, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

পুলিশের খাতায় পলাতক, সংসদের খাতায় হাজিরা স্বাক্ষর পলাতক এমপি রানার

প্রকাশ: ২০১৬-০৬-২১ ২৩:৩৯:০০ || আপডেট: ২০১৬-০৬-২১ ২৩:৩৯:০০

Spread the love

ফাইল ছবিআরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকাঃ পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’। পুলিশ দাবি করছে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তিনি সংসদে উপস্থিত। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেছেন।

সোমবার আলোচিত এ ঘটনা ঘটেছে জাতীয় সংসদে।

জানা গেছে, খুনের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে শাসকদল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা গোপনে সংসদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।

সোমবার দুপুরে গোপনীয়তা রক্ষা করে তিনি সংসদে যান। লবিতে থাকা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেরিয়ে আসেন।

মঙ্গলবার সংসদ সচিবালয়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে।

তবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করলেও আমানুর রহমান খান রানা অধিবেশনে যোগ দেননি।

টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আমানুর রহমান রানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করে আসছে পুলিশ।

টাঙ্গাইল-৩ আসনের সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্যকে গ্রেফতারে গত ৬ এপ্রিল টাঙ্গাইলের আদালত পরোয়ানা জারি করে। তিনি ধরা না পড়ার পর ১৬ মে তার মালামাল বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়।

পালিয়ে থাকা রানা সর্বশেষ গত বছরের ৫ জুলাই সংসদের অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে অনুপস্থিতির কারণে সংসদ সদস্যপদ হারানোর ঝুঁকি তার রয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী, কোনো সাংসদ টানা ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে তার সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে।

সংসদের কার্যপ্রণালীবিধি অনুযায়ী, সংসদ এলাকায় কোনো সাংসদকে গ্রেফতার করতে হলে স্পিকারের অনুমতি নিতে হবে।

সংসদের প্রধান ফটকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ও লবির গার্ডরা জানান, আমানুর রহমান খান রানা সোমবার বেলা ১১টার পর নিজস্ব গাড়ি নিয়ে সংসদে ঢোকেন।

তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংসদের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস) কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম ও ডেপুটি সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস (অপারেশন) সেলিম খান দাবি করেন, তারা এ সম্পর্কে কিছু জানেন না।

এ বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংসদের চিফ আসম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমানুর রহমান সংসদে এসে হাজিরা দেয়ার বিষয়টি আজই (মঙ্গলবার) শুনলাম। তবে তিনি অধিবেশনে যোগ দেননি। দিলে আমার চোখে পড়ত।’

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি করে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুককে। হত্যার তিন দিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।

পরে নাহার সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ফারুক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। সেজন্যই তাকে হত্যা করা হয়। টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই রানা, মুক্তি, কাঁকন ও বাপ্পা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

ফারুক হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার খান পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আনিসুল ইসলাম রাজা এবং মোহাম্মদ আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রানাদের চার ভাইকে জড়িয়ে বক্তব্য দেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের ওসি গোলাম মাহফীজুর রহমান অভিযোগপত্র দেন, যাতে রানাসহ মোট ১৪ জনকে আসামি করা হয়। রানা ও তার ভাই ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি এই মামলায় আগাম জামিন নিতে উচ্চ আদালতেও গিয়েছিলেন। তখন তাদের গ্রেফতার ও হয়রানি না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছিল হাইকোর্ট।

তবে গত বছরের ডিসেম্বরে তাতে স্থগিতাদেশ আসে। আসামিদের মধ্যে রানা ও মুক্তির দুই ভাই টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জাহিদুর রহমান খান কাঁকন এবং ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সানিয়াত খান বাপ্পা ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন বলে জানা গেছে।

রানা ও মুক্তি দেশে থাকলেও তাদের বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য- তাদের ধরতে অভিযান চলছে, কিন্তু তাদের এখনও পাওয়া যায়নি।

উৎসঃ যুগান্তর

Logo-orginal