admin
প্রকাশ: ২০১৭-০১-১৩ ০৬:৫৮:৪৯ || আপডেট: ২০১৭-০১-১৩ ০৬:৫৮:৪৯
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, অনলাইন ডেস্কঃ দুই কোটি রুপি ব্যয়ে এক শয্যার অত্যাধুনিক একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে ভারতের মুম্বাইয়ে। আপাতত নির্দিষ্ট একজন রোগীর চিকিৎসার উদ্দেশ্যেই নির্মিত হচ্ছে হাসপাতালটি। আর সেই বিশেষ রোগী হলেন ইমান আহমেদ নামের মিসরীয় এক নারী। ৫০০ কেজি ওজনের ওই নারীকে বিশ্বের সবচেয়ে স্থূলকায় নারী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
তিন হাজার স্কয়ার ফুটের হাসপাতালটিতে থাকবে একটি অস্ত্রোপচার কক্ষ, অত্যাধুনিক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), চিকিৎসকের কক্ষ, রোগীর সেবায় নিয়োজিত আপনজন ও কর্মীদের জন্য একটি কক্ষ, দুটি বিশ্রামাগার ও একটি ভিডিও কনফারেন্স কক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুম্বাইয়ের চারনি রোডে অবস্থিত সাইফি হাসপাতাল প্রাঙ্গণের পাশেই ইমানের জন্য এক শয্যার ওই হাসপাতালটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানেই তার সার্জারি (ওজন কমানোর অস্ত্রোপচার) করা হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় দুই কোটি রুপি। ইমান আহমেদের ওজন, দৈর্ঘ্য ও স্থূলতার কথা মাথায় রেখেই মূলত এই হাসপাতালের নকশা করা হয়েছে। তার জন্য সাত ফুট বাই সাত ফুট বিছানা যেমন তৈরি করা হয়েছে তেমনি হাসপাতালের দরজাও অতিরিক্ত চওড়া করা হয়েছে। এখানেই সাইফ হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ মুফাজ্জল লাকদাওয়ালা, একজন শল্যবিদ, একজন এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, একজন চেস্ট ফিজিশিয়ান, দুজন ইনটেনসিভিস্ট ও তিনজন অবেদনবিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ দল ইমানের অস্ত্রোপচার করবেন। দিনের ২৪ ঘণ্টাই তাকে অস্ত্রোপচার পরবর্তী সেবা দেওয়া হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৩৬ বছর বয়সী ইমান আহমেদের বাড়ি মিসরের কায়রোতে। গত ২৫ বছর ধরে ঘরের বাইরে চলাফেরা করার মতো শক্তি তার নেই। বর্তমানে তিনি ডায়াবেটিস, হাঁপানি, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসের সমস্যা ও বিষণ্নতায় ভুগছেন।
বেশ আগে থেকেই ইমান চিকিৎসার জন্য ভারতে আসতে আগ্রহী তিনি। একবার আবেদন করেও তাকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছিল। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ভিসা না পেয়ে ওই নারী সার্জারি বিশেষজ্ঞ মুফাজ্জল লাকদাওয়ালার সাহায্য চান। পরে ইমানের শারীরিক অবস্থার বিবরণ দিয়ে ও তার চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহে টুইট করেন মুফাজ্জল লাকদাওয়ালা। টুইটটি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজে নজরে আসে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই টুইটের জবাবে ইমান আহমেদকে ভারতে নিয়ে এসে তার চিকিৎসায় সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ডিসেম্বরে মিসরীয় ওই নারীকে ভারতে চিকিৎসার জন্য ভিসা দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার কারণে সাধারণ বিমানে ইমানকে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। এ ছাড়া কায়রো থেকে মুম্বাই পর্যন্ত সরাসরি কোনো ফ্লাইট না থাকায় তাঁকে এই হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য একটি প্রাইভেট চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সার্জারি বিশেষজ্ঞ মুফাজ্জল লাকদাওয়ালা বলেন, ইমানের অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। অস্ত্রোপচারের জন্য তার কাছ থেকে কোনো অর্থ নেওয়া হবে না। এ ছাড়া অস্ত্রোপচারের পরের চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হবে না।
তিনি জানান, এক শয্যার ওই হাসপাতালে তার তত্ত্বাবধানেই ইমান অন্তত ছয় মাস চিকিৎসাধীন থাকবেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চিকিৎসা চলাকালে ইমান আহমেদের সঙ্গে তার বোন ছয়মা আবদুলাতি থাকবেন। প্রতিদিন তিনিই ইমানের যত্নআত্তি নেবেন।
হাসপাতালটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এসবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি জানিয়েছে, জানুয়ারির শেষ নাগাদ নির্মাণকাজ একদম শেষ হয়ে যাবে। এখনই প্রায় ৭০ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেছে। সুত্রঃ আমাদের সময় ।