, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের পদক্ষেপ” মধ্যপ্রাচ্যকে আগুনের গোলায় ঠেলে দেবে” এরদোগানের হুশিয়ারি

প্রকাশ: ২০১৭-১২-০৭ ১৯:২৪:৩৩ || আপডেট: ২০১৭-১২-০৭ ১৯:২৪:৩৩

Spread the love

জেরুজালেম নিয়ে ট্রাম্পের পদক্ষেপ” মধ্যপ্রাচ্যকে আগুনের গোলায় ঠেলে দেবে” এরদোগানের হুশিয়ারি
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, নিউজ ডেস্কঃ জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যকে আগুনের গোলায় মধ্যে ঠেলে দেবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার গ্রিস সফরের উদ্দেশ্যে রাজধানী আঙ্কারা ত্যাগ করার পূর্বে এসেবোগা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদেরকে তিনি এই কথা বলেন।

ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘হে ট্রাম্প, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আপনি কী করতে চাচ্ছেন?’

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের পদক্ষেপ এই অঞ্চলকে একটি আগুনের গোলার মধ্যে নিক্ষেপ করবে।’

গত কয়েক দশকের মার্কিন নীতির প্রথা ভঙ্গ করে বুধবার হোয়াইট হাউজের কূটনৈতিক অভ্যর্থনা কক্ষে দেয়া ভাষণে জেরুজালেমকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাসকে জেরুজালেমে স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথাও জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের ঘোষণায় ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠতে পারে।

বুশ ও ক্লিনটন প্রশাসনের সাবেক উপদেষ্টা এবং উড্রো উইলসন সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যারন ডেবিড মিলার বলেন, ‘জেরুজালেমের স্থিতাবস্থায় কোনো আঘাত করলে এটির জ্বলে ওঠার প্রবণতা রয়েছে।’

এরদোগান বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের উচিৎ শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, আগুন জ্বালিয়ে দেয়া নয়।’

জেরুজালেমকে খ্রিস্টানদের জন্যও একটি পবিত্র স্থান উল্লেখ করে তিনি বিষয়টি নিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান।

এর আগে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন এরদোগান। তিনি জেরুজিালেমকে মুসলিমদের জন্য একটি রেড লাইন বলে তিনি সর্তক করে দিয়েছিলেন।

এদিকে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নিয়ে করণীয় নির্ধারণে আগামী ১৩ ডিসেম্বর ওআইসির জরুরি বৈঠক ডেকেছে তুরস্ক।

তুর্কি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বুধবার বলেছেন, জেরুজালেম ইস্যুতে স্পর্শকাতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আগামী ১৩ ডিসেম্বর ওআইসি’র সদস্য দেশগুলোর নেতারা ইস্তাম্বুলে বৈঠকে বসবেন। মুসলিম দেশগুলো জেরুজালেমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপের ঘোষণা দিতে পারেন বলে জানা গেছে।

ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণায় তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁও বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে না।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেছেন, তার সরকার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছে না। এটি মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি আলোচনার জন্য সহায়ক নয়।

জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তার মুখপাত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন, দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিন-ইসরাইল বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ভঙ্গ করে ট্রাম্প যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা তিনি সমর্থন করেন না। ‘পৃথক দুই রাষ্ট্র’-নীতির মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান বলে তিনি মনে করেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান কূটনীতিক ফিদেরিকা মোগেরিনিও ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ট্রাম্পের ঘোষণার সমালোচনা করেছেন। তিনি এই বলে সতর্ক করেছেন যে জেরুজালেমের কী হবে, তা কেবল ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে আমি এখন থেকেই এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আমার অবস্থানের কথা জানিয়ে যাব।’সূত্র: আল জাজিরা/আরটিএনএন ।

Logo-orginal