, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

জঙ্গিদের পেছনে কারা

প্রকাশ: ২০১৬-০৭-২০ ০৯:৪৯:১৪ || আপডেট: ২০১৬-০৭-২০ ০৯:৪৯:১৪

Spread the love

র‌্যাব-পুলিশ অনেক বিষয়ে অন্ধকারে

জঙ্গিদের পেছনে কারা
জঙ্গিদের পেছনে কারা

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকাঃ জঙ্গিদের নিয়ে তোলপাড় চললেও এদের পেছনে কারা নিয়ন্ত্রণ করছে, কারা তাদের নেতা সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য নেই পুলিশ-গোয়েন্দাদের হাতে। লিড নিউজ নয়া দিগ্নতের ।

 

একাধিক সূত্র বলেছে, জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ জঙ্গি সংগঠনগুলো এখন আগের চেয়ে অনেক বিস্তৃত। এখনো অঞ্চলভিত্তিক এসব সংগঠনের নতুন নতুন শাখার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে কারা নিয়ন্ত্রণ করছে এসব সংগঠন তা জানতে চাইলে র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সবকিছু বলা যাবে না। পত্রিকায় প্রকাশিত হলে আমরা আর গ্রেফতার করতে পারব না। পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি মিডিয়া বলেছেন, এই তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে থাকতে পারে।
গুলশানের হোলে আর্টিজান রেস্তোরাঁসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক বেশ কিছু হামলা ও খুনের ঘটনায় বাংলাদেশের জঙ্গিদের নিয়ে এখন দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষ করে গুলশানের হোলে আর্টিজানে বন্দুকধারীদের হামলার পরে বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে দুনিয়াজুড়ে আলোচনা শুরু হয়। ২০০৫ সালে দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলার পরও এভাবে জঙ্গি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ওই সময় পুলিশ-গোয়েন্দারা তদন্তে নেমে শুরুতেই জানতে পারে ঘটনার সাথে কারা জড়িত। সে অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয় ওই সময়ের জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ শীর্ষ জঙ্গিদের। তাদের মধ্যে ছয় জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী জেএমবির অপারেশনাল সেক্টরের কর্মকাণ্ড শুরু হয়। ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা বড় ও ছোট মাপের বেশ কিছু হামলা চালায়। এর মধ্যে সাতটি বড় ধরনের হামলায় নিহত হয় ৩০ জন, আহত হয় চার শতাধিক। নিহতদের মধ্যে বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ এবং সাধারণ মানুষ রয়েছে। ওই বছর ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক বহনকারী গাড়ির মধ্যে জঙ্গি সদস্যরা বোমা হামলা চালায়। সেখানে নিহত হন ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে এবং সোহেল আহম্মদ। সেখানে জঙ্গি সদস্য মামুনসহ কমপক্ষে আটজন আহত হয়। ঝালকাঠির এ ঘটনায় হামলাকারী মামুনসহ সাত জঙ্গির ফাঁসির দণ্ডাদেশ হয়। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ এদের মধ্যে শায়খ আব্দুর রহমান, তার ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আব্দুল আওয়াল, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুক এবং মামুনের ফাঁসি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শীর্ষ এই জঙ্গির ফাঁসি এবং ওই সময়ে বিভিন্ন এলাকায় হামলার ঘটনায় অঞ্চলভিত্তিক শীর্ষ জঙ্গিরা ধরা পড়ার পরে জেএমবি অনেকটা তাল হারিয়ে ফেলে। এক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় জেএমবির বড় ধরনের কোনো নাশকতা করার শক্তি আর নেই। এর কিছু দিন পরে জানা যায়, সিলেটের মাওলানা আবু জাফর ওরফে সাইদুর রহমান জেএমবির হাল ধরেছে। এক সময় তাকেও গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাকে গ্রেফতারের পর নাম উঠে আসে সোহেল মাহফুজের। এই সোহেল মাহফুজ এক সময় জেএমবি প্রধান নির্বাচিত হয় বলে পুলিশ-গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করেও গ্রেফতার করা যায়নি। মাহফুজ এখন কোথায় আছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই গোয়েন্দা ও পুলিশের হাতে। র‌্যাবের মিডিয়া উইং প্রধান মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, সোহেল মাহফুজকে গ্রেফতার করা যায়নি। সে কোথায় আছে সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য নেই।
সোহেল মাহফুজের পর জেএমবির নেতৃত্ব কাদের হাতে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য নেই পুলিশ ও গোয়েন্দাদের হাতে। কারা এই জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করছে সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য নেই। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে বেশির ভাগ ঘটনার সাথে এ জেএমবির সদস্যরাই জড়িত বলে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এ দিকে কিছু কিছু ঘটনার সাথে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সংশ্লিষ্টতার দাবি করা হলেও কারা এই সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাছে নেই। একাধিক সূত্র বলেছে, শীর্ষ নেতৃত্বের কোনো খবর না থাকলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অঞ্চলভিত্তিক জঙ্গিরা সংগঠিত হচ্ছে। তাদের সেন্ট্রাল কমান্ড নেই। আঞ্চলিক কমান্ডের ভিত্তিতে ওই জঙ্গি সংগঠনগুলো চলছে।
এ দিকে জঙ্গিদের শীর্ষ নেতৃত্ব সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি মিডিয়া এ কে এম শহিদুর রহমানের সাথে। তিনি বলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এমন তথ্য থাকলে থাকতে পারে। তবে খোলামেলাভাবে দেয়ার মতো কোনো তথ্য নেই।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি মিডিয়া মাসুদুর রহমানও বলেছেন, এমন কোনো তথ্য এখন নেই।
র‌্যাবের মিডিয়া উইং প্রধান মুফতি মাহমুদ খান বলেছেন, জেএমবির ওই রকম নেতা নেই এখন। এক সময় সোহেল মাহফুজ ছিল। তাকে গ্রেফতারের অনেক চেষ্টা করা হয়। সে এক সময় জঙ্গিদের সংগঠিত করার চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, সোহেল এখন পলাতক। তিনি বলেন, এখন কিছু আঞ্চলিক নেতা আছে। বিভিন্ন সময় তারা ধরা পড়েছে। দেখা যায়, একজন ধরা পড়লে নিচ থেকে আরেকজন নেতৃত্বে আসে। মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আমরা বেশি কিছু বলতে চাই না। পত্রিকায় ছাপা হলে তাদের ধরতে পারব না।

উৎসঃ ন্যা দিগন্ত

Logo-orginal