, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Avatar 1prewettmary1987

মরহুম হাফেজ আব্দুল হাই পীর (খুটাখালী) সাহেবের জীবনী

প্রকাশ: ২০১৮-০১-২২ ২০:১২:২৭ || আপডেট: ২০১৮-০১-২৩ ০৭:০৭:৩৮

Spread the love

মরহুম হাফেজ আব্দুল হাই পীর (খুটাখালী) সাহেব

মোঃ জাহেদুল ইসলাম, আরটিএমনিউজ২৪ডটকম: আলহাজ্ব হাফেজ আব্দুল হাই পীর (খুটাখালী) সাহেব ১৯৪৮ সালের ২২ জানুয়ারি (জাতীয় পরিচয় পত্র অনুসারে) সাতকানিয়া উপজেলার গারাংগিয়া রঙিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আব্বাজান মরহুম আলহাজ্ব মাওলানা হাফেজ আবদুল জব্বার (রহঃ) এবং আম্মাজান মরহুমা হাফেজা খাতুন সাহেবা (রহঃ) পরিবারের ৬ পুত্র ১ কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন ৫ম পুত্র। পরিবারের সবাই ছিলেন সৎ ও ধার্মিক।

জম্মসূত্রে তিনি চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার গারাংগিয়া রঙিপাড়ার বাসিন্দা হলেও ১৯৭২ সালের দিকে তিনি সপরিবারে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে দারুল হুফফাজ হাফেজখানা-এতিমখানা-মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে সুদীর্ঘকাল দ্বীনের প্রচার-প্রসারের পর স্থায়ীভাবে ৪৫ বছর ধরে গর্জনতলী গ্রামে বসবাস করেন। তারই প্রতিষ্ঠানের নামানুসারে ইউনিয়নের হাফেজখানা সড়ক নামকরণ করা হয়। মহাসড়কের লাগোয়া সড়কের সম্মুখে করা হয়েছে সুদৃশ্য হাফেজখানা গেইট।

ছাত্র জীবনে আবদুল হাই কৃতিত্বের সাথে কোরআন হাফেজ-দাখিলে উত্তীর্ণ হয়ে গারাংগিয়ার দরবার শরিফের প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা বড় হুজুর ও ছোট হুজুর (রহঃ) এর ছোহবত লাভ করেন। খুটাখালীতে আসার পূর্বে তিনি একটানা ১২ বছর চকরিয়া উপজেলার কাকারায় হাফেজখানা-এতিমখানা ও মসজিদের দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে তিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সৎপথ প্রদর্শন করে অসংখ্য হিন্দুকে নওমুসলিম করেন।

গারাংগিয়ার বড় হুজুর কেবলার নির্দেশে তিনি খুটাখালীতে দারুল হুফফাজ হাফেজখানা-এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন এবং খুটাখালী তমিজিয়া ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার গর্ভনিং বডির সাবেক সহ-সভাপতিসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে হাফেজখানার ছাত্র সংখ্যা প্রায় ২ শতাধিক।

এছাড়াও তিনি র্দীঘ সময় পর্যন্ত গারাংগিয়ার বড় হুজুর পীর মুর্শিদের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে থাকেন। পীর মুর্শিদের মনোন্নয়নক্রমে তিনি গারাংগিয়া দরবারের খলিফা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

বলা বাহুল্য যে, বড় হুজুর কেবলা (রহঃ) এর সাথে হাফেজ আবদুল হাই (রহঃ) এর পারিবারিক আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকলেও রক্তের কোন সম্পর্ক ছিলনা। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেড় শতাধিক মসজিদ, হাফেজখানা-এতিমখানা ও ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

মরহুম পীর সাহেব কেবলা সর্বশেষ ২০১৬ সালে হজ্ব পালন করে শারিরীক অসুস্থতার কারণে আর যেতে পারেনি। জীবনে ১৬ বার হজ্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া বার্মা, ভারত সৌদি আরবসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সফর করেন।

পীর সাহেব কেবলা সকলকে কাঁদিয়ে মাহবুুবের ডাকে সাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ ভক্ত অনুরক্তকে সুখ সাগরে ভাসিয়ে এতিম, অসহায়, দুস্থ মানবতার সেবক ও খুটাখালীর পরম শ্রদ্ধেয় পীর মুর্শিদে বরহক আলহাজ্ব হাফেজ আবদুল হাই ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ইং সোমবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ইন্তেকালের সময় তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী আলহাজ্বা জয়নাব বেগম, ৫ পুত্র যথাক্রমে আলহাজ্ব মাওলানা আনোয়ার হোছাইন, আলহাজ্ব মাওলানা নুর হোছাইন, আলহাজ্ব মো: নুমান, আলহাজ্ব মো: ইসমাইল, আলহাজ্ব মো: দিদারুল ইসলাম, ২ কন্যা ফাতেমা বেগম ও আলহাজ্বা মাহবুবা আল মুবাশারা জেমি (বর্তমানে চট্টগ্রামের সলিমা সিরাজ মহিলা মাদরাসায় কামিলে অধ্যয়নরত)সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান।

জানাজা:

চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হুজুরের নিকটাত্বীয় আলহাজ এসএম মনজুর জানিয়েছেন, তারা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল ৫ টায় খুটাখালী কিশালয় উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে হুজুরের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

Logo-orginal