, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

সাতকানিয়ায় অপহরণ করে পানিতে চুবিয়ে মারার চেষ্টা,আটক ১

প্রকাশ: ২০১৬-০১-১১ ১০:১৭:৫৭ || আপডেট: ২০১৬-০১-১১ ১০:১৯:২১

Spread the love
 মু. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
atokচট্টগ্রাম: সাতকানিয়ায় এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। অপহৃতের নাম আবুল কাশেম (৪০)। গত শনিবার রাতে কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কের চেয়ারম্যান আবদুল মোনাফের বাড়িঘাটা এলাকা থেকে অপহরণের পর ১ নং ব্রিজের নিচে নিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়।
 
খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহরণের প্রায় তিন ঘণ্টা পর অপহৃত কাশেমকে উদ্ধার করেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ শাহেদ হোসেন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এব্যাপারে আবুল কাশেম বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়- বাজালিয়া ইউনিয়নের মাহালিয়া গ্রামের মৃত বশির মোহাম্মদের পুত্র ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র ল্যাব সহকারী আবুল কাশেম ঘটনার দিন রাত ৯ টায় চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে বাজালিয়া বাস স্টেশনে আসেন। পরে বাজালিয়া বাসস্টেশন থেকে একটি সিএনজি ট্যাক্সিযোগে কেরানীহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
তিনি জানান, অপহরণকারীরা বাজালিয়া বাস স্টেশন থেকে আমার পিছু নেয়। আমি ট্যাক্সি চালকের পাশে বসে কেরানীহাটে যাচ্ছিলাম। কিন্তু একই গাড়িতে তারা পেছনের সিটে বসে থাকার বিষয়টি আমি বুঝতে পারিনি। কিন্তু ট্যাক্সিটি চেয়ারম্যান আবদুল মোনাফের বাড়িঘাটা এলাকায় পৌঁছার পর একই গাড়িতে থাকা কেঁওচিয়ার মাদারবাড়ির হামিদ হোসেনের পুত্র রাশেদ হোসেন, তার ভাই শাহেদ হোসেন ও একই এলাকার আমিনুর রহমানের পুত্র তৌহিদুর রহমান তাকে জোরপূর্বক ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে মারধর করে মাদারবাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।
এসময় মাঝপথে পালিয়ে আবুল কাশেম ইব্রাহিমের চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ে এবং বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার দিতে থাকে। তখন উপস্থিত লোকজন তাকে আগলিয়ে রাখে। পরে রাশেদ, শাহেদ ও তৌহিদের সাথে একই এলাকার শাহাদাৎ হোসেন, খোকন, বাজালিয়ার মাহালিয়া এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান ও দেলোয়ার হোসেন দেলু মিলে উপস্থিত লোকজনকে জিম্মি করে আবুল কাশেমকে তুলে নিয়ে যায়।
পরে তাকে মাদারবাড়ি এলাকায় নিয়ে জোরপূর্বক অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। এরপর অপহরণকারীরা তাঁকে আর মারধর করবে না বলে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে মটর সাইকেলে তুলে কেরানীহাট- বান্দরবান সড়কের ১নং ব্রিজ এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে অপহরণকারী দলের কয়েকজন মিলে আবুল কাশেমকে ব্রিজের নিচে পানিতে চুবিয়ে মারার চেষ্টা চালায় । এক পর্যায়ে তারা আমার মৃত্যু হয়েছে মনে করে চলে যায়। পরে অপহরণকারীরা সেখান থেকে চলে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি পানি থেকে উঠে রাস্তায় আসি। এরই মধ্যে সাতকানিয়া থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সাতকানিয়া থানার ওসি(চলতি দায়িত্ব) মাহমুদুল হাই জানান, বাজালিয়ার মাহালিয়া এলাকায় মসজিদের ওয়াক্ফকৃত জায়গার বিরোধকে কেন্দ্র করে গত বছরের ৮ জানুয়ারি প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল হাশেম সিকদার নিহত হন। এ ঘটনায় তার বড় ভাই আবু মুছা সিকদার বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে নিহতের বড় আবুল কাশেম মামলার বিষয়ে তদারকি করেন। ফলে আসামি ও তার স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনার দিন আবুল কাশেমকে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার নাজমুল হক, এসআই হেলাল উদ্দিন ফারুকী ও মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে পুলিশ অপহৃত আবুল কাশেমকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় কাশেম বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা করেন। আবুল কাশেম জানান, অপহরণকারীদের মধ্যে রাশেদ হোসেন, তৌহিদুর রহমান, মিজানুর রহমান খোকন ও মোস্তাফিজুর রহমান আমার ভাই আবুল হাশেম হত্যা মামলার আসামি। আমি সে হত্যা মামলা তদারক করার কারণে আসামি ও তাদের স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

 

Logo-orginal