, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

জামায়াতের শর্ত নিয়ে বিপাকে রাজশাহী নগর বিএনপি

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-২২ ০১:০১:১৩ || আপডেট: ২০১৮-০৭-২২ ০১:০১:১৩

Spread the love

জামায়াতের শর্ত নিয়ে বিপাকে রাজশাহী নগর বিএনপি
রাজশাহী-৩ (পবা-মাহনপুর) আসন পেলে সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সমর্থন দেয়া হবে বিএনপিকে এমন শর্তই দিয়েছে জামায়াত। বিষয়টি নিয়ে দু’দলের মধ্যে ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এক সপ্তাহ রাজশাহীতে অবস্থান শেষে ঢাকায় ফিরলেও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির টানাপোড়েনের ইতি টেনে যেতে পারেননি তিনি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা জামায়াতের এ ধরনের শর্ত প্রত্যাখ্যান করলেও শুক্রবার বিকালে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আবু সেলিম (শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হয়েছেন) যুগান্তরকে বলেন, ‘পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়েও রাজশাহীতে জামায়াত মনোনীত মেয়র প্রার্থী সিদ্দিক হোসাইনকে ভোট করতে দেয়া হয়নি শুধু জোটের স্বার্থে। বিএনপির কাছে জামায়াতের কিছু যৌক্তিক দাবি ছিল।

তিনি বলেন, সেগুলোর অন্যতম হল ২০১৩ সালে নগরীর যেসব ওয়ার্ডে জামায়াতের কাউন্সিলররা নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের সমর্থনে এবারও বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা। আর অন্য দাবিটি হল আগামী সাধারণ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দেয়ার আগাম ঘোষণা দেয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির স্থানীয় নেতারা দুই সপ্তাহ আগে জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন। কিন্তু আজও বিএনপি কোনো জবাব দেয়নি। ফলে জামায়াত ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজশাহীতে চলমান নির্বাচনে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। সন্তোষজনক প্রতিশ্রুতি না পেলে জামায়াত এবার বিএনপির মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য মাঠে নামবে না।’

জামায়াত নেতাদের এসব দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাদের মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের অবস্থা খুবই ভালো। রাজশাহী হচ্ছে বিএনপির পীঠস্থান। এখানে ওরা (জামায়াত) যদি নাও আসে তারপরও আমাদের প্রার্থী বিপুল ভোটে জিতবে।’

মিনু বলেন, ‘২০১৩ সালের নির্বাচনে নগরীর চারটি ওয়ার্ডে জামায়াতের কাউন্সিলর প্রার্থীরা জিতেছিলেন, তা আবার বিএনপির সহযোগিতায়। এবারও আমরা তাদের বলেছি বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে। কিন্তু তার আগে বুলবুলের জন্য মাঠে নামতে হবে।’

রাজশাহী-৩ আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী কারাবন্দি। বিএনপির নীতিনির্ধারক আছে। মনোনয়ন বোর্ড আছে। আমরা এখনই তাদের এমন দাবির বিষয়ে কী জবাব দিতে পারি?’

মিনু বলেন, ‘রাজশাহীতে জামায়াত, বুলবুলের পক্ষে মাঠে নামতে পারছে না অন্য কারণে। তারা দুই নৌকায় পা দিচ্ছে। এতে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

রাজশাহী-৩ আসনের দাবি প্রসঙ্গে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, ‘এই আসনে নির্বাচনের জন্য আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়ে আছি। আসনটি বিএনপির রিজার্ভ আসন। এ আসন জামায়াতকে ছেড়ে দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’

তিনি বলেন, ‘জামায়াত রাজশাহীতে ধানের শীষের পক্ষে মাঠে নামছে না শুধু এসব কারণেই তা কিন্তু নয়। এর পেছনে অন্য কারণ আছে।’

১৫ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম ইমন তার ফেসবুক পেইজে বিএনপি প্রার্থী বুলবুলকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। বুলবুলকে কেন জামায়াত সমর্থন দিচ্ছে না তাও উল্লেখ করেন তিনি। এ নিয়েই মূলত জামায়াত-বিএনপিতে টানাপোড়েনের সূত্রপাত।

রাজশাহীতে জামায়াতের সঙ্গে চলমান টানাপোড়েন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, লক্ষ্য ও চেতনায় বিএনপি-জামায়াত একই। খুব শিগগির সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। জামায়াত খুব শিগগির বিএনপির মেয়র প্রার্থী বুলবুলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে। সুত্র: যুগান্তর।

Logo-orginal