, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর কাজে আর ফিরতে পারবেন না

প্রকাশ: ২০১৭-১০-২০ ১৩:১১:২৯ || আপডেট: ২০১৭-১০-২০ ১৩:১১:২৯

Spread the love

 বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর কাজে আর ফিরতে পারবেন না
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর কাজে আর ফিরতে পারবেন না
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তাঁর কাজে আর ফিরতে পারবেন না বলে মনে করেন আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন খসরু। লিড নিউজ বিবিসি বাংলার ।

মি: খসরু বলেন, “বিচারক যদি কখনও বিতর্কিত হন, দুর্নীতির অভিযোগ থাকে, ওনার সাথে সাথে পদত্যাগ করতে হয়। অন্যান্য বিচারপতিদের কাছে মাননীয় বিচারপতি এস কে সিনহা বলেছেন উনি রিজাইন করবেন। রিজাইন করার পরিবর্তে উনি একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে চলে গেলেন … আবার এসে চেয়ারে বসতে চাচ্ছেন। অন্য বিচারপতিরা বলেছেন, আমরা ওনার সাথে আর বসবো না। ওনার আসার আর সুযোগ নাই। আমার মনে হয় এটা সুদূরপরাহত”।

বৃহস্পতিবার রাতে চ্যানেল আই টেলিভিশনে প্রচারিত ‘বিবিসি প্রবাহ’ অনুষ্ঠানে মি: খসরু এসব কথা বলেন।
তবে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে এক লিখিত বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, বিচার বিভাগ যাতে ‘কলুষিত’ না হয় সেজন্য তিনি ‘সাময়িকভাবে’ দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির’ গুরুতর অভিযোগ তোলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
প্রবাহ টিভি অনুষ্ঠানে মি: খসরু দাবি করেন মি: সিনহার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোটা অংকের টাকা লেনদেন হয়েছে।
মি: খসরু বলেন, “কোটি কোটি, চার কোটি-পাঁচ কোটি পে-অর্ডার … ব্যাংকে পাঁচ কোটি দশ কোটি টাকার লেনদেন – এটা কোত্থেকে হলো?”
প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর গত ১৪ই অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্বলিত কিছু তথ্য রয়েছে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের কাছে, যা তিনি হস্তান্তর করেছেন আপিল বিভাগের অন্য পাঁচজন বিচারপতির কাছে।

সুপ্রিম কোর্টের দেয়া বিবৃতির পর উত্থাপিত অভিযোগগুলো সম্পর্কে মি: সিনহার পক্ষ থেকে এখনও কোন বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
কিন্তু প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যদি দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হলো না কেন? – বিবিসির এমন প্রশ্নে মি: খসরু বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সময় চলে যায় নি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অনেকেই মনে করে, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী রায়ের মাধ্যমে বাতিল করে দেওয়ার কারণে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ওপর সরকার অসন্তুষ্ট ছিল।
ঐ রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে দলের অনেকেই প্রধান বিচারপতির কড়া সমালোচনা করেছেন।
বিরোধী অনেক রাজৈনীতিক এমন মন্তব্যও করেছেন যে সরকারের চাপে প্রধান বিচারপতি ছুটিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
কিন্তু মি: খসরু বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের সাথে মি: সিনহার ছুটির কোন সম্পর্ক নেই। কারণ ষোড়শ সংশোধনীর রায় প্রধান বিচারপতি একা দেননি।

অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি নিজের শারীরিক সুস্থতা সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটির উল্লেখ করে মি: খসরু বলেন, “২রা অক্টোবর আপনি বললেন অসুস্থ লিখিতভাবে, এখন মুখে বলতেছেন সুস্থ। মানুষ কোনটাকে বিশ্বাস করবে?”
প্রধান বিচারপতিকে কেন্দ্র করে ঘটনাগুলো যেভাবে ঘটেছে সেটি নিয়ে এরই মধ্যে অনেক প্রশ্ন উঠেছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, “প্রেসিডেন্ট এটা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে পাঠাতে পারতেন। সেটাতেও সুপ্রিম কোর্টের জাজেরাই থাকতেন। কাউন্সিল হইলেই চিফ জাস্টিস কিন্তু ডিসপিউটেড হয়ে যেতেন। তিনি আর কোর্টে বসতে পারতেন না। এটুকু করলেই তো হয়ে যেতো।”

Logo-orginal