, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

রমাদান মাসে আল্লাহর পথে দানের গুরুত্ব

প্রকাশ: ২০১৭-০৬-১৫ ২০:৫০:৫৩ || আপডেট: ২০১৭-০৬-১৫ ২০:৫০:৫৩

Spread the love
রমাদান মাসে আল্লাহর পথে দানের গুরুত্ব
রমাদান মাসে আল্লাহর পথে দানের গুরুত্ব

ড. আবু মোহাম্মদ :

ভুমিকা, যে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে এ দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, তিনি তাঁর মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে ঘোষণা দিচেছন এভাবে:
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ
নিশ্চয়্ই আল্লাহ মুসলমানদের কাছ থেকে তাদের জান ও মাল বেহেশ্তের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন (সুরা আত্ তাওবা: ১১১)”। অর্থাৎ, যদিও আমাদের জানের সৃষ্টিকর্তা এবং আমাদের রিজিকদাতা রাজ্জাক একমাত্র তিনিই, তবুও যেহেতু তিনি আমাদেরকে দুনিয়ার অল্প সময়ের জিন্দেগীর স্বাধীনতা দিয়েছেন সেহেতু তিনি আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নেবার একটি সুযোগও দিচ্ছেন এই বলে যে, কে আছে তাঁর জান্নাত কিনতে চায়। যদি কেউ তা চায়, তাকে অবশ্যই আল্লাহর দেয়া এই জান ও মাল আল্লাহর নির্ধারিত পথে খরচ করতে হবে। দুনিয়ার অন্য সব ব্যবসার থেকে ব্যতিক্রম এই ব্যবসার কোন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, বরঞ্চ নিশ্চিত লাভ, অর্থাৎ জান্নাতই এর একমাত্র ফলাফল।
আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী, দুনিয়াবী সকল বাধা উপেক্ষা করে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে নিজেদের জীবনকে আল্লাহর কোরআন ও নবী মুহম্মদ (স.) এর সুন্নাহ মোতাবেক পরিচালিত করার সার্বিক চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন ইবাদতের পাশাপাশি কিছুটা সময় হলেও আল্লাহর বান্দাদেরকে কিছুটা হলেও ইসলামের পথে আসার, থাকার ও চলার দাওয়াত দিয়ে থাকি। একই সাথে বৃটেনের মাটিতে এবং আমাদের দেশ বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ইসলামী কাজ ও প্রতিষ্ঠানে কিংবা অসহায় ও গরীবদের সহায়তায় আমাদের দানের হাত প্রসারিত করে থাকি। আলোচ্য প্রবন্ধে মূলত: আল্লাহর পথে দানের হাত বাড়িয়ে দেয়ার সত্যিকারের গুরুত্ব, এবং বিশেষত: রমজান মাসে তা করলে ফজীলত কি তা কোরআন-হাদীসের আলোকে ব্যাখ্যা করার প্রচেষ্টা করব ইন্শাআল্লাহ।

ফজিলত
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর পথে দান অর্থাৎ ব্যয় করাকে এতটা পছন্দ করেন যে তিনি হাশরের ময়দানে তাঁর সামনে দাাঁড়ানোর পূর্বে তা করতে আহ্বান করছেন –
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنْفِقُوا مِمَّا رَزَقْنَاكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ يَوْمٌ لا بَيْعٌ فِيهِ وَلا خُلَّةٌ وَلا شَفَاعَةٌ وَالْكَافِرُونَ هُمُ الظَّالِمُونَ
”হে বিশ্বাসীগণ! আমি তোমাদিগকে যে জীবিকা দান করেছি, তা হতে সেই দিন আসার পূর্বে ব্যয় কর যাতে কোন ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ কোন কাজে আসবে না, আর অবিশ্বাসীরাই অত্যাচারী। (সুরা আল্-বাকারাহ্: ২৫৪)”
এই আয়াতটিকে বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি যে, আল্লাহ মুমিনদের কাছে আশা করেন তারা তাদের মৃত্যু আসার পূর্ব পর্যন্ত দান করুক। কেননা, মৃত্যুর পর কারোরই দান করা কেন কোন আমলই করা সম্ভব হবেনা, এবং কারো সুপারিশও কোনো কাজে আসবেনা। আর যারা এটা করবেনা, তাদেরকে আখেরাতে অবিশ্বাসী এবং নিজেদের নফসের উপর জুলুমকারী হিসেবে আল্লাহ আখ্যায়িত করেছেন। আর মৃত্যুর পর অনুশোচনা করারও সুযোগ থাকবেনা। কেননা, আল্লাহ বলেন:
وَأَنْفِقُوا مِنْ مَا رَزَقْنَاكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلا أَخَّرْتَنِي إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُنْ مِنَ الصَّالِحِينَ
وَلَنْ يُؤَخِّرَ اللَّهُ نَفْسًا إِذَا جَاءَ أَجَلُهَا وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
”আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করো তোমাদের কারো মৃত্যূ আসার আগেই। অন্যথায় অনুতাপ-অনুশোচনা করে বলতে হবে, হে পরোয়ারদিগার, আমাকে যদি অল্প কিছু সময়ের জন্য অবকাশ দিতে, তাহলে আমি দান-খয়রাত করতাম এবং নেক লোকদের একজন হতে পারতাম! কারো মৃত্যূর নির্ধারিত সময় আসার পর আল্লাহ কাউকে অবকাশ দিবেননা। আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পর্কে ভালভাবে ওয়াকিবহাল। (সুরা মুনাফিকুন: ১০-১১)”
আর এই কাজটি আল্লাহর জন্যে নয়, বরং নিজের উপকারের জন্যই এবং এর প্রতিদান পরিপূর্ণভাবেই পাওয়া যাবে আখেরাতে। আল্লাহ বলেন:
وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ خَيْرٍ فَلأنْفُسِكُمْ وَمَا تُنْفِقُونَ إِلا ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللَّهِ وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ خَيْرٍ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنْتُمْ لا تُظْلَمُونَ
” … এবং যা কিছু তোমরা ব্যয় কর, নিজেদের স্বার্থের জন্যই কর। আর তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় করোনা। … এবং তোমরা উত্তম সম্পদ হতে যা ব্যয় করবে তা সম্পূর্ণভাবে পেয়ে যাবে, আর তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।” (সুরা আল্-বাকারাহ্: ২৭২)”।
এই দানকে আল্লাহ এত বেশী ভালবাসেন যে, তিনি এর বিনিময় তাঁর ইচ্ছামত অসীম পরিমাণ দিতে অঙ্গীকার করেছেন:
مَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِائَةُ حَبَّةٍ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
যারা আল্লাহ্র পথে স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা – যেমন একটি শস্য বীজ, তা হতে উৎপন্ন হলো সাতটি শীষ, প্রত্যেক শীষে (উৎপন্ন হলো) শত শস্য, এবং আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছে করেন বর্ধিত করে দেন, বস্তুত: আল্লাহ হচ্ছেন বিপুল দাতা, মহাজ্ঞানী। (সুরা আল্-বাকারাহ্: ২৬১)”।
এই আয়াতে দুনিয়ার মানুষগুলো যে পদ্ধতিতে বললে বুঝবে সেই পদ্ধতিতে আল্লাহ শুরু করেছেন এই বলে যে, কেউ যদি আল্লাহর পথে এক পাউন্ড দান করে সে আল্লাহর কাছে কমপক্ষে সাতশ পাউন্ড দান করার সওয়াব পাবে। কিন্তু এরপর আল্লাহ থামেননি। আল্লাহ বলেছেন যে, দুনিয়ার বুদ্ধির বাইরেও আরও প্রতিদান আল্লাহ দিতে প্রস্তুত আছেন। তিনি তার ইচ্ছামত প্রতিদান দিবেন। তা মিলিয়ন – বিলিয়ন তথা অসীম সংখ্যক পাউন্ড আল্লাহর রাস্তায় দানের সওয়াবের সমান হতে পারে, যদি আল্লাহ চাহেন। কেননা, আল্লাহ এটা পারবেন এই জন্য যে, তিনি এমন এক সত্তা সারা দুনিয়ার সকল সৃষ্টির সমস্ত চাহিদা (তারা যতই চাক না কেন) পুরোপুরি পূরণ করার পরও তাঁর ভান্ডারে এক বিন্দুও কমতি পড়বে না। আর এটা সম্ভব হবে কিভাবে তা দুনিয়ার মানুষকে বোঝানোর জন্য আল্লাহ তাদের দানকে উর্বর জমিতে ফসল ফলানোর সাথে তুলনা করেছেন, যাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ার কারণে একই বীজ দিয়েই দ্বিগুণ খাদ্য উৎপাদিত হতে পারে:
وَمَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاةِ اللَّهِ وَتَثْبِيتًا مِنْ أَنْفُسِهِمْ كَمَثَلِ جَنَّةٍ بِرَبْوَةٍ أَصَابَهَا وَابِلٌ فَآتَتْ أُكُلَهَا ضِعْفَيْنِ فَإِنْ لَمْ يُصِبْهَا وَابِلٌ فَطَلٌّ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِير
এবং যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি সাধন ও স্বীয় জীবনের প্রতিষ্ঠার জন্যে ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা – যেমন উর্বর ভূভাগে অবস্থিত একটি উদ্যান, তাতে প্রবল বৃষ্টিধারা পতিত হয়, ফলে সেই উদ্যান দ্বিগুণ খাদ্য শস্য দান করে; কিন্তু যদি তাতে বৃষ্টিপাত না হয় তবে শিশিরই যথেষ্ট; এবং তোমরা যা করছো আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী। (সুরা আল্-বাকারাহ্: ২৬৫)
এই কাজ যেহেতু আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে শয়তান তা মোটেই সহ্য করতে পারেনা। সে দানকারীর মনে দান করার প্রাক্কালে সম্পদ হারাবার ভয় ও সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয় এভাবে:

الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَاءِ وَاللَّهُ يَعِدُكُمْ مَغْفِرَةً مِنْهُ وَفَضْلا وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

”শয়তান তোমাদেরকে অভাবের ভীতি প্রদর্শন করে এবং তোমাদেরকে অসৎ বিষয়ের আদেশ করে এবং আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিকট হতে ক্ষমা ও দয়ার অঙ্গীকার করেন ও আল্লাহ হচ্ছেন বিপুল দাতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা আল্-বাকারাহ্: ২৬৮)”।

শয়তানের পক্ষ থেকে এই ভীতি প্রদর্শনের প্ররোচনায় পড়ে আমরা বেশী দান করতে গিয়ে আমাদের হাত গুটিয়ে নিয়ে আসি, নাউযুবিল্লাহ। অনেকের মনে হতে থাকে, আর একটু কিছুদিন পরে দিলে আরও বেশী করে দান করতে পারব, এবং এই ভেবে দানের কাজটিকে ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিই। অথচ আমাদের সব সময় মনে রাখা দরকার এই দানের সুযোগ আর নাও আসতে পারে। আমি একটু পরেই কিংবা এক্ষুণি মারা যেতে পারি।
শয়তান আমাদের মনে এই বলেও সন্দেহ ঢুকিয়ে দেয় যে, যিনি বা যারা দানের টাকা সংগ্রহ করছেন, তারা তহবিল তসরুফ করতে পারেন, কিংবা সঠিক খাতে এই টাকা খরচ করবেননা। তাদের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসুলুল্লাহ (স.)কে উপদেশ দিয়েছেন এভাবে:
وَأَمَّا السَّائِلَ فَلا تَنْهَرْ
”কেউ কিছু চাইলে তাকে গলা ধাক্কা দিওনা।”অর্থাৎ, তোমার কাছে তা থাকলে দাও, আর না থাকলে তাদেরকে সুন্দর ভাষায় বিদায় কর। তাদের কাছে দোআ চাও এই বলে যে, আল্লাহ যেন তোমাকে তৌফিক দান করেন দান করার জন্য। কেননা, যিনি আমার কাছে ভাল কাজ করার জন্য (যেমন: মসজিদ তৈরী করা, ইয়াতিমের ভরণ-পোষণের জন্য, কিংবা ইসলামের দাওয়াতের কাজকে প্রসারের জন্য) আমার কাছ থেকে দান সংগ্রহ করছেন, তাকে বা তাদেরকে সন্দেহ করে যদি আমি শেষ পর্যন্ত দান থেকে বিরত থাকি, তবে বুঝতে হবে এটা শয়তানের ওয়াস্ওয়াসা ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা, তার বোঝা তার কাছে, আমার বোঝা আমার। আল্লাহ এই কথাটি কোরআনেও বলেছেন:
وَلا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى
”আখেরাতে কোন বোঝা বহনকারী নিজের ছাড়া অন্য কারো বোঝা বহন করবে না। (সুরা আয্-যুমার: ৭)”।
আর এ ব্যাপারে হাদীসে কুদসীতে আমরা পাই: আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন: ”আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, (হে আদম সন্তান) তুমি অন্যের জন্য খরচ কর, তাহলে আমি তোমার জন্য খরচ করব। অর্থাৎ তোমাকে দিতে থাকব।” (বুখারী, মুসলিম)। আবু দারদা (রা.) হতেও একইভাবে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন: ”প্রতিদিন সূর্যাস্তের সময় সূর্যের উভয় পাশে দুইজন ফেরেশতা উপস্থিত হন এবং উচ্চস্বরে দোআ করেন, যে দোআ মানুষ ও জ্বিন ছাড়া সকল সৃষ্টি জীবই শুনতে পায়। তাঁরা দোআ করেন: হে আল্লাহ! দানশীলকে পূর্ণ বিনিময় প্রদান করুন এবং কৃপণের মাল ধ্বংস করে দিন।” আর দান করার অভ্যাস যে একজনকে আল্লাহর দিকে অগ্রসর হবার পথ সুগম করে দেয় এবং পক্ষান্তরে কৃপণতা যে আল্লাহর অসন্তুষ্টির পথ সুগম করে দেয় তা আল্লাহ বর্ণনা করেছেন এভাবে:
فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى-وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى-فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى
فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَى- وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَى- وَأَمَّا مَنْ بَخِلَ وَاسْتَغْنَى
”সুতরাং কেউ দান করলে, তাকওয়া অবলম্বন করলে, এবং সকল উত্তম (সত্য) বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করলে, অচিরেই আমি তার জন্য সহজ (জান্নাতের) পথ সহজ করে দেব। পক্ষান্তরে কেউ কার্পণ্য করলে ও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, এবং সকল উত্তম (সত্য) বিষয়ের সত্যতা অস্বীকার করলে, অচিরেই তার জন্য আমি কঠোর পরিণামের পথ সুগম করে দেব। (সুরা আল-লাইল: ৫-৭)”।
এখানে দেখা যাচ্ছে, ঈমানের সাথে সাথে দানের অভ্যাস থাকা ও তাকওয়া অবলম্বন করা জান্নাতের পথ সুগম হবার জন্য শর্তস্বরূপ। এর আরও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আমরা রাসুলুল্লাহ (স.) এর দুটো হাদীস থেকে সুন্দর করে পাই। একবার আবু বকর সিদ্দিক (রা.) রাসুলুল্লাহ (স.)কে জিজ্ঞেস করেন: ”হে আল্লাহর রাসুল (স.)! আমাদের আমলসমূহ কি তাকদীরের লিখন অনুযায়ী হয়ে থাকে?” রাসুলুল্লাহ (স.) জবাবে বলেন: ”হ্যাঁ তাকদীরের লিখন অনুযায়ীই আমল হয়ে থাকে।” একথা শুনে আবু বকর (রা.) বললেন: হে আল্লাহর রাসুল (স.)! তাহলে আমলের প্রয়োজন কি?” রাসুলুল্লাহ (স.) তখন বললেন: ”প্রত্যেক ব্যক্তির উপর সেই আমল সহজ হবে যে জন্যে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।” (মুসনাদে আহমদ)।
একইভাবে আরও একটি হাদীস এখানে উল্লেখ না করলেই নয়। আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: ”আমরা বাকী’ গারকাদে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সাথে এক জানাযায় শরীক ছিলাম। তিনি (স.) বললেন: ”জেনে রেখো যে তোমাদের প্রত্যেকের স্থান জান্নাত অথবা জাহান্নামে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং লিপিবদ্ধ রয়েছে।” একথা শুনে জনগণ বললেন: ”হে আল্লাহর রাসুল (স.)! তাহলে আমরা তো সেই ভরসায় নিষ্ক্রীয় হয়ে থাকলেই পারি?” উত্তরে রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন: ”তোমরা আমল করে যাও, কারণ প্রত্যেক লোকের জন্য সেই আমলই সহজ করা হবে যে জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বলেই তিনি উপরের আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করেছেন। (বুখারী)। (সুরা আল-লাইল: ৫-১০ এর তাফসীর; তাফসীর ইবনে কাসীর থেকে উদ্বৃত)।
সুতরাং আমাদের সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, জীবনের কোন সময় কোন কারণে যেন আমরা আল্লাহর পথে দানের ব্যাপারে গাফেল না হই কিংবা দান করতে যেন আমাদের কখনো কষ্ট না লাগে। আর তা যদি ঘটে, তবে আমরা আমাদের ঈমানকে তাজা করতে হবে এবং দানের হাত বেশী করে প্রসারিত করতে হবে।

রমজান মাসে দানের ফজিলত
রমজান মাস তাকওয়া অবলম্বন ও অর্জনের মাস। রমজান মাস বেশী বেশী আল্লাহর ইবাদতের মাস। রমজান মাস গুনাহ মাফের মাস। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
”হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হয়েছে যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে করে তোমরা মুত্তাকী (খোদাভীরু) হতে পার। (সুরা আল-বাকারা: ১৮৩)”।
বান্দা এই একটি মাস প্রতিদিন সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহ যে সমস্ত জিনিস অন্যান্য মাসের এই সময়ে হালাল করেছেন (যেমন: যে কোন প্রকারের হালাল খাবার খাওয়া, পানীয় পান করা এবং স্ত্রী সহবাস করা) সেগুলো নিজের জন্য আল্লাহরই নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে হারাম করে নেয়ার নাম্ রোজা রাখা। যে বান্দা আল্লাহকে খুশী করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে কিছু হালাল কাজ বর্জন করতে পারল, তার জন্যতো হারাম কাজ বর্জন করা সহজ হয়ে যাবারই কথা। আর এই কাজটি পুরোপুরি সঠিকভাবে আঞ্জাম দিতে হলে বান্দার মনে সার্বক্ষণিক আল্লাহর ভয়, আল্লাহ সচেতনতা ও তার কৃত গুনাহ সম্পর্কে অনুতাপের অনুভূতি বিরাজমান থাকা একান্ত জরুরী, যাকে আমরা তাকওয়া বলি। এজন্য আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন: ”যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজান মাসে রোজা রাখবে, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ কওে দেয়া হবে।” (সহীহ বুখারী)। আর আমরা ইতিপূর্বেই আলোচনা করেছি যে, তাকওয়া অবলম্বন করে জান্নাতের পথে অগ্রসর হতে হলে দান করার অভ্যাস বাড়ানো কতটা জরুরী। আর এই দান করার সুযোগ যদি আমরা রোজার মাসে পেয়ে যাই, তবে আমাদের চাইতে আর সৌভাগ্যবান আর কে হতে পারে?
এই বিষয়টি রাসুলুল্লাহ (স.) উপলদ্ধি করতে পারতেন বিধায় রমজান মাসে দানের হক পুরোপুরি আদায় করতেন, অর্থাৎ, অত্যধিক দান করতেন। আব্দল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন: ”গোটা মানব জাতির মধ্যে নবী (স.) সবচেয়ে বড় দানশীল ছিলেন। রমজান মাসে জিবরাঈল (আ.) যে সময় তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন সে সময় তিনি সবচাইতে বেশী দানশীল হয়ে উঠতেন। জিবরাঈল (আ.) রমজান মাসে প্রতি রাতেই তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন। এভাবেই রমজান মাস অতিবাহিত হত। নবী (স.) এ সময় তার সামনে কোরআন শরীফ পড়ে শুনাতেন। যখন জিবরাঈল (আ.) তাঁর সাথে সাক্ষাত করতেন তখন তিনি গতিবান বায়ুর চাইতেও বেশী দানশীল হয়ে উঠতেন।” (সহীহ বুখারী)। অর্থাৎ, গতিবান বায়ু যত দ্রুত বেগে বয়ে যায়, রাসুলুল্লাহ (স.) তার চাইতেও বেশী বেগে দান করতেন।
এই মাসে যে কোন ভাল কাজ করলে তার সওয়াব হবে অন্য মাসের ফরযের সমান। আর একটি ফরয ইবাদত করলেতো কথাই নেই, এর সওয়াব হবে অন্য মাসের সত্তরটি ফরযের সমান সওয়াব। সুতরাং, এই মাসে যে বছরের যাকাত আদায় করে নিল, তার আমলনামায় বরাবর সত্তর গুণ ফরয আদায়ের সওয়াব লিখা হতে থাকবে। এই অবস্থার সাথে আমরা যদি সাধারণ সময়ের দানের ফজীলতের সাথে মিলাই তবে দেখব যে, সাধারণ মাসে এক পাউন্ড আল্লাহর পথে দান করলে যেখানে সাতশত থেকে আরও অনেক বেশী পাউন্ডের দানের (নফল ইবাদত) সওয়াব অর্জন হয়, সেই একই দান রমজান মাসে করা হলে সাতশতেরও অধিক পাউন্ড দানের সমপরিমাণ ফরযের সওয়াব অর্জন হবে। এজন্যই রাসুলুল্লাহ (স.) রমজান মাসে বেশী বেশী করে দান করতেন, যদিও তিনি সাধারণ অবস্থাতেই অত্যধিক দানশীল ছিলেন।
আলী (রা.) বর্ণনা করেছেন, ”জান্নাতে এমন কিছু প্রাসাদ আছে যেগুলো এত সুন্দও করে তৈরী করা হয়েছে যে সেগুলোর বাইরে থেকে ভিতরের সবকিছু দেখা যাবে এবং ভিতর থেকে বাইরের সবকিছু দেখা যাবে।” সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন: ”কাদের জন্য সে সুযোগ হে আল্লাহর রাসুল (স.)? তিনি (স.) বললেন: ”ঐসব লোকদের জন্য যারা মিষ্টভাষী, অন্যদেরকে আহার সরবরাহ করে, সর্বদা রোজা পালন করে এবং রাতের অন্ধকারে মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন দাঁড়িয়ে যান নামাজে।” (আহমাদ, বায়হাকী)।

কি রকম জিনিস ব্যয় করতে হবে
(১) পবিত্র জিনিস:
আমাদের সমাজে অনেকে ভুলবশত: ধারণা করেন যে, গুনাহ করার পর কিছু দান করলেই তা মাফ হয়ে যাবে, তা যেরকম উপার্জন থেকেই করা হোক না কেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আল্লাহ তা’য়ালা শুধুমাত্র পবিত্র ও হালাল জিনিস থেকে দান কবুল করেন। তিনি বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنْفِقُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنَ الأرْضِ وَلا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ وَلَسْتُمْ بِآخِذِيهِ إِلا أَنْ تُغْمِضُوا فِيهِ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ
”হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন করেছো এবং আমি যা তোমাদের জন্যে জমিন হতে উৎপন্ন করেছি, সেই পবিত্র বিষয় হতে খরচ কর এবং তা হতে এরূপ কলুষিত বস্তু ব্যয় করতে মনস্থ করোনা – যা তোমরা চোখ বুঁজেও নিতে চাওনা; এবং তোমরা জেনে রেখো যে, আল্লাহ মহা সম্পদশালী, প্রশংসিত। (সুরা আল্-বাকারাহ্: ২৬৭)” কোন ব্যক্তি হারামভাবে উপার্জিত অর্থ-সম্পদ থেকে দান করলে তা আল্লাহ কবুল করবেননা। এমনকি যে ব্যক্তি হারাম উপার্জিত আয় থেকে জীবন অতিবাহিত করে, তার ইবাদত তথা দোআ পর্যন্ত কবুল হবেনা। এরকম ব্যক্তির ব্যাপারে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) এর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (স.) আফসোস করেছেন এভাবে –
”ও মানুষেরা! আল্লাহ পবিত্র, এবং তিনি শুধুমাত্র পবিত্র জিনিসই গ্রহণ করেন। … তারপর নবী (স.) একজন মুসাফিরের কথা উল্লেখ করলেন যে অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিচ্ছে, যে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত ও যার শরীর ধুলামলিন, সে আকাশের দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, ও আমার রব! ও আমার রব! যখন তার খাবার হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পরিধানের কাপড় হারাম এবং সে বেড়ে উঠেছে হারামের মধ্যে, সে কিভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার দোআর জবাব পেতে পারে?” (আহমাদ, মুসলিম, তিরমিযী)।
(২) উত্তম জিনিস:
আল্লাহ বলেন:
وَمَا تُنْفِقُوا مِنْ خَيْرٍ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنْتُمْ لا تُظْلَمُونَ
”… এবং তোমরা উত্তম সম্পদ হতে যা ব্যয় করবে তা সম্পূর্ণভাবে পেয়ে যাবে, আর তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।” (সুরা আল্-বাকারাহ্: ২৭২)” যেমন ধরুন, আপনার কাছে দুটি গরু আছে, তার মধ্যে একটি আরেকটির চেয়ে উত্তম, এবং এর দুটিই কোরবানীর উপযুক্ত। এই দুটি গরুর মধ্যে যেটি উত্তম সেটিই আপনি কোরবানী দিবেন।
(৩) প্রিয় জিনিস:
আমরা সাধারণত: দান করতে গিয়ে যে জিনিসটি আমরা বেশী পছন্দ করি, তা নিজেদের জন্য রেখে দিয়ে কম পছন্দের জিনিস দান করার চেষ্টা করি। যেমন ধরুন, আমার কাছে দুটি দশ পাউন্ডের নোট আছে: একটি পুরোনো, কিছুটা ছেঁড়া, আর একটি নুতন। তখন আমরা নুতন নোটটি নিজের কাছে রেখে পুরোনো ছেঁড়া নোটটিই দান করি। কিংবা যেই জামাটি অনেক দিন পরার কারণে এখন আর আমার কাছে পরতে ভাল লাগছেনা, তা আমরা দান করি। অথচ আল্লাহ বলছেন:
لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ
”তোমরা নেকী অর্জন করতে পারোনা যতক্ষন না তোমাদের প্রিয় বস্তুগুলো (আল্লাহর পথে) ব্যয় করো। (সুরা আল্ ইমরান: ৯২)”
অর্থাৎ যে পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের পছন্দের জিনিস হতে আল্লাহর পথে ব্যয় কর সে পর্যন্ত তোমরা কখনই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, সমস্ত আনসারের মধ্যে হযরত আবু তালহা (রা.) ছিলেন সবচেয়ে সম্পদশালী। তিনি তাঁর সমস্ত ধন-সম্পত্তির মধ্যে ’বাইরুহা’ নামক বাগানটিকে সর্বাপেক্ষা বেশী পছন্দ করতেন। বাগানটি মসজিদে নববীর সামনে অবস্থিত ছিল। রাসুলুল্লাহ (স.) প্রায়ই এই বাগানে গমন করতেন এবং এর ক’পের নির্মল পানি পান করতেন। যখন উপরোক্ত আয়াতটি নাযিল হয় তখন আবু তালহা (রা.) রাসুলুল্লাহ (স.)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করেন: ”হে আল্লাহর রাসুল (স.)! আল্লাহ তা’আলা এরূপ কথা বলেছেন এবং ’বাইরুহা’ নামক বাগানটিই আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। এজন্যে আমি ওটি আল্লাহর পথে সাদকা করছি এ আশায় যে, তাঁর নিকট যে প্রতিদান রয়েছে তাই আমার জন্যে জমা থাকবে। সুতরাং আমি আপনাকে অধিকার দিয়ে দিলাম যেভাবে ভাল মনে করেন ওটা বন্টন করে দিন। রাসুলুল্লাহ (স.) খুশী হয়ে বলেন: ”বা: বা:! এটা খুবই উপকারী সম্পদ। এর দ্বারা জনগণের বেশ উপকার সাধিত হবে। আমার মত এই যে, তুমি এই সম্পদ তোমার আতœীয়-স্বজনের মধ্যে বন্টন করে দাও।” আবু তালহা বলেন: ”খুব ভাল। অত:পর তিনি ওটা তাঁর আতœীয়-স্বজন ও চাচাতো ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দেন। (মুসনাদে আহমদ, সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)।
অন্য একটি ঘটনাও উমর (রা.)কে ঘিরে। একবার উমর (রা.) রাসুলুল্লাহ (স.) এর খেদমতে হাজির হয়ে আরয করেন: ”হে আল্লাহর রাসুল (স.)! আমার সবচেয়ে প্রিয় ও উত্তম মাল ওটাই যা খাইবারে যেখানে আমার জমির একটি অংশ রয়েছে। আমি ওটা আল্লাহর পথে সাদকা করতে চাই। বলুন, কি করি?” তিনি (স.) বলেন: ”মূলকে (জমিকে) তোমার অধিকারে রাখ এবং ওর উৎপাদিত শস্য, ফল ইত্যাদি আল্লাহর পথে ওয়াক্ফ করে দাও।” উমর (রা.) তাই করলেন। (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)।
একইভাবে আমরা দেখি, আমাদের মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ.)কে আল্লাহ যখন কুরবানীর কথা স্বপ্নে দেখিয়েছিলেন, পরপর দুই রাত্রের স্বপ্নের জবাবে তিনি দুই দুই বার একশতটি করে উট কুরবানী দেবার পর আবারও আল্লাহ তাঁকে স্বপ্ন দেখালেন এটা বোঝানোর জন্যে যে, আল্লাহ ইবরাহীম (আ.) এর কাছ থেকে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় অর্থাৎ তাঁর আদরের সন্তান ইসমাঈল (আ.) এর কুরবানী চান। ইবরাহীম (আ.) তা বুঝে ইসমাঈল (আ.)কে কুরবানীর প্রাক্কালে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা কবুল করে খুশী হয়ে এই স্থলে একটি পশু কুরবানী ঘটিয়ে দেন। যার কারণে আমরা বিশ্বের সকল মুসলমান আজও প্রতি বছর ঈদুল আযহার সময় পশু কুরবানী দিই।

[চলবে]

Logo-orginal