, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

চট্টগ্রামে ড্রামে পাওয়া ইমনের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর

প্রকাশ: ২০১৭-০৯-২০ ০৯:১১:৫২ || আপডেট: ২০১৭-০৯-২০ ০৯:১৬:০৪

Spread the love
চট্টগ্রামে ড্রামে পাওয়া ইমনের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর
চট্টগ্রামে ড্রামে পাওয়া ইমনের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর

ছবি, আজাদী

নগরীর কোতয়ালী থানাধীন রানীর দিঘী থেকে উদ্ধারকৃত ড্রাম ভর্তি লাশের পরিচয় ইতোমধ্যে উদঘাটিত হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে লাশটি পশ্চিম রাউজান লুদি চৌধুরীর বাড়ির বাসিন্দা রেজাউল করিমের ছেলে ইমরানুল করিম ওরফে ইমন নামে এক যুবকের বলে শনাক্ত করেছে। খবর দৈনিক আজাদীর ।

ধরা পড়েছে মূল খুনী যুবলীগ ক্যাডার অমিত মুহুরী ও তার সহযোগী শিশির এবং তার বাসার নিরাপত্তারক্ষী শফিকুর রহমান শফি। খুনের কারণও জানা গেছে। তবে রহস্য উদঘাটন ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের আগেই লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে নগরীর চৈতন্যগলি বাইশ মহল্লা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল। আদালতে তার ছোট ভাই ইরফানুল করিমের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুনের উপস্থিতিতে লাশটি উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সিএমপির সহকারি কমিশনার (কোতয়ালী জোন) মো:জাহাঙ্গীর আলম আজাদীকে জানিয়েছেন, আমরা লাশটা উদ্ধারের সময় সেটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল। নাম পরিচয়

নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়েছিল। পরে তার নাম পরিচয় জানা যায়। তার ছোট ভাই ইরফানুল করিম আদালতে লাশটি উত্তোলন করে পারিবারিকভাবে দাফনের আবেদন করে। তার আবেদনের প্রে িতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট নগরীর এনায়েতবাজারে রাণীর দিঘী থেকে ড্রামভর্তি একটি প্রায় গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ সেটি বেওয়ারিশ হিসেবে চৈতন্যগলি বাইশ মহল্লা কবরস্থানে দাফন করেছিল। ১১ সেপ্টেম্বর ইমনের মরদেহ উত্তোলন করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের জন্য আদালতে আবেদন করেন তার ছোট ভাই ইরফানুল করিম। আদালতের নির্দেশে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন ও কোতয়ালী থানার ওসি (তদন্ত)জাহেদুল কবিরের উপস্থিতিতে নগরীর চৈতন্যগলির কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া মুন ইমনের মরদেহ তার ভাই ইরফানুল করিম রিমনের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ড এনায়েতবাজারের কাউন্সিলর সেলিমুল্লাহ বাচ্চু, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মো. হারুন অর রশিদ, রাউজান থেকে মরদেহ নিতে আসা ইমনের চাচাতো ভাই ইয়াছিন মাহমুদ, নাঈম, তানভিরসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত: লাশ উদ্ধারের ১৭ দিন পর মরদেহের পরিচয় এবং লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের বিবরণ পায় পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশ ১৬ আগস্ট রাতে অমিতের বন্ধু ইমাম হোসেন মজুমদার প্রকাশ শিশির (২৭) এবং বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী শফিকুর রহমান শফিকে (৪৬) আটক করে। এদের মধ্যে শিশির শুক্রবার (৩১ আগস্ট) আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছিল, অমিত মুহুরী ও তার স্ত্রী চৈতি মিলে নন্দনকাননে নিজের বাসায় ইমনকে (২৫) গত ৯ আগস্ট খুন করে। পরে শিশিরসহ কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় মরদেহ গুম করার চেষ্টা করে। অমিতের স্ত্রী চৈতিকে ইমন খারাপ চোখে দেখে, এমন সন্দেহ থেকেই এই খুন। ২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা সদর থানা এলাকায় একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে অমিতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে অমিতও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। দুজনের জবানবন্দিতে ওঠে আসা তথ্যানুযায়ী, এ হত্যাকান্ড, লাশ গুম করা, ড্রামের ভেতরে ঢুকানো থেকে শুরু করে গাড়িতে করে রানীর দিঘীতে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত সবগুলো পদক্ষেপের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম বলেছে অমিত। তদন্তের স্বার্থে কারও নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। অমিতের স্ত্রী এ খুনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে অমিতের বন্ধু শিশির তার জবানবন্দিতে বলেছিল। তবে পুলিশ কর্মকর্তাগণ এখনো তার সংশ্লিষ্টতা পাননি বলেই আজাদীকে জানিয়েছেন। সহকারি পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম এ প্রসঙ্গে আজাদীকে বলেন, আমরা এখনো পর্যন্ত অমিতের স্ত্রী চৈতির সম্পৃক্ততার কোন প্রমাণ পাইনি। তদন্ত এখনো চলছে।

Logo-orginal