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হলেও প্রকৃতপক্ষে সুমনের পক্ষে কাজ করেন বলে জানা যায়।
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ জেড এইচ