, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে নিয়োগে ক্ষোভ ও মানববদ্ধন

প্রকাশ: ২০১৭-১১-২০ ১৪:২০:০০ || আপডেট: ২০১৭-১১-২০ ১৪:২০:০০

Spread the love

চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে নিয়োগে ক্ষোভ ও মানববদ্ধন
চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে নিয়োগে ক্ষোভ ও মানববদ্ধন
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে নৌ পরিবহন মন্ত্রীর জেলা মাদারীপুরের প্রার্থীদের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ এনে মানববন্ধন সমাবেশ করেছে বন্দর পোষ্য ও স্থানীয় কোটা অধিকার রক্ষা ঐক্য পরিষদ। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন নৌ মন্ত্রী শাজাহান খান।

তিনি বলেছেন, ‘মাদারীপুরের যে ছয়–সাতজন নিয়োগ পেয়েছে, তারা ভালো ফল করে এসেছে, মেধার ভিত্তিতেই চাকরি পেয়েছে।’ অপরদিকে গতকাল সংসদ অধিবেশনে চট্টগ্রামের দুই সাংসদ জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল ও জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু লস্কর নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

গতকাল বিকেলে বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সি অডিটোরিয়ামের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা নৌ পরিবহন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মাদারীপুর জেলার চাকরিপ্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়ার অভিযোগ তুলেন। তারা বলেন, ‘বন্দরে ৮৫ জন লস্কর নিয়োগ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ , তারমধ্যে অধিকাংশই মাদারীপুর জেলার, এটা মেনে নেয়ার মতো নয়। মন্ত্রী মহোদয় নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অতীতেও মাদারীপুর জেলাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। আমরা যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া আমরা বন্দরে নিয়োগে স্থানীয় কোটা রাখার দাবি জানাচ্ছি।’ মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন. ‘লস্করের মতো চতুর্থ শ্রেণীর একটি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৭–৮ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হয়েছে।’ এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের পরীক্ষা ঢাকার পরিবর্তে চট্টগ্রামে নিতে হবে বলেও দাবি জানান তারা। মানবন্ধন সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের কায়সার হামিদ, ইবনে মবিন, কবীর আহম্মেদ, আল মামুন, মো. নরুদ্দীনসহ প্রমুখ।

এদিকে গতকাল সকালে বন্দরের সাউথ কন্টেনার ইয়ার্ডের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বন্দরে লস্কর নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজ জেলা মাদারীপুরের চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘মাদারীপুর জেলার ছয়–সাতজন চাকরি পেয়েছে। তারা পরীক্ষা দিয়ে পাস করে চাকরি পেয়েছে। নিজ মেধায় সুযোগ পেয়েছে।’ ৮৫ জন লস্করের মধ্যে পোষ্য কৌটাসহ চট্টগ্রামের ৪৫ জনের চাকরি হয়েছে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন। অপরদিকে গতকাল বিকেলে বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সি অডিটোরিয়ামে বন্দর কর্মচারী পরিষদের (সিবিএ) অভিষেক অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম খালিদ ইকবাল বলেন, ‘বন্দরে নিয়োগ পাওয়া ৮৫ জন লস্করের মধ্যে ২৮ জনই চট্টগ্রামের। তারমধ্যে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে ২৬ জন। বাকি দুইজনের নিয়োগ হয়েছে পার্বত্য জেলা থেকে। এছাড়া দেশের ২৬টি জেলা থেকে লস্কর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখানে কোনো ধরণের নিয়ম ভাঙ্গা হয়নি।’

এদিকে গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে জাসদ নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর চট্টগ্রামের আত্মার মতো। এই বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রামবাসী নানাভাবে যুক্ত। অথচ এই বন্দরের ছোট পদ লস্করে ৯২ জনের মধ্যে ৯০ জনই অন্য অঞ্চলের, চট্টগ্রামের মাত্র দুজন। এখন চট্টগ্রামে প্রতিবাদ সভা হচ্ছে। এটা নিয়ে আরও বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হবে। আমি গৃহকর বাড়ানো নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের মতো বলব, এটাই কি সময় হলো চট্টগ্রামের দুইজনকে চাকরি দেবার? আপনি এটা সারা বাংলাদেশকে ভাগ করে দেন চট্টগ্রামবাসী কিছু মনে করবে না।’

জাতীয় পার্টির নেতা জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু সংসদে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের যত নিয়োগ হয় সব পরীক্ষা ঢাকায় হয়, এটার কারণটা কী বুঝতে পারছি না? বন্দরের অন্য ডিপার্টমেন্টেরও পরীক্ষা হয় ঢাকায়। লোকাল এমপি হিসেবে লোকজন আমাদের কাছে আসে আমরা সুপারিশ করি, কিন্তু মেরিটেও তারা দিতে পারে না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। অথচ চট্টগ্রামের মানুষ এই বন্দরকে সচল রেখেছে। তাদের এখানে চাকরি পাওয়ার জন্মগত দাবি আছে। তাদের অধিকার আছে মেরিট অনুযায়ী চাকরি পাওয়ার। আর এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের ও মন্ত্রণালয়ের।’

এদিকে লস্কর নিয়োগে নিয়ম ভাঙ্গার অভিযোগ এনে আজ সকাল ১০ টায় চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে ‘আমরা চট্টগ্রামবাসী’ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন সমাবেশের ডাক দিয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়োগ পরীক্ষা কেন ঢাকায় হয়েছে– এ ব্যাপারে বন্দর চেয়ারম্যান এম খালিদ ইকবাল বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষা এখানে হতে পারত। সরকারিভাবে বিধান আছে, আইবিএর মাধ্যমে পরীক্ষা হয় স্বচ্ছতার জন্য। সেই জন্যই এই ব্যবস্থা।’ বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার জন্য স্থান না পাওয়ার কারণও উলেহ্মখ করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামেই নিতে পারলে ভাল হত। কিন্তু ৭৪ হাজার প্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছিলাম। এখানে কারও পক্ষে এই বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। সুত্রঃ আজাদী।

Logo-orginal