, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

সাবের হোসেন চৌধুরীকে ভন্ড বললেন পাপন

প্রকাশ: ২০১৭-০৯-২১ ১৯:৩৫:৫৯ || আপডেট: ২০১৭-০৯-২১ ১৯:৩৫:৫৯

Spread the love
সাবের হোসেন চৌধুরীকে ভন্ড বললেন পাপন
সাবের হোসেন চৌধুরীকে ভন্ড বললেন পাপন

মোবাশ্বের হোসেনের দেওয়া লিগ্যাল নোটিশের পেছনে কে? সাবের হোসেন চৌধুরী কি কলকাঠি নাড়ছেন পেছন থেকে?’ এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের দৃঢ় জবাব, ‘অবশ্যই। উনি ছাড়া আর কে আছেন! আমার তো জানা আছে। এটা প্রথম থেকেই আমরা জানি। এটা উনিই করাচ্ছেন।’ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বিসিবিকে কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার এমন বিস্ফোরক কথাই বললেন বিসিবি সভাপতি। শুধু তাই নয়, দুজনকে ‘ভন্ড’ বলতেও ছাড়লেন না বিসিবি প্রধান। খবর পরিবর্তন ডটকমের ।

গত রোববার বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন বিসিবির কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। বর্তমান বোর্ড সভাপতি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও এর সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান এবং এর সচিব বরাবর পাঠানো নোটিসে বলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পর বিসিবির বর্তমান কমিটি অবৈধ হয়ে গেছে। তাই বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ও বিশেষ সভাসহ বিসিবির সব কার্যক্রম বন্ধ চেয়েছেন। এমনকি তিন দিনের মধ্যে নোটিসের জবাব না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ ছিল।

আর তাতেই খেপেছেন পাপন। ‘দুটো চিঠি এসেছে। একটা চিঠি এসেছে সাবের হোসেন এমপি, ওনার কাছ থেকে। আর একটা লিগ্যাল নোটিশ এসেছে।’ দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমনটা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি, ‘ওনারা যে বিষয়ে মামলাটা করেছেন বা যেটা চাচ্ছেন তা হলো ২০০৮ এর গঠনতন্ত্র, সেটাকে ওনারা ধরে নিচ্ছেন ভ্যালিড। সেটার আলোকে যেন নির্বাচনটা হয়। প্রথম কথা হচ্ছে ওনারা দুজনের কেউই ২০০৮ এর কাউন্সিলর না। ওই গঠনতন্ত্রে যদি নির্বাচন হয় তাহলে তারা নির্বাচনে আসছেন না। ওনাদের কিন্তু বোর্ডে আসার বা বোর্ড পরিচালনার কোনো ইচ্ছা নাই।’ বলেই প্রশ্ন রাখেন পাপন, ‘তাহলে কেন করছেন?’

উত্তরটাও দেন নিজেই, ‘গত চার বছরে অভাবনীয় একটা সাফল্য এসেছে বাংলাদেশ। ছেলেরা ভালো খেলেছে। এখানে আমি তো কোনো ক্রেডিট নিচ্ছি না বা আমাদের বোর্ডের কথা বলছি না আমি। তারা সত্যি ভালো খেলেছে। এগুলো তো সাফল্য। এখন ওনাদের তো আমার কিছু বলার নেই। আমি এসব ব্যাপারে কথাই বলতে চাই না। আপনাদের জানা উচিৎ ওনাদের উদ্দেশ্যটা কি। মূলের বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করেন। এরা যেটা চাচ্ছে তা খুব সাধারণ। এই অগ্রযাত্রাটাকে বন্ধ করতে। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দেশে ও বিদেশে ছোটো করা। এছাড়া কিচ্ছু না।’

তাহলে কি ভুল ব্যাখ্যা করছেন মোবাশ্বের হোসেন, সাবের হোসেনরা? পাপন বলে যান, ‘সাবের হোসেন চৌধুরী এর আগে আমাকে একটা চিঠি দিয়েছিলেন যে কেন এজিএম করি না। মোবাশ্বের সাহেবকে আমি টকশোতে কয়েকবার বলতে শুনেছি ‘এজিএম করে না, এজিএম করে না’। দেখলেন তো!’ আরো স্পষ্ট উচ্চারণে পাপন বলে দেন,  ‘এগুলো ভণ্ডামী। এগুলো আমার পছন্দ না। এই যে আমরা এজিএম ডাকলাম সাথে সাথে তারা সেটা বন্ধু করতে হুলস্থুল লাগিয়ে দিলেন। ওদের উদ্দেশ্য কিন্তু এসব কিছু না। উদ্দেশ্য অন্য। দেশের মানুষের জানা উচিৎ।’

বোর্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রসঙ্গটা আবার টানেন পাপন। বলেন, ‘২০১২ সালের যে সংশোধিত গঠনতন্ত্র সেটা অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এবং আমরা ওটার মাধ্যমেই নির্বাচন করেছি। সেটাতেও কিন্তু তারা অংশ নেননি। কিন্তু অত্যন্ত লক্ষ্যনীয় বিষয়, ওই গঠনতন্ত্রে কাউন্সিলর হয়েছেন কিন্তু সাবের হোসেন চৌধুরী। উনি যদি গঠনতন্ত্রই না মানেন, বেআইনী মনে করেন তাহলে কাউন্সিলর হলেন কেন? হয়েছেন। নির্বাচন করবেন বলে বিরাট আলোচনা উপস্থাপন করেছেন। শেষে গিয়ে বলেন, করবো না!’

তবে এসব চিঠি কিংবা আইনি নোটিশ যে তাদের চিন্তিত করছে না সেই ঘোষণাটাও আছে পাপনের কথায়, ‘আমাদের কথা খুব সিম্পল। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ক্রিকেটে। এটার দায়িত্ব এখনো পর্যন্ত আমাদের হাতে আছে। যতদিন পর্যন্ত দায়িত্বটা আমাদের হাতে থাকবে ততদিন পর্যন্ত সেই অগ্রযাত্রাটা আমরা ধরে রাখার চেষ্টা করবো। মাঝখানে কেউ যদি এটাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে তাহলে তাতে আমরা বিচলিত না। আমরা তো করে এসেছি, এসব দেখে এসেছি। আমরা বেআইনী কিছু করবো না।’

গত ২৬ জুলাই বিসিবির গঠনতন্ত্র সম্পর্কিত আপিলের রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে উল্লেখ ছিল, বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধন এনএসসি না থাকবে বিসিবির হাতেই। পাশাপাশি ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে দেওয়া হাইকোর্টের রায়কেও সঠিক বলেছেন। হাইকোর্টের সে রায়ে এনএসসির সংশোধিত গঠনতন্ত্রকে অবৈধই বলা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১ মার্চ গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছিল বিসিবি। তবে সেটাকে অনুমোদন দেয়নি এনএসসি। পড়ে কিছু সংশোধনী এনে ওই বছরের নভেম্বরে  সংশোধিত গঠনতন্ত্র তৈরি করে। এ কারণেই ডিসেম্বরে এনএসসির সংশোধিত এ গঠনতন্ত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন বিসিবির নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত ইউসুফ জামিল বাবু ও মোবাশ্বের হোসেন। ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি এনএসসির সংশোধিত গঠনতন্ত্র অবৈধ সে মামলার রায় দেয় হাইকোর্ট। পরের দিন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে এনএসসি ও বিসিবি। ২৫ জুলাই সে আপিলে রায় স্থগিত রাখা হয়।

Logo-orginal