, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

পরিবারের ৪৮ সদস্যকে কুরআনের হাফেজ বানিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন শাহজাহান হাওলাদারের

প্রকাশ: ২০১৭-১০-১২ ১০:৫৩:৩১ || আপডেট: ২০১৭-১০-১২ ১০:৫৩:৩১

Spread the love
পরিবারের ৪৮ সদস্যকে কুরআনের হাফেজ বানিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন শাহজাহান হাওলাদারের
পরিবারের ৪৮ সদস্যকে কুরআনের হাফেজ বানিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন শাহজাহান হাওলাদারের

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ইসলাম ডেস্কঃ   পটুয়াখালীর বাউফলের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদার (৬৮)। সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত তিনি।  বাউফল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন।
অথচ তিনি নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছেন ছয়টি হাফিজিয়া মাদরাসা।
পবিত্র কুরআনের হাফেজ বানিয়েছেন নিজের ছেলেমেয়েসহ পরিবারের অন্যদের।
তাদের বিয়েও দিয়েছেন হাফেজদের সঙ্গে। সব মিলিয়ে পরিবারের এখন ৪৮ জন হাফেজ।
বাড়ির ছোটরাও একই পথে হাঁটছেন। জানতে চাইলে শাহজাহান হাওলাদার বলেন, বাবা (নুর মোহাম্মদ হাওলাদার) ছিলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তিনি হজ করেছেন।
হজ পালনরত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন তিনি।
বাবা হাফেজদের খুব ভালোবাসতেন।

এ কারণেই তিনি লক্ষ্য স্থির করেন, পরিবারের সবাইকে হাফেজি পড়াবেন।
সেই সূত্র ধরে আত্মীয়তাও করেছেন হাফেজদের সঙ্গে।
সে লক্ষে নিজের ছয় ছেলে ও চার মেয়েকে হাফিজি পড়ান।
পরে ছেলে-মেয়েদের বিয়েও দিয়েছেন হাফেজদের সঙ্গে।
এরপর তার ইচ্ছা অনুযায়ী, তার ছেলে-মেয়েরাও তাদের সন্তানদের হাফিজি পড়িয়েছেন ও পড়াচ্ছেন।

শাহজাহান হাওলাদারের মেজো ছেলে হাফেজ মাওলানা নুর হোসেন বলেন, আমিসহ আমার বাবার ছয় ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে সৌদি আরব থাকেন।
বাকি সবাই ব্যবসার পাশাপাশি হাফিজি মাদরাসায় শিক্ষকতা ও মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করছি।
ছয় ছেলের ২৮ সন্তান এবং চার মেয়ের ২৩ সন্তান রয়েছে।
এর মধ্যে তাদের ২৭ জন পবিত্র কুরআনের হাফেজ হয়েছে।  বাকিরা হাফিজি পড়ছে।

শাহজাহান হাওলাদার জানান, এলাকায় ছয়টি মাদরাসা স্থাপন করেছি।
এর মধ্যে তিনটি ছেলেদের ও তিনটি মেয়েদের।
এছাড়া বরিশালের আলেকান্দা এলাকায় মেয়েদের জন্য নুর জাহান বেগম হাফিজিয়া মাদরাসা ও কামরাঙ্গীরচর ঢাকায় নুরানী হফিজিয়া মাদরাসাও স্থাপন করেছেন তিনি।

ছেলেদের মাদরাসা পরিচালনা করেন তার ছেলেরা ও মেয়েদের মাদরাসা পরিচালনা করেন তার মেয়ে ও ছেলের বৌরা।
হাওলাদার বলেন, আমার যা ছিল তার সব কিছু মাদরাসা স্থাপন ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় খরচ করি।
তারপরও মাদরাসার সব খরচ পোষাতে পারি না।
এজন্য সরকার যদি এতিম ছেলে-মেয়েদের জন্য সহায়তা করত তাহলে ভালো হতো।

১২ নং বাউফল সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুহা. জসিম উদ্দিন খান বলেন, শাহজাহান হাওলাদারের পরিবারের সবাই ধার্মিক ও বিনয়ী। পরিবারের সবাইকে হাফেজ বানিয়ে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

কুরআন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণী:

আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই তার সংরক্ষণকারী।’ -সূরা আল হিজর : ৮

হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি পড়ে মনে রাখে।
অতঃপর কোরআন যেটাকে হালাল বলেছে সেটা হালাল এবং কোরআন যেটাকে হারাম বলেছে, সেটা হিসেবে মেনে নেয়।
আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং ওই ব্যক্তি তার পরিবারভুক্ত এমন দশ ব্যক্তির ব্যাপারে সুপারিশ করবেন যাদের ওপর জাহান্নাম অবধারিত। -তিরমিজি

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, (কিয়ামতের দিন) হাফেজে কোরআনকে বলা হবে :পড় এবং আরোহণ কর! তেলাওয়াত কর যেভাবে দুনিয়াতে তেলাওয়াত করতে! নিশ্চয় সেটাই হবে তোমার স্থান, যেখানে তোমার পড়া থেমে যাবে। -তিরমিজি

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোরআন পড়ে এবং সে অনুযায়ী আমল করে, কিয়ামতের দিন তার পিতামাতার মাথায় এমন এক তাজ (মুকুট) পরিয়ে দেওয়া হবে, যার কিরণ পৃথিবীর সূর্যের উজ্জ্বলতা থেকে অধিক দীপ্তিময়।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যার মাঝে কোরআনের কোনো অংশ নেই সে পতিত ঘরের মতো।
আবু দাউদ ও তিরমিজি

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।’ -তিরমিজি।

উৎসঃ ফেইচ বুক।

Logo-orginal