>>ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ধসের আশঙ্কা
>>আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা
>>নদীবন্দরে ২ নম্বর সংকেত
তিনি আরও বলেন, ‘নিম্নচাপটি এখন গভীর সমুদ্রে নেই, উপকূল ঘেঁষেই রয়েছে। অলরেডি সন্দ্বীপ ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকায় এর প্রভাব পড়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে দমকা হাওয়াও বইছে। নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শুধু ঢাকাই নয়, কক্সবাজার, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে।’
রোববার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে মৌসুমী নিম্নচাপে রূপ নিয়ে দুপুর ১২টায় সন্দ্বীপ ও কাছাকাছি উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার মধ্যরাত নাগাদ সীতাকুণ্ডের কাছ দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, মৌসুমী নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার (বজ্রবাহী মেঘ) সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
প্রাকৃতিক নানা কারণে সমুদ্রের একটি অঞ্চলে কেন্দ্রাভিমুখী ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল বা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। ক্রমান্বয়ে এ ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চলটি শক্তি সঞ্চয় করে (বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে) সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ ও শেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের গতি ১৭-৪০ কিলোমিটার হলে তা লঘুচাপ। নিম্নচাপ হচ্ছে একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ৪১-৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। গভীর নিম্নচাপের ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ ৫১-৬১ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে। কোন ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ৬২-৮৮ কিলোমিটারের মধ্যে হলে তাকে বলে ঘূর্ণিঝড়।
অন্যদিকে কয়েকদিনের গরমের পর স্বস্তি মিলেছে নগরবাসীর। বিকেলে দেখা মিলেছে প্রশান্তির বৃষ্টি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে, সেখানে ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ধসের আশঙ্কা
রোববার বিকেলে ভারী বর্ষণের সতর্কবাণীতে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, মৌসুমী নিম্নচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে রোববার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বরিশাল, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের চেয়ে বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।
অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে সতর্কবাণীতে।
স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা
আবহাওয়া অধিদফতরের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসের বরাত দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সন্ধ্যায় জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব পাহাড়ি এলাকার মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীর পানি আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টায় দ্রুত বাড়তে পারে। এতে স্বল্প মেয়াদী আকস্মিক বন্যা হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত
রোববার রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে- ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কি.মি. বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।