, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

সিনহাকে জুডিশিয়াল ক্যু করে বিদায় করা হয়েছে

প্রকাশ: ২০১৭-১২-২৫ ২২:৩৭:৪৯ || আপডেট: ২০১৭-১২-২৫ ২২:৩৭:৪৯

Spread the love

সিনহাকে জুডিশিয়াল ক্যু করে বিদায় করা হয়েছে
ছবি-বিডি নিউজ: নিউজ ডেস্কঃ সংবিধানের ১৬ তম সংশোধনী বাতিল করে আপিলের রায় কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির বিরুদ্ধে নয়। কাজেই এ রায় নিয়ে সরকারের যড়যন্ত্র করা মোটেও উচিত নয়। সরকার রিভিউ পিটিশন দাখিল করে পুরো রায় বাতিলের চক্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি।

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। ষোড়শ সংশোধনীর মামলার রায় দেওয়ার কারনেই প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে জুডিশিয়াল ক্যু করে বিদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সমিতির সভাপতি বলেন, আপিল বিভাগের রায় প্রদানকারী সাতজন বিচারপতির মধ্যে পাচঁজন কর্মরত আছেন। বিচারপতিগণ তাদের পূর্ববর্তী রায়ের আলোকে এই রিভিউ পিটিশনটি দাখিল করবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

বার সভাপতি বলেন, সরকার নিজেদের স্বার্থে বিচার বিভাগকে পরিচালিত করতে চান। তারা যেভাবে চান সেই ভাবেই আদালতকে রায় দিতে হবে, যদি তা না করা হয়। বিচারপতি সিনহার মত তাদেরকেও একই পরিণতি বরণ করতে হবে। এভাবেই তারা অন্যান্য বিচারপতিদের তারা ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ কর্মকান্ডের মাধ্যমে সরকার খালেদা জিয়ার মামলার রায়কেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলেও মনে করেন তিনি।

জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচার বিভাগ হচ্ছে সংবিধানের অভিভাবক। এটা স্বীকৃত যে, আইন বিভাগ আইন প্রনয়ন করবেন এবং সে আইন সংবিধান মোতাবেক হয়েছে কিনা এবং সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক কিনা এবং কোন দলের বা ব্যক্তির স্বার্থে কিনা ? তা দেখার দায়িত্ব বিচার বিভাগের । বিচার বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দিয়ে সে দায়িত্বই পালন করেছেন । অথচ এই রায়ের পরে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে অহেতুক এবং অসৌজন্য মূলক ও আদালতের প্রতি অশ্রদ্ধামূলক বক্তব্য রেখেছেন, যা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত ।

তিনি বলেন, অতীতে বহুবার বে-আইনী সংশোধনীর বিরুদ্ধে অনেক সিদ্ধান্ত দেশের এই সর্বোচ্চ আদালত দিয়েছেন, কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এবং আদেশের বিরুদ্ধে সরকার এইভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে কোনো রিভিউ আবেদন করেছেন বলে আমাদের জানা নাই। তিনি আরও বলেন, একটি রায়ের মধ্যে সরকারের মতে দু-একটি পর‌্যবেক্ষণ অপ্রসাঙ্গিক থাকতেই পারে । কিন্তু বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল মতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের জন্য ৯৪টি যুক্তি দেখালেন । আমাদের কাছে মনে হচ্ছে এই সরকার বিচার বিভাগকে পুর্ন নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমেই সুকৌশলে নিতে চাচ্ছেন।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে একের পর এক ভিওিহীন অভিযোগ সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে বিতর্কিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে তারা। সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, তাই তারা সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি যে ৭জন বিচারপতি এই রায় দিয়েছেন । তার মধ্যে ৫জন এখনো আপীল বিভাগে দায়িত্বে আছেন । তারা তাদের পরপর্তী রায়ের আলোকে এই পুনঃ বিবেচনার আবেদনটি বাতিল করবেন । তা না হলে ভবিষ্যতে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার জন্য কর্মসূচী দেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সরকার রিভিউয়ের মাধ্যমে প্রমান করেছে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে জোড় করে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। এবং পদত্যাগ করানো হয়েছে। তিনি বলেন বিচারপতিদের পদ সাংবিধানিক। এখানো কারো কোনো পধ খালি হলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে নিয়োগ দেয়া। অথচ বেশ কিছুদিন হয়ে গেলো প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়োগ দিচ্ছে না।

শোড়ষ সংশোধনীর ‍বিষয়ে রিভিউ আবেদন করে সরকার যড়ষন্ত্র করেছে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সভাপতি এবিএম অলিউর রহমান খান, আইনজীবী রফিকুল ইসলাম মেহেদী, সাবেক সদস্য আবেদ রেজা, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিয়ন, একেএম এহসানুর রহমান, এএইচ এম কামরুজ্জামান মামুন প্রমুখ। সুত্রঃ বিডি২৪লাইভ।

Logo-orginal