, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

Avatar 1prewettmary1987

ইসরাইলি সেনাকে চড়, সেই কিশোরীর বিচার শুরু

প্রকাশ: ২০১৮-০২-১৪ ১১:৪৬:৪৭ || আপডেট: ২০১৮-০২-১৪ ১১:৫০:৪৩

Spread the love

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম: বিশ্বজুড়ে আলোচিত দখলদার ইসরাইলি দুই সেনার গালে চড় মারা ফিলিস্তিনি সেই সাহসী কিশোরী আদ তামিমির ও তার মায়ের রুদ্ধদ্বার বিচার শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে তাদের বিচার শুরু হলে আদালতে গণমাধ্যমের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।খবর আল জাজিরার

দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক এই কিশোরীকে নিরাপত্তা বাহিনীকে অপমান এবং সহিংসতার উসকানি দেওয়াসহ ১২টি অভিযোগের মুখোমখি হতে হচ্ছে।

দোষী সাব্যস্ত হলে তার দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড হতে পারে। ফিলিস্তিনিরা তামিমির দুঃসাহসকে ইসরাইলের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ দেখছে।

ইসরাইলিদের ভাষ্য, জনপ্রিয়তা পেতে তামিমি সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে।

তামিমি তার পরিবারের সঙ্গে অধিকৃত পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিন গ্রাম নবি সালেহতে বসবাস করেন। গত বছর ১৫ ডিসেম্বর মায়ের সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার পথে ইসরাইলি সেনারা তাদের পথরোধ করেন।

দুপক্ষের বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তামিমি এক সেনাকে প্রথমে লাথি মারেন এবং পরে গালে সপাটে চড় মেরে বসেন। দ্বিতীয় আরেক সেনাকেও সজোরে একাধিকবার ঘুষি মারেন তিনি।

তার মা নারিমান তামিমি পুরো ঘটনাটি ভিডিও করেন এবং ফেসবুক পাতায় পোস্ট করেন। সঙ্গে সঙ্গেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এ ঘটনার কয়েক দিন পর এক রাতে অভিযান চালিয়ে তামিমিকে গ্রেপ্তার করেন ইসরাইলি সেনারা। তার মা এবং ভিডিওতে থাকা তার এক কাজিনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

ইসরাইলের অফার ডিটেনশন সেন্টারে আদালত বসলে মামলার শুনানির সময় কেবল তাদের পরিবারের এক সদস্যকে ঢুকতে দেয়া হয়।

তামিমির আইনজীবী গাবি লাসকি আদালতের কাছে উন্মুক্ত বিচারের আবেদন করলেও বিচারক সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেন।

ইসরাইলি সেনাকে ঘুষি মেরে বীরের মর্যাদায় কিশোরী

এক ইসরাইলি সেনার গালে ঘুষি মেরে বীরের মর্যাদায় ভূষিত হয়েছেন ফিলিস্তিনি কিশোরী আহেদ তামিমি। ইসরাইলি দুই সেনাকে ফিলিস্তিনি কিশোরীর রুখে দাঁড়ানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরই ফিলিস্তিনের নবী সালেহ গ্রামের ১৬ বছর বয়সী এই কিশোরী নতুন প্রজন্মের এক বীরপ্রতীক হিসেবে ফিলিস্তিনের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা যায়, ফিলিস্তিনি কিশোরী আহেদ তামিমি তাদের বাড়ির প্রবেশ পাথের কাছে দাঁড়ানো দুই ইসরাইলি সেনার দিকে হেঁটে এগিয়ে যান কোকড়ানো ও সোনালি চুলের এই কিশোরী। সেনাদের কাছাকাছি গিয়ে নিজেদের বাড়ির আঙিনা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলেন তিনি। কিন্তু ওই দুই সেনা তার কথায় কোনো কর্ণপাত না করে দাঁড়িয়ে থাকে। এরপর ওই দুই সেনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু সেনারা কোনো তোয়াক্কা না করায় এক সেনার গালে সজোরে থাপ্পড় বসিয়ে দেন তিনি।

এনবিসি নিউজ জানায়, গত শুক্রবার জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করার প্রতিবাদে পশ্চিম তীরে বিক্ষোভ করছিল ফিলিস্তিনিরা। এ সময় ফিলিস্তিনের বিখ্যাত কিশোরী অ্যাক্টিভিস্ট আহেদ তামিমির পরিবারের এক সদস্যকে মাথায় গুলি করে ইসরাইলি সেনারা। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে কিশোরী আহেদ তামিমি।এই দৃশ্য কেউ একজন মোবাইল ফোনের ক্যামেরা ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি। এই ভিডিওকে ঘিরে ফিলিস্তিনি কিশোরীর বিরুদ্ধে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে উসকানি দেয় ইহুদিবাদী সংবাদ মাধ্যমগুলো।

মঙ্গলবার ভোরে ওই ফিলিস্তিনি কিশোরীর বাড়িতে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে ইসরাইলি সেনারা মাসহ ওই কিশোরী আহেদ এবং তার ২১ বছর বয়সী চাচাতো বোন নুর নাজি আল তামিমিকে গ্রেফতার করে। আহেদের ব্যক্তিগত ল্যাপটপ, মোবাইল এবং বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক জিনিস জব্দ করা হয়। অভিযানের সময় তামিমির পরিবারের লোকজনকে সেনারা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

এ ঘটনায় ফিলিস্তিনিরা সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ও নিন্দা জানান। তাদের কথা, দখলদার ইসরাইলি সেনাদের প্রতিরোধ করার অধিকার রয়েছে ফিলিস্তিনিদের। এদিকে দুই সেনার ওপর হামলার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের সাজাও ঘোষণা করা হয়েছে। ইসরাইলের শিক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেন্নেত মঙ্গলবার আর্মি রেডিওতে এক ঘোষণায় বলেন, ‘অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডে জড়িত দুই ফিলিস্তিনি কিশোরীকে জেলেই পচে মরতে হবে।’

Logo-orginal