, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

ফ্রান্সের দুই মুসলিম প্লেয়ার আনন্দ প্রকাশ করছেন সিজদাহ-এর মাধ্যমে”

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-১৬ ১০:৪৪:০৯ || আপডেট: ২০১৮-০৭-১৬ ১০:৪৪:০৯

Spread the love

ফ্রান্সের দুই মুসলিম প্লেয়ার আনন্দ প্রকাশ করছেন সিজদাহ-এর মাধ্যমে”
২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ফ্রান্স দলের দুই মুসলিম প্লেয়ার আনন্দ প্রকাশ করছেন সিজদাহ-এর মাধ্যমে। পল পগবা ও দজিব্রিল সিদেবের এই উদযাপন মুসলিম দর্শক ও ভক্তদের মধ্যে অন্যরকম আনন্দ দেয়।

কয়েকদিন আগে সৌদি আরবের মক্কায় ওমরা পালন করতে গিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দামী ফুটবলার পল পগবা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সুন্দর জিনিস।’  

এর আগেও একবার হজ করেছিলেন পল পগবা।  তিনি ১৯৯৩ সালের ১৫ মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন। একজন ফরাসি ফুটবলার হয়েও তিনি প্রিমিয়ার লীগের দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলে খেলে থাকেন। তিনি মূলত মধ্যমাঠে খেলে থাকেন। তিনি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। ২০১৩ সালে পগবা ‘গ্লোল্ডেন বয়’ পুরষ্কার পান।  

ফ্রান্সের ফুটবল দলে কমপক্ষে সাতজন মুসলিম খেলোয়াড় খেলেছেন। যা মুসলমান বিশ্বের জন্য অনেক খুশির খবর নিঃসন্দেহে। ফ্রান্সের মুসলিম ফুটবলারদের মধ্যে আছেন, আদিল রমি, দজিব্রিল সিদেবে, বেঞ্জামিন মেন্ডি, পল পগবা, গল কান্তে, নাবিল ফকির, উসমানী ডেম্বেলে। এরা সবাই ফ্রান্সের বিশ্বকাপ ফুটবলের তালিকায় ছিলেন।

আদিল রমি ফ্রান্সের জাতীয় ফুটবল দলে ডিফেন্ডার হিসেবে খেলেন। এছাড়া তিনি ফ্রান্সের মারসেইলি ক্লাবে খেলেন। ২০১৫-১৬ তে তিনি ‘ইউইএফএ’ ইউরোপ ট্রফি জিতেন।

সেনেগালে জন্ম নেয়া দজিব্রিল সিদেবে মোনাকায় ডিফেন্ডার হিসেবে খেলেন। তিনি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন।

নাবিল ফকির ফ্রান্সের অলিম্পিক লিওনাইসে খেলেন। এছাড়াও ফ্রান্সের জারসি গাঁয়ে মাঠ কাঁপান। তার জন্ম আলজেরিয়া।

উসমানী ডেম্বেলের জন্ম ফ্রান্সের ভারনোনে। বর্তমানে বার্সেলোনার হয়ে খেলছেন।

ফরাসিদের শিরোপা উৎসব

দ্বিতীয় বারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলের শিরোপা জিতলো ইউরোপীয় জায়ান্ট ফ্রান্স। ১৯৯৮ সালে জিনেদিনে জিদানের হাত ধরে আসা প্রথম সফলতার পর এবার সাফল্যের মুকুটে দ্বিতীয় পালকটি যুক্ত করলেন এমবাপ্পে-গ্রিয়েজম্যান-পগবারা। রোববার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর লুঝিনিকি স্টেডিয়ামে উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে বিশ্বকাপ জিতেছে দিদিয়ের দেশ্যমের শীষ্যরা। আর প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেও তাই উৎসব করা হলো না ক্রোয়েটদের।

ফাইনালের শুরুতেই এদিন দুর্ভাগ্য সঙ্গী হয় ক্রোয়েটদের। একটি আত্মঘাতি গোল ও ডি-বক্সের মধ্যে বল হাতে লেগে হ্যান্ডবল থেকে পেনাল্টিতে গোল হজম করে তারা। পরের দুটি গোল অবশ্য ফ্রান্স দিয়েছে দুর্দান্ত কাউন্টার অ্যাটাক থেকে। আর এই বিষয়গুলোই ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন দুই দলের। গোলের খেলা ফুটবলে একের পর এক লক্ষ্যভেদ করে ফ্রান্স ছিনিয়ে নিয়েছে বিশ্বসেরার মুকুট। বল দখলের লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে থাকলেও ফ্রান্স সফল গোলের খাতায়। যেমনটা বলছে, ৪-২ স্কোরলাইনও। গোলের হিসেব দেখে ম্যাচটাকে একপেশে ভাবতে পারেন কেউ; কিন্তু ১৯৬৬ সালের পর প্রথম কোন বিশ্বকাপ ফাইনালে ছয় গোল হওয়া এই ম্যাচে প্রতিমূহুর্তে ছিলো উত্তেজনা।

এমনকি ৬৫ মিনিটে ফ্রান্স যখন ৪-১ গোলে এগিয়ে গেছে, তখনও এতটুকু ভাটা পড়েনি বিশ্বকাপ ফাইনালের আবহে। গোছানো, সুন্দর ফুটবল খেলে একের পর এক আক্রমণ করে ফ্রান্সের ডিফেন্ডারদের পরীক্ষা নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া; কিন্তু সেই পরীক্ষায় সফল ছিলো ফরাসিরা। দারুণভাবে রক্ষণভাগ আগলে রেখেছে তারা। শেষ মূহুর্তে গোলরক্ষকের ছেলেমানুষি ভুলে একটি গোল হজম না করলে তো খেলার ফলাফল থাকতো ৪-১, যেটি বিশ্বকাপ ফাইনালের সাথে বেমানানই হতো।

ম্যাচের ১৮ মিনিটে ফরোয়ার্ড মানজুকিচের হেড থেকে আত্মঘাতি গোল হজম করে ক্রোয়েশিয়া। প্রায় ৪৫ গজ দূর থেকে গ্রিয়েজম্যানের নেয়া ফ্রি-কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন মানজুকিচ। উচু হয়ে আসা বল তার মাথায় লেগে চলে যান গোল পোস্টে।

এরপর দারুণ খেলে ঠিক ১০ মিনিট পর ম্যাচে ফেলে মডরিচের দল। ২৮ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণের পর বক্সের মধ্যে জটলায় বল পেয়ে দারুণ বুদ্ধিমত্তায় ফ্রান্সের জালে পাঠান ক্রোয়েশিয়ার ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচ। কিন্তু সমতা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি তারা। আর এবার ক্রোয়েটদের জন্য দুর্ভাগ্য বয়ে আনেন দলের গোলদাতা পেরিসিচ।

ডান প্রান্তে কর্নার পায় ফ্রান্স। গ্রিয়েজম্যানের কর্নার থেকে উড়ে আসা বল হাতে লাগে পেরিসিচের। পেনাল্টি দাবি করে ফ্রান্স। অনেক নাটকীয়তার পর ভিডিও রেফারির সহায়তা নেন ফিল্ড রেফারি। পেনাল্টি বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ গোলটি করেন ফরাসি অধিনায়ক গ্রিয়েজম্যান।

পিছিয়ে পড়ে আবারো গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। একের পর এক আক্রমণে তারা দিশেহারা বানায় ফরাসিদের। কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ করতে হয়েছে তাদের পিছিয়ে থেকেই। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের পসরা সাজায় মডরিচ, রাকিটিচরা। কিন্তু সফলতা ধরা দেয় ফরাসিদের হাতে। এবার গোলের নায়ক পল পগবা। তার মাধ্যমেই সূচনা হয় আক্রমণের। শেষটাও হয় তার হাতে। ৫৯ মিনিটে পগবার প্রথম শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে আসে, ফিরতি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই বার্সেলোনা তারকা।

এরপর এই ম্যাচে ফল সম্পর্কে অনেকেই হয়তো নিশ্চত হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও ক্রোয়েশিয়া গোল শোধে আক্রমণের পর আক্রমণ চালায়। কিন্তু কিছু একটা হয়তো বাকি ছিলো ম্যাচে। গ্রিয়েজম্যান গোল করেছেন, পগবা করেছেন কিন্তু যাকে নিয়ে এত আলোচনা সেই কিলিয়ান এমবাপ্পো গোল পাননি। শেষ পর্যন্ত ৬৫ মিনিটে দারুণ এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করে সেই অপূর্ণতা ঘুচিয়ে দেন ফরাসি তরুণ। আর এর মাধ্যমে ব্রাজিলীয় কিংবদন্তী পেলের পর ১৭ বছর ছয় মাস বয়সী এমবাপ্পে দ্বিতীয় টিনেজার হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করার রেকর্ড গড়লেন। ক্রোয়েশিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকা হয়ে যায় এমবাপ্পের হাতেই।

শেষ মূহুর্তে ফরাসি গোলরক্ষকের ভুলে একটি গোল শোধ করে ক্রোয়েশিয়া। এর মাধ্যমে ব্যবধান কমলেও ফ্রান্সের শিরোপা জয়ের পথে তা বাধা হতে পারেনি। ৫৯ মিনিটে মানজুকিচ গোলটি করেন। ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গোলরক্ষক সরাসরি ক্লিয়ার না করে মানজুকিচকে কাটাতে চেয়েছিলেন; কিন্তু মানজুকিচের পেয়ে লেগে জালে জড়ায় বল। এর ফলে অন্যরকম এক রেকর্ডের মালিক হলেন এই ক্রোয়েট ফরোয়ার্ড- বিশ্বকাপ ফাইনালে একই সাথে গোল ও আত্মঘাতি গোলের প্রথম নজির এটি। সুত্র: নয়া দিগন্ত।

Logo-orginal