, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ছুটিতে ঘরমুখো মানুষ চরম দুর্ভোগে

প্রকাশ: ২০১৮-০৬-১৪ ১৭:৪৮:২১ || আপডেট: ২০১৮-০৬-১৪ ১৭:৪৮:২১

Spread the love

ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ছুটিতে ঘরমুখো মানুষ চরম দুর্ভোগে
বাংলাদেশে ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ছুটিতে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ লেগেই রয়েছে। চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন ট্রেনের যাত্রীরা আর ফেরী ঘাটে সড়ক পথের যাত্রীরা।

ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন সার্ভিসের চতুর্থ দিনে আজ ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বেশিরভাগ ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। ট্রেনের প্রতিটি বগি কানায় কানায় ভরাতো ছিলই, যাত্রীবোঝাই ছিল ছাদও। এ নিয়ে আগাম টিকিট কাটা যাত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

যাত্রীরা বলছেন, অনেক কষ্ট করে তারা আগেভাগে ট্রেনের টিকিট কেটেছেন। তারপরও রীতিমত যুদ্ধ করে ট্রেনে চড়তে হয়েছে। বগির ভিতর শুধু করিডরে নয়, সিটের হাতলেও অনেক যাত্রীকে বসতে হয়েছে। ফলে কোন নড়াচড়া ছাড়াই এরকম হাত-পা গুটিয়ে ঠায় বসে তাদের ঘরে ফিরতে হচ্ছে।

গতকাল সকালেও কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা থেকে দেড় ঘন্টা দেরিতে কমলাপুর স্টেশন ছেড়েছে। দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ছাড়ার সময় ছিল সকাল পৌনে ৯টায়, তা ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ের পৌনে একঘণ্টা পর। লালমনিরহাটের লালমনি ঈদ স্পেশাল ট্রেন বেলা সোয়া ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা। এটি ছাড়ে বেলা ১১টায়। দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ট্রেনও নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর ছেড়ে যায়। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ছেড়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস কমিউটার ট্রেন সকাল সাড়ে ৯টার পরিবর্তে ২০ মিনিট দেরি করে বেলা ৯টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে গেছে। জামালপুরের তারাকান্দি রুটের অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেন আধাঘণ্টা দেরি করে সকাল সোয়া ৯টায় ছেড়েছে। দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেস ২০ মিনিট দেরি করে বেলা ১০টা ২০ মিনিটে ছেড়েছে। নীলফামারীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাড়ার সময় সকাল ৮টা থাকলওে ট্রেনটি আধাঘণ্টা দেরি করে ছেড়ে যায়।

বুধবার দুপুর আড়াইটায় কমলাপুর রেলস্টেশনে যান রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক। এসময় রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ৩০টির মতো ট্রেন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে শুধু সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৪৫ মিনিট দেরি করেছে। বাকি ট্রেনগুলো সঠিক সময়ে ছেড়ে গেছে।

ট্রেনের ছাদে যাত্রীদের ভ্রমনের ব্যাপারে রেলমন্ত্রী জানান, “ছাদে উঠা আইনে নেই। আমরাও সমর্থন করি না। যারা উঠেন, তারা নিজ দায়িত্বে উঠছেন। যারা উঠছেন, তাদের নিবৃত্ত করা হচ্ছে।”

সড়কপথে ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ সহনীয় রাখতে গত ৮ জুন থেকে উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। সড়কের ভাঙাচোরাও মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ‘সংস্কার’ কাজ অনেকে এলাকাতেই ধুয়ে মুছে গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ অংশে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গতকাল দিনভর ধীরগতিতে গাড়ি চলেছে। কোথাও কোথাও বেশ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

ওদিকে, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ বাড়তে থাকে। এতে ঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসকে ফেরি পার হতে দেড় থেকে দুই ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের জন্য আলাদা সড়ক ও ফেরিঘাটের ব্যবস্থা করে দিলেও চরম দুর্ভোগে পড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি বা মাইক্রোবাস যাত্রীরা। ব্যক্তিগত গাড়ির লাইনও দুই থেকে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়ে যায়।

বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা সেক্টরের এজিএম জিল্লুর রহমান জানান, আরো একটি ফেরি বাড়ানোর কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ১৯টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তবে ফেরির সংখ্যা বাড়ালেও বড় ফেরির সংখ্যা কম থাকায় বেশী যানবাহন পারাপার করা যাচ্ছে না। এ কারণে যানবাহনকে কিছু সময় ঘাটে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে ঈদের ঘরমুখো মানুষকে নিরাপদে পার করা যাবে।#

Logo-orginal