, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

একসাথে চলে গেল দুই ভাই” বাকরুদ্ধ মা-বাবা, নির্বাক স্বজনরা

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-১৫ ১৫:৩৭:০৫ || আপডেট: ২০১৮-০৭-১৫ ১৫:৩৭:০৫

Spread the love

একসাথে চলে গেল দুই ভাই” বাকরুদ্ধ মা-বাবা, নির্বাক স্বজনরা
চকরিয়ার পৌরশহর চিরিঙ্গার ব্যবসায়ী আলহাজ আনোয়ার হোসাইনের সংসার আলোকিত করে রেখেছিল তাঁর দুই পুত্র। পড়ালেখায়ও তারা বেশ মেধাবী। দুই পুত্রকে ঘিরে বড় স্বপ্ন ছিল আনোয়ার হোসাইনের। কিন্তু মুহূর্তেই চুরমার হয়ে গেল তাঁর সেই স্বপ্ন, একটি বাড়ির দুটি প্রদীপ নিভে গেল। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মাতামুহুরী নদীর চরে ফুটবল খেলা শেষে হৈ–হুল্লা করে নদীতে গোসল করতে নেমেই অন্য তিন বন্ধুর সাথে চিরতরে হারিয়ে গেল তারা। দুই পুত্রের একজন আমিনুল হোসাইন এমশাদ (১৬) চকরিয়া গ্রামার স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অপর পুত্র মেহরাব হোসাইনও একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

শনিবার রাতে আনোয়ার হোসাইনের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, দুই পুত্রকে হারিয়ে মা–বাবা, চাচা–চাচিসহ পরিবারের সব সদস্য নির্বাক–নিস্তব্ধ। শোকে স্তব্ধ পরিবারের সদস্যরা যেন তাদের নয়নের মণি আমিনুল হোসাইন এমশাদ ও মেহরাব হোসাইনকে হারিয়ে কান্না করারও শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন । আর তাদেরকে সমবেদনা জানাতে স্রোতের মতোই বাড়িতে ভিড় করছেন নানা শ্রেণি–পেশার নারী–পুরুষ।

শোকাহত আনোয়ার হোসাইনের ভগ্নিপতি সাংবাদিক রফিক আহমদ কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, তার কত স্বপ্ন ছিল দুই সন্তানকে ঘিরে। এজন্য তাদেরকে চকরিয়ার নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চকরিয়া গ্রামার স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। যাতে পড়ালেখায় মনযোগী এবং ভাল ফলাফল করতে পারে তারা। কিন্তু আজ পুরো বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একসঙ্গে দুই পুত্রকে হারিয়ে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা–মা।

আনোয়ার হোসাইনের ছোট ভাই জমির হোসাইন বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সকলের আদরের ছিল এই দুই ভাইপো। ছোটকাল থেকেই কোলে–পিঠে তুলে বড় করেছি। আজ যে এভাবে তাদেরকে চিরদিনের জন্য হারাতে হবে তা কোনদিন ভাবিনি। নিষ্পাপ এই দুই ভাইপোকে আল্লাহ যেন বেহ্‌েশত নসীব করেন এই দোয়াই করি।’

এদিকে চকরিয়া গ্রামার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলামের পরিবারেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার বড় পুত্র পুত্র দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইয়্যিদ জাওয়াদ আর্ভিকে হারিয়ে নির্বাক পরিবারের সদস্যরা। একই অবস্থা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জলি ভট্টাচার্য্য ও কানু ভট্টাচার্য্যের একমাত্র পুত্র তুর্য ভট্টাচার্য্যেরও।

মাতামুহুরীতে সলিল সমাধি হওয়া শিক্ষার্থীদের স্বজনেরা জানান, গ্রামার স্কুলের অনুষ্ঠিত অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার শেষ পরীক্ষা ছিল গতকাল। বিষয় ছিল উচ্চতর গণিত। এসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে দুপুরের খাবার না খেয়ে সোজা চলে যায় মাতামুহুরী নদীর চরে ফুলবল খেলতে। তারা কাঁধের ব্যাগ নদীর চরে রেখে মত্ত হয়ে যায় ফুটবল খেলায়। খেলা শেষে সকলে মিলে নদীতে নেমে পড়ে গোসল সারতে। সেখানেই একের পর এক শিক্ষার্থী চোরাবালিতে আটকে নদীতে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে।
উৎস: চকরিয়া নিউজ।

Logo-orginal