, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

রাজশাহীর মেয়র প্রার্থী বুলবুলকে নিয়ে শিবির নেতা ইমনের মন্তব্যে তোলপাড়

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-১৭ ১২:১০:১৯ || আপডেট: ২০১৮-০৭-১৭ ১২:১৯:৪৭

Spread the love

রাজশাহীর মেয়র প্রার্থী বুলবুলকে শিবির নেতা ইমনের মন্তব্যে তোলপাড়
এক সময়ের আলোচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবির সভাপতি ও বর্তমানে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম ইমন। বর্তমানে জামায়াতের রোকন পদে থাকা আশরাফুল আলম ইমন ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে দলবল নিয়ে কাজ করেছিলেন। তবে এবার উল্টোচিত্র। বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে মাঠে তো নামেননি বরং বিএনপির সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সম্পর্কের অবনতির বিষয়টি প্রকাশ্যে তুলে ধরে বোমা ফাটানো মন্তব্য করেছেন বুলবুলকে নিয়ে।

‘গতবার ধানের শীষের কাজ করেছো, এবার কেন লিটনের পক্ষে?’রোববার রাতে আশরাফুল আলম ইমন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন ‘২০১৩ সালে জামায়াত-শিবির বুলবুল ভাইয়ের নির্বাচনী মাঠে ছিল অথচ এবার ২০১৮ সালে নাই কেন? এই ব্যর্থতা কার? রাজশাহী বিএনপির ঘাটি হওয়া সত্বেও জামায়াতের সঙ্গ বিহীন বুলবুল ভাই বিজয়ী হওয়া তো দুরের কথা ঠিক মত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আসতে পারবে কি না তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বিএনপির বর্তমান কার্যক্রমের ফলে অগ্রিম শুভেচ্ছা রাসিকের আগামী মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ভাইকে।’

এভাবে হাটে হাড়ি ভাংগার বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফুল আলম ইমন বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জামায়াত জোটে আছে, তবে তৃণমূলে বিএনপির প্রতি ক্ষোভ আছে। আর এটা হয়েছে অবমূল্যায়ন ও সিলেটে জামায়াতকে ছাড় না দেওয়ায়।’ বুলবুলের পক্ষে শেষ পর্যন্ত জামায়াত নামবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বুলবুল ভাইয়ের পক্ষে জামায়াত নামবে কিনা তা দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেবে। আমার জানামতে এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে বুলবুল ভাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। নির্বাচন পরিচালনায় জোটের সমন্বয় কমিটিও হয়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘কেন্দ্রীয় জামায়াতের সিদ্ধান্তে জামায়াত তাদের মেয়র প্রার্থী সিদ্দিক হোসেনকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করেছে। এরপরও বিএনপির পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতার ফলে রাজশাহীতে মেয়র নির্বাচনে জামায়াতের উপস্থিতির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীন।’ এ অবস্থায় রাজশাহীতে জামায়াত এখন শুধুই তাদের ১৬জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করছে। এরমধ্যে অন্তত আটটিতে জয় চায় জামায়াত।

জামায়াতের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত নির্বাচনে শুধু একটি ওয়ার্ডে জামায়াত কাউন্সিলর এবং দুজন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী দিয়েছিলো। সেটাও হয়েছিলো বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায়। তবে এবার তারা বিএনপির সঙ্গে কোন সমঝোতায় যায়নি। এবার বিএনপির পাশাপশি জামায়াত ১৪টি ওয়ার্ডে একক কাউন্সিলর এবং দুটি ওয়ার্ডে দুজন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী দিয়েছে। আর এসব ওয়ার্ডে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের রয়েছে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী। এ সুযোগে জামায়াত চাচ্ছে, তাদের দলীয় প্রার্থীদের বের করে আনতে। সিটি নির্বাচন জোটবদ্ধভাবে হলেও জামায়াত বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের জন্য এখনো মাঠে নামেনি। তার পক্ষে কোন মুখও খোলেনি।

এ বিষয়ে রাজশাহী জামায়াতের নায়েবে আমির আবু ইউসুফ সেলিম বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে বিএনপি আওয়ামী লীগ কেউই একক প্রার্থী দিতে পারেনি। তারা বলেছে, যে জিতে আসবে সেই তাদের প্রার্থী। আর কাউন্সিলর দলীয়ভাবে নিয়ন্ত্রন করে একক প্রার্থী দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভবও নয়। তাই আমরাও ১৪টি ওয়ার্ডে বিএনপির পাশাপাশি একক প্রার্থী দিয়েছি। সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডেও দুজন প্রার্থী দিয়েছি। আমরা কাউন্সিলর নিয়েই ভাবছি। শেষ পর্যন্ত বিএনপির মেয়র প্রার্থীকে জামায়াত সমর্থন দেবে কিনা তা বলতে পারছি না।’ তিনি আরো জানান, ১৯৯৪ সালে জামায়াতের প্রার্থী ১৯ হাজার ভোট পেয়েছিলো রাসিক নির্বাচনে। এবার অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার ভোটার রয়েছে তাদের।

এবিষয়ে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ইমন কেনো এসব লিখেছে তা জানিনা। বুলবুল ২০দলীয় জোটের প্রার্থী। সবাই কাজ করছে।’ জামায়াতের কে কে বুলবুলের পক্ষে মাঠে নেমেছে, জানতে চাইলে মিলন বলেন, ‘সবাই আছে। থাকবে না কেনো?’
উৎসঃ পূর্বপশ্চিম।

Logo-orginal