, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

মামলা না নিলে আমরণ অনশনে যাবে রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-২০ ২৩:১৪:৩২ || আপডেট: ২০১৮-০৭-২০ ২৩:১৪:৩২

Spread the love

মামলা না নিলে আমরণ অনশনে যাবে রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল
সাংবাদিক কন্যা রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও সেটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করেনি পুলিশ। কর্মকর্তারা বলছেন-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইঙ্গিত পেলেই আজ কিংবা আগামীকালের মধ্যে রুবেল খানের অভিযোগ মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হবে। সিএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক রুবেল খানের অভিযোগটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কথা হয়েছে। সেখান থেকে ইঙ্গিত পেলেই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে। আশাকরি খুব শিগগির একটা ইতিবাচক সাড়া পাব।’ চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রাইফার বাবার দেওয়া অভিযোগ গ্রহণ করেছি। এ ঘটনায় করা তিনটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সাংবাদিক রুবেল খানের অভিযোগ মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হবে।’

এদিকে আজকের মধ্যে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা না হলে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে রাইফার বাবা রুবেল খান আমরণ অনশন করবেন বলে জানিয়েছেন। রুবেল খান বলেন, ‘চার চিকিৎসকের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসার কারণে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। যেটি স্বাস’্য মন্ত্রণালয়সহ একাধিক সংস’ার গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। গত বুধবার চকবাজার থানায় মামলা করতে গিয়েছি। ওসি সাহেব আমার অভিযোগ গ্রহণ করেছেন। কিন’ ২৪ ঘণ্টা পার হলেও অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। তবে শুক্রবারের মধ্যে পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ না করলে আমি শনিবার (আগামীকাল) থেকে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে যাব।’

এর আগে গত ২৯ জুন চিকিৎসাধীন অবস’ায় ম্যাক্স হাসপাতালে রাইফা খান রাফিদার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত ১৮ জুলাই রাইফার বাবা রুবেল খান ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস’াপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী, ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত, ডা. শুভ্র দেব এর বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

গত ২৮ জুন বিকেলে গলা ব্যাথার কারণে রাইফাকে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস’ায় পরদিন ২৯ জুন রাতে রাইফার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসার কারণে রাইফার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। এ ঘটনায় ওই রাতেই ম্যাক্স হাসপাতালে গিয়ে অভিযুক্ত কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্সদের শাস্তি দাবি করেন সাংবাদিক নেতারা। সাংবাদিক নেতাদের দাবির মুখে পুলিশ কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বিএমএ নেতাদের চাপের মুখে রাতেই তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। ঘটনার তদন্তে সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গত ৬ জুলাই এ কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বলা হয়, শিশু রাইফার যখন তীব্র খিঁচুনি হয়, তখন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব দেখা যায়। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী মনোযোগ সহকারে রোগীকে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুররোগ জটিলতার বিপদকালীন সময়ে আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে রাইফার বাবা-মায়ের করা অভিযোগ তদন্তে লক্ষ্য করা গেছে।

প্রতিবেদনে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস’া নেওয়াসহ চার দফা সুপারিশ করা হয়। এছাড়া সাংবাদিকদের দাবির মুখে এ ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস’্য মন্ত্রণালয়। স্বাস’্য মহাপরিচালকের কার্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) কাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রাম আসেন। এসময় তারা ম্যাক্স হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এ কমিটিও শিশু রাইফার চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অবহেলার প্রমাণ পায়।

Logo-orginal