, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ভূখণ্ড রাখার অধিকার ইসরাইলিদের, সমর্থন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের

প্রকাশ: ২০১৮-০৪-০৩ ১৫:৫৭:১২ || আপডেট: ২০১৮-০৪-০৩ ১৫:৫৭:১২

Spread the love

ভূখণ্ড রাখার অধিকার ইসরাইলিদের, সমর্থন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের
ইসরাইলিদের নিজেদের বসবাসের জন্য আলাদা ভূখণ্ড রাখার অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান। তিনি বলেছেন, বসবাসের জন্য নিজেদের আলাদা ভূখণ্ড রাখার অধিকার ইসরাইলিদের রয়েছে।

মার্কিন ম্যাগাজিন দি আটলান্টিককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিন সালমান বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি নিজেদের দেশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকার সব জায়গার প্রতিটি মানুষের রয়েছে। আমি মনে করি ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের নিজস্ব আবাসভূমিতে বসবাস করার অধিকার রয়েছে।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, রিয়াদ ও তেল আবিবের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা যে বাড়ছে, এটা তারই একটি নমুনা।

ইসলাম ধর্মের উৎপত্তিস্থল ও প্রধান তীর্থভূমি সৌদি আরব ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে না।

৩২ বছর বয়সি তরুণ যুবরাজ বিন সালমানই বর্তমানে সৌদি আরবের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়।

ইসরাইল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় আরব ভূখণ্ড দখল করে নেয়। ওই ভূমি ফেরত দেওয়ার ওপর ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক নির্ভর করবে- এমন নীতিই রিয়াদ এতদিন বজায় রেখে এসেছে। ফিলিস্তিনিরা ওই ভূমির দাবিদার।

গত মাসের শেষ দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা সৌদি যুবরাজ আটলান্টিককে বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার এবং জেরুসালেমে আল-আকসা মসজিদ ধর্মীয় কারণে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুধু এটুকুই বলতে চাই; অন্য কারও বিষয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।’

রয়টার্স লিখেছে, সৌদি যুবরাজের এই সফরের উদ্দেশ্য মার্কিন বিনিয়োগ আকর্ষণ করা। আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরানের প্রভাব বলয় ভেঙে সৌদির পক্ষে সমর্থন বাড়ানোও তার একটি উদ্দেশ্য।

আটলান্টিকে সোমবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বিন সালমান আরো বলেন, ‘কিন্তু প্রত্যেকের জন্য স্থিতিশীল জীবন নিশ্চিত করা এবং স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদেরকে একটি শান্তিচুক্তি সই করতে হবে।’

সৌদি যুবরাজ বলেন, ইহুদিদের সঙ্গে সৌদি রাজতন্ত্রের কোনো শত্রুতা নেই এবং ‘বহুদিক দিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে আমাদের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে।’

বিন সালমান আরো বলেন, ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তেল আবিবের সংঘাত শেষ হলে সৌদি আরব ইসরাইলের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে।

ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ভূমি জবরদখল করে সৃষ্ট অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সেনারা শুক্রবার গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলের বিষয়ে সৌদি মনোভাবের এই পরিবর্তনের কারণটি তৈরি হয় এক যুগেরও বেশি সময় আগে।

২০০৩ সালে ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের শাসনের অবসান হওয়ার পর দেশটির রাজনীতিতে সুন্নিদের বদলে শিয়ারা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে শিয়া প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করে।

ইরাকি শিয়া মিলিশিয়ারা পরে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে লড়াইয়ে যোগ দেয়। রাশিয়া আগে থেকেই আসাদের পক্ষে ছিল, আঞ্চলিক প্রতিবেশী ইরানের সমর্থন পাওয়ার পর আসাদ টিকে যান।

এর ফলে তেহরান থেকে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা পর্যন্ত একটি করিডোর খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় ইরানের সামনে, যা সুন্নিপ্রধান সৌদি আরবকে আরও বেশি ইসরাইলের দিকে ঠেলে দেয়।

ইরানের পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়া ঠেকাতে সৌদি-ইসরাইল দুই দেশই সোচ্চার।

Logo-orginal