, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

অবিস্মরণীয় ও সম্মানিত একটি রাতের নাম লাইলতুল কদর

প্রকাশ: ২০১৭-০৬-২২ ১৫:৫৫:২৪ || আপডেট: ২০১৭-০৬-২২ ১৫:৫৫:২৪

Spread the love
অবিস্মরণীয় ও সম্মানিত একটি রাতের নাম লাইলতুল কদর
অবিস্মরণীয় ও সম্মানিত একটি রাতের নাম লাইলতুল কদর

 আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ইসলাম ডেস্কঃ  মহিমাময় রজনী লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশকে অবস্থিত। আলাহ রাব্বুল আলামিন এ রাতকে সকল রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা

দিয়েছেন। তিনি তার কালামে এ রাতকে প্রশংসার সাথে উলেখ করেছেন। তিনি তাঁর কালাম সম্পর্কে বলতে যেয়ে এরশাদ করেন :



(اِنَّا َأنْزَْلنَاهُ فِي َليَْلةٍ مُبَارَ َ كةٍ إِنَّا ُ كنَّا مُنْذِرِينَ ﴿ ٣﴾ فِيهَا يُفْرَقُ ُ كلُّ َأمْرٍ حَكِيمٍ ﴿ ٤



“আমি তো ইহা অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে। আমি তো সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়।” (সূরা আদ-দুখান : ৩-৪)



বরকতময় রজনী হল লাইলাতুল কদর। আলাহ তাআলা একে বরকতময় বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এ রাতে রয়েছে যেমন বরকত তেমনি কল্যাণ ও তাৎপর্য। বরকতের প্রধান কারণ হল এ রাতে আল-কোরআন নাজিল হয়েছে। এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সিদ্ধান্ত লওহে মাহফুজ থেকে ফেরেশতাদের হাতে অর্পণ করা হয় বাস্তবায়নের জন্য। এ রাতের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল আলাহ তাআলা এ রাত সম্পর্কে একটি পূর্ণ সূরা অবতীর্ণ করেছেন। যা কিয়ামত পর্যন্ত পঠিত হতে থাকবে।



إِنَّا َأنْزَْلنَاهُ فِي َليَْلةِ الَْقدْرِ ﴿ ١﴾ وَمَا َأدْرَاكَ مَا َليَْلةُ الَْقدْرِ ﴿ ٢﴾ َليَْلةُ الَْقدْرِ خَيْرٌ مِنْ َألْفِ شَهْرٍ ﴿ ٣﴾ تَنَزَّلُ الْمَلَائِ َ كةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ ُ كلِّ َأمْرٍ ﴿ ٤﴾ سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطَْلعِ اْلَفجْرِ ﴿ ٥﴾ القدر



“নিশ্চয় আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি এক মহিমান্বিত রজনীতে। আর মহিমান্বিত রজনী সম্পর্কে তুমি কী জান ? মহিমান্বিত রজনী সহস্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতেই ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনী উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল-কদর)



এ সুরাতে যে সকল বিষয় জানা গেল তা হল :



(১) এ রাত এমন এক রজনী যাতে মানবজাতির হেদায়াতের আলোকবর্তিকা মহা গ্রন্থ আল-কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। 



(২) এ রজনী হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। অর্থাৎ তিরাশি বছরের চেয়েও এর মূল্য বেশি।



(৩) এ রাতে ফেরেশতাগণ রহমত, বরকত ও কল্যাণ নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে থাকে।



(৪) এ রজনী শান্তির রজনী। আলাহর বান্দারা এ রাতে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে শান্তি অর্জন করে থাকে।



(৫) সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। এ আয়াতগুলোতে অল্প সময়ে বেশি কাজ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হল। যত সময় বেশি তত বেশি কাজ করতে হবে। সময় নষ্ট করা চলবে না।



(৬) গুনাহ ও পাপ থেকে ক্ষমা লাভ। এ রাতের এই ফজিলত সম্পর্কে বোখারি ও মুসলিম বর্ণিত হাদিসে এসেছে –



إن النبي صلى الله عليه وسلم قال : من قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه. رواه البخاري ومسلم



নবী করিম (স) বলেছেন : যে লাইলাতুল কদরে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সালাত আদায় ও ইবাদত-বন্দেগি করবে তার অতীতের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম)



লাইলাতুল কদর কখন ?



আল-কোরআনে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি লাইলাতুল কদর কোন রাত। তবে কুরআনের ভাষ্য হল লাইলাতুল কদর রমজান মাসে। কিয়ামত পর্যন্ত রমজান মাসে লাইলাতুল কদর অব্যাহত থাকবে। এবং এ রজনী রমজানের শেষ দশকে হবে বলে সহি হাদিসে এসেছে। এবং তা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে হাদিসে এসেছে।



تحروا ليلة القدر في العشر الأواخر من رمضان. رواه البخاري



“তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ কর।” (বর্ণনায় : বোখারি)



এবং রমজানের শেষ সাত দিনে লাইলাতুল কদর থাকার সম্ভাবনা অধিকতর। যেমন হাদিসে এসেছে :



… فمن كان متحر ﺑﻬا فليتحرها في السبع الأواخر. متفق عليه



“যে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করতে চায় সে যেন শেষ সাত দিনে অন্বেষণ করে।” (বর্ণনায় : বোখারি ও মুসলিম)



অধিকতর সম্ভাবনার দিক দিয়ে প্রথম হল রমজান মাসের সাতাশ তারিখ। দ্বিতীয় হল পঁচিশ তারিখ। তৃতীয় হল ঊন ত্রিশ তারিখ। চতুর্থ হল একুশ তারিখ। পঞ্চম হল তেইশ তারিখ। আলাহ রাব্বুল আলামিন এ রাতকে গোপন রেখেছেন আমাদের উপর রহম করে। তিনি দেখতে চান এর বরকত ও ফজিলত লাভের জন্য কে কত প্রচেষ্টা চালাতে পারে।



লাইলাতুল কদরে আমাদের করণীয় হল বেশি করে দোয়া করা। আয়েশা রা. নবী করিম স.-কে জিজ্ঞেস করলেন, লাইলাতুল কদরে আমি কি দোয়া করতে পারি? তিনি বললেন, বলবে –



َالّلهُم إِنَّكَ عَفُوٌّ تٌحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ . رواه الترمذي



“হে আলাহ ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালোবাসেন, অতএব আমাকে ক্ষমা করুন।” (বর্ণনায় : তিরমিজি)
সৌজন্যে – ইসলাম হাউজ

Logo-orginal