, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

সিলেটে জুবায়েরকে নিয়ে চলছে জোর আলোচনা

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-১৫ ১২:৩৮:৩৮ || আপডেট: ২০১৮-০৭-১৫ ১২:৩৮:৩৮

Spread the love

সিলেটে জুবায়েরকে নিয়ে চলছে জোর আলোচনা
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে ছিল বিরোধ। শেষ পর্যন্ত সদ্য বিদায়ী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে দলের হাইকমান্ড প্রার্থী মনোনীত করেন। কিন্তু বিরোধের জেরে বিদ্রোহী প্রার্থী হন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। তিনি নির্বাচন থেকে সরে না আসায় দল তাকে বহিষ্কার করেছে। বিএনপির বিরোধ ও সেলিমের বিদ্রোহ নিয়ে গত এক সপ্তাহ চলছিল নগরজুড়ে আলোচনা। সেলিমকে বহিষ্কারের পর আলোচনার মাত্রা কমে এসেছে। এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তার টেবিল ঘড়ি মার্কার প্রচারণা জোরেশোরে শুরু হওয়ায় তাকে নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। একই সাথে চলছে জামায়াতের ভোট নিয়ে বিশ্লেষণ।

সিলেটে জামায়াত সাংগঠনিকভাবে বেশ শক্তিশালী। তবে, সারা দেশের মতো দমন-পীড়নের মাধ্যমে এখানেও জামায়াতকে দাবিয়ে রাখা হয়েছে। দলটি নীরবে ঘরোয়াভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গত রমজান মাসে বড় ধরনের ইফতার মাহফিল ছাড়া সিলেট নগরীতে দীর্ঘ দিন থেকে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করতে দেখা যাচ্ছে না জামায়াতকে। এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জামায়াতের অংশগ্রহণ ও নেতাকর্মীদের সরব পদচারণা বিভিন্ন মহল নানাভাবে বিশ্লেষণ করছে। জামায়াত এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সারা দেশের সবক’টি সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। শুধু সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিকে ছাড় দিতে অনুরোধ করে জামায়াত। কিন্তু বিএনপি কোনো অবস্থাতেই রাজি না হয়ে উল্টো তাদের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানায়। শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতা না হওয়ায় সিলেট সিটি নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত আলাদাভাবে অংশ নিচ্ছে।

সিলেট সিটি নির্বাচনে জামায়াতের অংশগ্রহণকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা নানাভাবে দেখছেন। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন থাকায় দমন-পীড়নে বিপর্যস্ত কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতে জামায়াত এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেÑ এমনটি মনে করেন কেউ কেউ। তারা বলেন, সব সিটিতে বিএনপি প্রার্থীদের সমর্থন জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের ঘটনায় এই দলের কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। এই ক্ষোভ প্রশমনে সিলেট সিটি নির্বাচনে জামায়াতের অংশগ্রহণে অনড় অবস্থান অযৌক্তিক নয়। সিলেটে সাংগঠনিক অবস্থান ভালো থাকায় ফল আশাব্যাঞ্জক হবে বলে হয়তো মনে করছেন তারা।
সিলেটে জামায়াতের ভোট কত? এ নিয়ে নানা মহল নানা তথ্য তুলে ধরছেন। আসলে সিলেটে জামায়াতের ভোট কত এ হিসাব বের করা কঠিন। কারণ, গত তিন সিটি নির্বাচনে জামায়াত এককভাবে অংশগ্রহণ করেনি।

এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেইন বলেন, জামায়াতের যে পরিমাণ ভোট সিলেট নগরীতে আছে ওই পরিমাণ ভোট আমাদের বিজয়ে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। তিনি আরো বলেন, জামায়াতের এককভাবে সিটি নির্বাচন করার ব্যাপারটা জাতীয়ভাবে জোটের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।
সিলেট নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল করিম কিম বলেন, এই সিটি নির্বাচন কেবল মেয়র নির্বাচনেরই নয়। বরং এটা জামায়াতের শক্তি জানান দেয়ারও নির্বাচন। এই নির্বাচন থেকেই বোঝা যাবে নগরীতে জামায়াতের কেমন ভোট রয়েছে।

সিলেট মহানগর জামায়াতের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ড. নূরুল ইসলাম বাবুল দাবি করেন, জয়লাভের জন্য দলীয় যে ভোটের দরকার সে ভোট আমাদের রয়েছে। নতুন প্রজন্মের বেশির ভাগ ভোটারদের পছন্দ এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। নীরব ভোটারেরাও টেবিল ঘড়ি মার্কার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। ইনশাআল্লাহ জয় আমাদের হবেই। তিনি অভিযোগ করেন, এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নানা স্থানে আমাদের কর্মীদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থকরা হামলা চালাচ্ছেন। গত শুক্রবার রাতে প্রচার চালানোর সময় টিলাগড়ে তাদের হামলায় আমাদের দুই কর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও নগরীর আরো অনেক স্থানে কামরানের সমর্থকেরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।

জুবায়েরের সমর্থকেরা অভিযোগ করেছেন, ঘড়ি মার্কার জনসমর্থন দেখে অনেকের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা নানা অপপ্রচার চালিয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা প্রচারণা চালাচ্ছেন, ‘সারা দেশে জামায়াতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে; কিন্তু সিলেটে কেন করা হচ্ছে না’। এ ব্যাপারে জামায়াতের প্রার্থী অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ইসির সিদ্ধান্ত তিন সিটি এলাকায় নির্বাচনকালীন ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। আমাদের যেসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল তারা সবাই জামিনে রয়েছেন।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমাদের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী-সমর্থকেরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ভোটারেরাও সাড়া দিচ্ছেন। আমরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। উৎসঃ নয়া দিগন্ত।

Logo-orginal