, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বাংলাদেশে মানবাধিকারের বড় অন্তরায় বিচারবহির্ভূত হত্যা সরকারি বাহিনীর গুম, বেআইনিভাবে আটক

প্রকাশ: ২০১৭-০৩-০৪ ১১:১১:১২ || আপডেট: ২০১৭-০৩-০৪ ১৫:২৯:৫৭

Spread the love
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশে মানবাধিকারের বড় অন্তরায় হিসেবে বিচারবহির্ভূত হত্যা, সরকারি বাহিনীর গুম, বেআইনিভাবে আটক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রোধকে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।এতে বাংলাদেশে গুম, বেআইনিভাবে আটক, সংখ্যালঘুদের হত্যা, বাল্যবিয়ে বিশেষ করে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং দুর্বল শ্রম অধিকার আইনের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

তবে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর বেসামরিক প্রশাসনের কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ন আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলেছে, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, খেয়ালখুশি মতো ও বেআইনী গ্রেপ্তার, গুম বাংলাদেশে মানবাধিকারের প্রধান অন্তরায়। এছাড়া রয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত সহিংসতা, সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি, অনলাইন ও মিডিয়ায় মুক্ত মত প্রকাশের অন্তরায়। বাংলাদেশে ২০১৬ সালে ঘটে যাওয়া ঘটনার ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিজস্ব ওয়েবসাইটে সারা বিশ্বের গত বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে।

 

শুক্রবার প্রকাশিত রিপোর্টের বাংলাদেশ বিষয়ক অধ্যায়ও বেশ দীর্ঘ। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ, বহু মতবাদ ও সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচন আন্তর্জাতিক বেশির ভাগ পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে বিতর্কিত ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে পারেনি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর ওপর বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। দায়েশ ও আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট (একিউআইএস) তাদের কর্মকান্ড বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশে। হত্যা করা হয়েছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, শিক্ষাবিদ, বিদেশী, মানবাধিকার কর্মী, এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সদস্য ও অন্যান্য গ্রুপের সদস্যদের।

 

সরকার জঙ্গি বিরোধী শক্তিশালী অভিযান চালিয়েছে। তবে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো বলছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-, ঘুষ আদায়ের জন্য খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তার, গুম, নির্যাতন ও মানবাধিকারের আরও লঙ্ঘন হচ্ছে। সুশীল ও রাজনৈতিক অধিকারকে সীমিত করতে সরকার সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপ আরও বেশি ব্যবহার করেছে। এসব বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-, খেয়াল খুশি মতো ও বেআইনি গ্রেপ্তার, গুমের জন্য দায়ী নিরাপত্তা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। কট্টর দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এমন গ্রুপের হাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের হত্যা বেড়েছে।

রয়েছে বাল্য বিয়ে ও জোরপূর্বক বিয়ে, লিঙ্গগত সহিংসতাÑ বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর। কর্মক্ষেত্রে রয়েছে নাজুক পরিস্থিতি ও শ্রম অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ওই রিপোর্টে আরও বলেছে, কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকারকে সঙ্কুচিত করেছে। কর্মকান্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান (এনজিও) অব্যাহতভাবে আইনী ও অনানুষ্ঠানিক বিধি-নিষেধের মুখোমুখি হয়েছে। বিকলাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্য রয়েছে।

 

বিশেষ করে বিকলাঙ্গ কোনো শিশু সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে গিয়ে এমন বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা নিয়ম লঙ্ঘন বা নির্যাতনের ক্ষেত্রে ব্যাপক দায়মুক্তি পাচ্ছেন বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে সরকার সীমিত পদক্ষেপ নিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কট্টরপন্থিদের হামলার শিকারদের দায়ী করেছে সরকার। এতে হামলাকারীরা দায়মুক্তি পেয়েছে এবং এমনটা বৃদ্ধি পেয়েছে

Logo-orginal