, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

ফিরে দেখা: ২০১৫তে বাংলাদেশের যত ‘অর্জন’

প্রকাশ: ২০১৫-১২-২৭ ১০:১৭:২৪ || আপডেট: ২০১৫-১২-২৭ ১০:১৮:৩২

Spread the love

2015আরটিএমনিউজ২৪ডটকম,ঢাকা: ২০১৫ সাল প্রায় শেষের দিকে। হাতছানি দিয়ে ডাকছে নতুন বছর। নতুন বছরের আগমনে আরও একটি বছর কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে। নানা কারণেই ২০১৫ ছিল আলোচিত-সমালোচিত। ছিটমহল বিনিময় চুক্তি থেকে পদ্মা সেতু। সরকারের শুধু অর্জনই নয়, ঐতিহাসিক সাক্ষীও। বিভিন্ন পটপরিবর্তনের মধ্যেও মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বাস্তবায়ন, মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে জাতির কলঙ্কমোচন অন্যতম শুভবোধের বর্হিপ্রকাশ। প্রধানমন্ত্রীর ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ কিংবা ক্রিকেটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ধারাবাহিক সাফল্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশের অনন্য অর্জন।

ইতিহাসের সাক্ষী ছিটমহল বিনিময় চুক্তি

চলতি বছরের ১ আগস্ট বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকরের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ৬৮ বছর পর নিজেদের পরিচয় ফিরে পান প্রায় ৫৪ হাজার মানুষ। এর মাধ্যমে ৪৪ বছর পর বাংলাদেশ ফিরে পায় প্রায় ১০ হাজার একর ভূমি। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পান ৪০ হাজার ৪৭০ জন। ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার্যকর হওয়ায় দুই দেশের মানচিত্র ও জনসংখ্যায় পরিবর্তন আসে।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানে দেশ ভাগের সময় সিরিল রেডক্লিফ কমিশনের তাড়াহুড়োয় চিহ্নিত করা সীমান্তে সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল জটিলতার শুরু। এই সমস্যার অবসানে ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি হয়। এরপর তা কার্যকরে প্রোটোকল স্বাক্ষরিত হয় ২০১১ সালে। ১৯৭৪ সালের স্থলসীমান্ত চুক্তি ও ২০১১ সালের প্রোটোকল অনুসমর্থনের দলিল বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশের ৫১টি সাবেক ছিটমহল যুক্ত হয় ভারতে এবং ভারতের ১১১টি ছিটমহল যুক্ত হয় বাংলাদেশে।

বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত মতে, ১ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ভারতের পূর্ববর্তী ১১১টি ‘ছিটমহলে’ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়।  শেষ দফায় ২৬ জনসহ ৩০ নভেম্বর ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়ে যান মোট ৯১৭ জন।যদিও সে দেশে যাওয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করেছিলেন ৯৭৯ জন। কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরের বিলুপ্ত ছিটমহল থেকে একজনও বাংলাদেশে আসেননি। দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় ও নাগরিকত্ব নির্ধারণের পরেও কোনো সমস্যা হলে ২০২০ পর্যন্ত তা সমাধান করা হবে।  এর মধ্যেই সদ্য বাংলাদেশের মানচিত্রে স্থান পাওয়া ওই অঞ্চলগুলোত বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

গত ১৫ অক্টোবর কুড়িগ্রামে বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চালু হয়েছে সদ্য বিলুপ্ত ৫৯ ‘ছিটমহলে’ ইন্টারনেট সেবাও। গড়ে তোলা হচ্ছে স্কুল। সরকারের ১৫০০ বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে সাবেক ছিটমহল এলাকার ১২টি গ্রামে ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে বলে সংসদীয় কমিটিকে জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।  আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে দুই দেশের সীমানার নতুন মানচিত্র তৈরি হওয়ার কথা রয়েছে।

পদ্মা সেতু চ্যালেঞ্জ

অবশেষে বাংলাদেশের বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। এখন পুরোদমে চলছে নির্মাণ কাজ। গত ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর মূল অংশের নির্মাণ কাজ ও নদী শাসন কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  সরকার আশা করছে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু আগামী তিন বছরের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে।

সেতুর উপর দিয়ে ট্রেনও চলবে। এই সেতু নির্মাণ হলে সফলতার আরেকধাপে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু হলে শিল্পায়ন ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় তিন কোটি মানুষের জীবনে পরিবর্তন আসবে। পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক প্রভাব সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষায় এসব কথা বলা হয়েছে।

১৯৯৮ সালে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়ই পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তা শুরু হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ফিরে পুনরায় পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রকল্পের বাস্তবায়ন বিলম্বিত হতে থাকে। ২০১০ সালের জুলাইয়ে সেতু নির্মাণের জন্য প্রাক-যোগ্যতা দরপত্র মূল্যায়ন করে পাঁচ দরদাতাকে বাছাই করে তা বিশ্ব ব্যাংকের অনাপত্তির জন্য পাঠানো হলেও সংস্থাটি তা ঝুলিয়ে রাখে।

এরপর পদ্মা সেতুতে ‘সম্ভাব্য দুর্নীতির’ অভিযোগ আনে বিশ্ব ব্যাংক। দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে ২০১৩ সালের শুরুতে বাংলাদেশ বিশ্ব ব্যাংককে ‘না’ বলে দেয়। তখন নকশা অপরিবর্তিত রেখে নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার দেশের মধ্যে যান চলাচলে চুক্তি বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে সড়ক পথে যান চলাচলে চুক্তি হয় চলতি বছরের ১৫ জুন। ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে ঐতিহাসিক এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। চার দেশের মন্ত্রীরা প্রতিবেশী চার দেশে সড়ক পরিবহনের একটি রূপরেখায় স্বাক্ষর করেন। চুক্তির অধীনে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক-লরি ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি চলতে পারবে চারদেশের মধ্যে। শুল্ক ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে নিজ নিজ দেশের আইনে। তবে ট্রানজিট ও চলাচলের অনুমতি-সংক্রান্ত ফি নির্ধারণ আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে।

জাতি কলঙ্কমুক্তে আরেক ধাপ

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয় ২২ নভেম্বর। এর আগে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল একই অপরাধের দায়ে কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেন।

মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি

বাংলাদেশ এখন আর নিম্ন আয়ের দেশ নয়। মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে তৈরি করা ২ জুলাইয়ের এক রিপোর্টে বাংলাদেশকে এবার মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি দেয় বিশ্বব্যাংক। তবে মধ্যম আয়ের দেশের দু’টি ভাগ করেছে বিশ্ব ব্যাংক। একটি উচ্চ মধ্য আয়ের দেশ অপরটি নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ। বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে। যাদের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৪৫ ডলারের উপরে তারা নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ। সার্কভুক্ত ভারত ও পাকিস্তান নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে অন্তর্ভুক্ত।

মহাজোট সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারসহ বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনায় ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। এর আগেই নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হলে বাংলাদেশ। এই সফলতার প্রর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৩ বছরের মধ্যে নিম্ন মধ্যম আয় থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ‘সেঞ্চুরি’

গত ৮ অক্টোবর আশুগঞ্জের ৩টি ইউনিট উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের শততম বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই ৩টি ইউনিট উদ্বোধন করেন তিনি। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২৭টি।

মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জন

এ বছরের ৬ জুলাই জাতিসংঘ ঘোষিত পনের বছর মেয়াদের মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা এমডিজি শেষ হওয়ার পর দেখা গেছে, বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে পূরণ করেছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) হাতে নেওয়া হয় ২০০০ সালে।

বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে, এমডিজি অর্জনে ১৫ বছরে (২০০০-২০১৫) মোট তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সাহায্য দেওয়া হবে। কার্যত পাওয়া গেছে, ১.৭৮ বিলিয়ন অর্থাৎ অর্ধেকের কিছু বেশি। এমজিডির জন্য নির্ধারিত হয়েছিল ৮টি লক্ষ্যমাত্রা। ২০১৫ সালে তা শেষ হচ্ছে। বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে সফলতার জন্য প্রশংসা অর্জন করেছে।

তার মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং লিঙ্গভিত্তিক সমতা। স্বাস্থ্য খাতে অর্জনের মধ্যে রয়েছে ৫ বছরের কম বয়সী ছেলেমেয়েদের পুষ্টিবৃদ্ধি এবং তাদের মৃত্যুর হার হ্রাস। একই সঙ্গে মাতৃমৃত্যু হ্রাসও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অর্জিত হয়েছে। সরকারের সীমাবদ্ধতা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি সত্ত্বেও এ সফলতা বহির্বিশ্বের প্রশংসা অর্জন করেছে।

ক্রিকেটে সাফল্য

ক্রিকেটে এই বছর বাংলাদেশ দল যতগুলো একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলেছে সবগুলোতেই জয় পেয়েছে। বাংলাদেশের কাছে পরাজিতের তালিকায় রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পরাক্রমশালী দল।

৪১ বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি

মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে ৪১ বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে ১২ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। চলতি বছরের জুলাই থেকে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়া সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা পাবেন।  ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যা‌তিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে সম্মান জানান। তার নির্দেশনায় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগ পর্য‌ন্ত চলছিল।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামরিক শাসকদের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানি জান্তার সহযোগিদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পর গতবছর ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। এরপর চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে ওই প্রস্তাব পাস হয়।

নতুন বেতন স্কেল

দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে হয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত অষ্টম বেতন স্কেলের গেজেট। ১৫ ডিসেম্বর রাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গেজেটের মোড়ক উন্মোচন করেন। আর এর মাধ্যমে অবসান হয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার।  অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, সরকারি চাকরিজীবীদের বিজয় দিবসের বিশেষ উপহার বেতন স্কেলের প্রজ্ঞাপন।

এর আগে অর্থমন্ত্রী জানান, ১ জুলাই থেকেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন স্কেলে বেতন পাবেন, এটা নিশ্চিত। আইন মন্ত্রণালয় কিছু বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। তারা সেটা করতে পারে না। অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে নতুন স্কেলের বেতন হাতে পাবেন তারা।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল ধরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য অষ্টম বেতন কাঠামো মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়। নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীরা মূল বেতন পাবেন ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে। এক্ষেত্রে ১ জুলাই থেকেই এরিয়ার কার্যকর হবে।

গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন অনুমোদন

‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’-এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ২১ ডিসেম্বর সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

নীতির মূল কথা-গৃহ শ্রমিকদের জন্য শোভন কাজ, নিরাপদ বিশ্রাম, বিনোদন ছুটি ও মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা। জেনেভা কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই নীতিমালা অনুমোদন করেছে।

বন্দি বিনিময় চুক্তি, নূর হোসেনকে দেশে ফেরত

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম’র (উলফা) শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করার পর নূর হোসেনকে ফেরত দেয় ভারত। বাংলাদেশের অপরাধী-সন্ত্রাসীরা অপরাধ করে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় বলে দুই দেশের পক্ষ থেকে বলা হয়।

এই অপরাধীদের হস্তান্তরে ২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি হয় দুই দেশের মধ্যে। বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির পর নূর হোসেনই প্রথম ব্যক্তি, যাকে এ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ভারত সরকার অনুপ চেটিয়ার বিনিময়ে নূর হোসেনকে ফেরত দিতে রাজি হয়।

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রসহ অন্যান্য পারমাণবিক কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানি গঠন ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে বিধান করে জাতীয় সংসদে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিল-২০১৫ পাস করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর বিলের ওপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়।

ওমরাহ ভিসার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

৯ মাস বন্ধ রাখার পর বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহ ভিসার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সৌদি সরকার। গত ১৪ ডিসেম্বর রয়েল অ্যাম্বাসি অব সৌদি আরব বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এক চিঠিতে ওমরাহ ভিসা খুলে দেয়ার তথ্য জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করেছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হুসাইন। ওমরাহ ভিসার নামে মানবপাচারের অভিযোগ এবং নিয়মিত হজ পালনের পরে দেশে ফিরে না আসার কারণে গত মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছিল সৌদি আরব।

‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে পলিসি লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার পান শেখ হাসিনা।

জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে তার নেয়া বলিষ্ঠ পদক্ষেপই তাকে এ পুরষ্কারের অন্যতম দাবিদার করেছে। চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান। পরিবেশ বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

Logo-orginal