, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Avatar 1prewettmary1987

‘খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়’- জামায়াত

প্রকাশ: ২০১৮-০২-০৮ ১৮:০৭:৫১ || আপডেট: ২০১৮-০২-০৮ ১৮:০৮:৩৪

Spread the love

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কথিত জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্টের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করে তাকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্রের নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

আজ (বৃহস্পতিবার) জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এই প্রতিবাদ জানান। দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের এম. আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেসবার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “কথিত জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ডদেয়া হয়েছে তা সরকারী প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আদালতকে ব্যবহার করার যে অপকৌশল গ্রহণ করেছে এ রায় তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। এ রায় জনগণের নিকট গ্রহণযোগ্য নয়।”

প্রেসবার্তায় আরও বলা হয়, “সরকার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী ভোটার বিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশের জনগণকে সরকার মারাত্মকভাবে ভয় পায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাতে জনমতের প্রতিফলন ঘটতে না পারে সে জন্য সরকার বিরোধীদলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জাতীয় নির্বাচনের বাইরে রাখার অপকৌশল গ্রহণ করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রের প্রথম শিকার জামায়াত নেতৃবৃন্দ। প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে সরকার জামায়াত নেতৃবৃন্দকে একে একে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। দেশবাসী ভুলে যায়নি বিচার চলাকালে সরকারের মন্ত্রী এমপিগণ রায়ের দিন, তারিখ ও সময় নির্ধারণ করে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন। একই কায়দায় ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়ার ইঙ্গিত প্রদান করে সরকারের মন্ত্রী এমপিগণ বক্তব্য রেখে আসছিলেন। আজ ৮ ফেব্রুয়ারী আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারী ঘোষণার বাস্তবায়ন হলো মাত্র। বেগম খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনাকালে তার নিয়োজিত বিজ্ঞ আইনজীবীগণ আদালতে সাজানো মিথ্যা ও বানোয়াট মামলার চুলচেঁরা বিশ্লেষণ করে যে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেছেন তাতে দেশবাসী আশা করেছিল বেগম জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন ও সাজানো মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাবেন। কিন্তু সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে দন্ডিত করায় তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ রায়ে জনগণ হতাশ হয়েছে।”

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, “সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য বিচার বিভাগকে নগ্নভাবে ব্যবহারের যে নিকৃষ্ট ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আদালতের প্রতি জনগণের আর কোন আস্থা থাকবে না। বিচার বিভাগের উপর থেকে জনগণের আস্থা উঠে গেলে দেশ ভয়াবহ সংকটের দিকে ধাবীত হবে। সরকার এ ধরনের সংকট সৃষ্টি করে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায়। কিন্তু সরকারের এ পরিকল্পনা দেশের জনগণ কখনো বাস্তাবায়ন হতে দিবে না। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সরকার সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার নামে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। সরকার মূলত: রাজধানী ঢাকা থেকে সারা দেশকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। সরকার সারা দেশে ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে তাদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে গোটা দেশকে জিম্মি করে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দন্ডীত করার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলংকিত অধ্যায় হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “ সরকার সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে যেভাবে জনগণের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন করেছে তাতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, এ সরকার গণতন্ত্র, সংবিধান ও জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে না। এ ধরনের স্বৈরাচারী মানসিকতা সরকারকে পর্যায়ক্রমে চূড়ান্ত পতনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।”

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “আমরা ২০ দলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদসহ ২০ দলীয় জোটের আটককৃত সকল নেতা- কর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের নি:শর্তভাবে মুক্তি প্রদান এবং নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশকে বর্তমান শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

Logo-orginal