, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বগুড়ার আলোচিত মতিনের বাসায় দাওয়াত খেয়ে আসলেন মন্ত্রী শাজাহান খান”

প্রকাশ: ২০১৮-০২-০২ ১৩:১১:১২ || আপডেট: ২০১৮-০২-০২ ১৩:১১:১২

Spread the love

বগুড়ার আলোচিত মতিনের বাসায় দাওয়াত খেয়ে আসলেন মন্ত্রী শাজাহান খান”
(ছবিঃ কপি ঢাকা টাইমস) বগুড়ায় ব্যাপক সমালোচনার পর যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা মতিন সরকারের বাসায় দাওয়াত খেয়ে আসলেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান।
বগুড়ায় এক কিশোরী ও তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় নাম আসা তুফান সরকারের ভাই এই মতিন সরকার। ‍মতিন নিজেরও আছে নানা কুকীর্তি।

সচিত্র প্রতিবেদন জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা টাইমসের ।

তুফানের বিষয়টি সামনে আসার পর মতিনের নানা কুকর্ম গণমাধ্যমে উঠে আসার পর তুফানের মতো তাকেও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে যুবলীগ। সেই বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়া হয়েছে, এমন কোনো খবর প্রকাশ হয়নি গণমাধ্যমে।

মতিন সরকার বগুড়া ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া শহরতলী ইসলামপুর হরিগাড়ী এলাকায় বাংলাদেশ ড্রাইভিং ও মোটরযান সহকারী প্রশিক্ষণ স্কুলের উদ্বোধন করতে জেলাটি সফরে যান নৌমন্ত্রী। সেখানেও ছিলেন মতিন।

সকালে অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে দুপুরে নৌমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গী এবং বগুড়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং মোটর মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারাও শহরের চক সূত্রাপুর চামড়া গুদাম এলাকায় মতিন সরকারের বাড়িতে যান।

মন্ত্রীর সফর উপলক্ষে মতিন সরকারের বাড়ির সামনের আঙ্গিনায় প্যান্ডেল টানিয়ে ভোজের আয়োজন করা হয়। তবে মন্ত্রী খাবার খেয়েছেন মতিনের বাসার ভেতরেই। আর বগুড়ার নেতা-কর্মীরা খাবার খান বাইরের প্যান্ডেলে।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজউদ্দিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন, সড়ক পরিবহন শ্যমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান আকন্দ, আবদুল মতিন সাধারণ সম্পাদক, জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ হেলাল প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে নৌ মন্ত্রী শাজাহান খানের মোবাইল ফোনে সাত বার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় বগুড়ায় গেছেন, তবে ওই বাড়িতে ভাত খেয়েছেন কি না বলতে পারব না। আপনি মন্ত্রী মহোদয়কে ফোন দেন।’

তুফান-মতিনের বাসায় দাওয়াত খেয়ে বিকালে শহরে চারমাথায় জেলা ট্রাক মালিক সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন নৌ মন্ত্রী।

গত বছরের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়ার কথা বলে তুফান সরকার বাসায় ডেকে নিয়ে একটি কিশোরীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠে। তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি এবং তার মা রুমী বেগম ওই কিশোরী ও তার মায়ের উপর নির্যাতন চালায় এবং এক পর্যায়ে দুই জনের মাথা ন্যাড়া করে দেয়।

এই ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পর তোলপাড় হয়। আর তুফানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে যুবলীগ।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তুফানের নানা ‍কুকীর্তি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হতে থাকলে তার ভাই মতিন সরকারের বিষয়টিও সামনে চলে আসে।

মতিন সরকার চারটি হত্যা মামলাসহ নয়টি মামলার আসামি। তিনি প্রকাশ্যে থাকলেও তাকে পলাতক দেখিয়ে নয় বছর আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করেনি পুলিশ। আর এই সময়ে মতিন সরকারের আর্থিক অবস্থা ফুলে ফেঁপে উঠে।

গণমাধ্যমে দুই ভাইকে নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদনের পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মতিন। আর তার জামিন আবেদন নাকচ করে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান। আর গত ১ নভেম্বর তিনি জামিন পান। আর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে গত ৩০ জুলাই তুফানকে এবং ১ আগস্ট মতিনকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করে যুবলীগ।

গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে তুফান ও মতিনের সম্পদের অনুসন্ধানও শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে অনুসন্ধান শেষ হয়েছে কি না সেটি এখনও জানা যায়নি।

গত আগস্টে এক বিবৃতিতে বগুড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘সংগঠন করা মানে অপরাধ করার লাইসেন্স নয়। সহযোগী সংগঠনসহ ভুঁইফোড় কিছু সংগঠনের কারণে আওয়ামী লীগের দুর্নাম হচ্ছে।’

মমতাজ আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অনেক সময় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বাসায় দাওয়াত খান। তাদেরকে বিভিন্নভাবে পৃষ্ঠপোশকতা করেন। যার ফলে আমাদেরকে অনেকে তোয়াক্কাই করে না।’

‘কোন ব্যক্তির কারণে আওয়ামী লীগ দুর্নামের অংশিদার হবে না। শুধুমাত্র তুফান সরকার অথবা মতিন সরকার নয়; যারা এদের স্রষ্টা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

মতিন সরকারের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়ে আবার তার বাড়িতে দাওয়ার খাওয়ার বিষয়ে জানতে মমতাজ উদ্দিনকে ফোন দেয়া হলে তিনি ক্ষেপে যান।

‘ইয়ার্কি করার জায়গা পান না, কী সাংবাদিকতা করেন, রাখেন’ বলে ফোন কেটে দেন বগুড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি।

Logo-orginal