, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

৭ মাসের দুধের শিশুকে ঘরে রেখে গৃহবধূকে আটক করে এসআই শাহজাহান

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-২২ ১৪:৪৩:০৬ || আপডেট: ২০১৮-০৭-২২ ১৪:৪৩:০৬

Spread the love

৭ মাসের দুধের শিশুকে ঘরে রেখে গৃহবধূকে আটক করে এসআই শাহজাহান
বগুড়া সদর থানা পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবির অভিযোগ তুলেছেন ইউপি সদস্যের স্ত্রী। একইসঙ্গে দাবিকৃত টাকা না পেয়ে পুলিশের এসআই ৫১ পিস ইয়াবা দিয়ে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে ইউপি সদস্যের স্ত্রী সাবানা বিবিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী

মঙ্গলবার বগুড়া জেলা জজ আদালতে জামিন শুনানিকালে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এসআই শাহজাহানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হান্নানের স্ত্রী সাবানা বিবি।

বগুড়ার জেলা জজ নরেশ চন্দ্র সরকার আসামির অভিযোগ আমলে নিয়ে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান এবং অভিযুক্ত এসআই শাহজাহান আলীকে তাৎক্ষণিক আদালতে তলব করে।

পরে তারা আদালতে সশরীরে হাজির হলে অভিযোগের সত্যতা জানতে চান বিচারক। শেষে ওসি এসএম বদিউজ্জামানকে অভিযোগ তদন্ত করে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন বিচারক।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হান্নান জানান, ওয়ার্ড সদস্য ছাড়াও তিনি একই ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পদে রয়েছেন। তার চার সন্তান। সন্তানদের পড়াশোনার জন্য তিনি সপরিবারে বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর জহুরুলপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। তার নিজের এবং পরিবারের কোনো সদস্যের মাদকের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

আবদুল হান্নান বলেন, গত ২৩ মে রাতে বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক শাহজাহান আলী সাদা পোশাকে আমার খোঁজে বাসায় আসেন। এ সময় আমি বাসার বাইরে ছিলাম। বাসায় ফিরে এলে এসআই শাহজাহান আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে থানায় যেতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে ‘থানায় ওসি স্যার ডেকেছেন’ বলে জানান। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে ডাকতে গেলে আমার স্ত্রীকে থানায় নিয়ে যান এসআই। পরদিন সকালে ৫১ পিস ইয়াবা দিয়ে আমার স্ত্রীকে মাদকের মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠান এসআই শাহজা

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২ জুলাই বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে সাবানা বিবির জামিনের আবেদন করা হয়। আবেদন না মঞ্জুর হলে বগুড়া জেলা জজ আদালতে মিস কেস করে জামিনের আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার জামিন আবেদনের নির্ধারিত শুনানির দিন ধার্য ছিল। মঙ্গলবার আদালতে জামিন আবেদন শুনানির জন্য সাবানা বিবিকে হাজির করা হয়।

এ সময় তিনি আদালতের কাছে কথা বলার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করেন। আদালত অনুমতি মঞ্জুর করলে সাবানা বিবি বলেন, বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক শাহজাহান আলী গত ২৩ মে সাদা পোশাকে আমাদের বাসায় আসেন।

এ সময় নিজেকে পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তিনি ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে মাদকের মামলায় ফাঁসিয়ে স্বামী আবদুল হান্নানকে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেন। এত টাকা জোগাড় সম্ভব নয় জানালে আমাকে থানায় নিয়ে আসেন এসআই শাহজাহান
পরে ইয়াবা মামলায় আমাকে ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাড়িতে আমার ৭ মাসের দুধের কন্যা সন্তান থাকলেও সঙ্গে নিতে দেননি এসআই। আসামির মুখে এমন অভিযোগ শুনে তাৎক্ষণিক বগুড়া সদর থানা পুলিশের ওসি এসএম বদিউজ্জামান ও এসআই শাহজাহান আলীকে আদালতে তলব করেন বিচারক।

বেলা আড়াইটার দিকে তারা আদালতে সশরীরে হাজির হলে অভিযোগের সত্যতা কতটুকু তা জানতে চান বিচারক। কোনো উত্তর দিতে না পারায় পরে অভিযোগ তদন্ত করে ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ওসি এসএম বদিউজ্জামানকে নির্দেশ দেন বিচারক।

বগুড়া সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহজাহান আলী বলেন, আমি কাউকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেইনি। কারও কাছ থেকে টাকাও চাইনি। মাদকবিরোধী অভিযানে ৫১ পিস ইয়াবা উদ্ধার হওয়ায় সাবানাকে গ্রেফতার করা হয় এবং
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারায় সদর থানায় মামলা দেয়া হয়।

বগুড়া সদর থানা পুলিশের ওসি বদিউজ্জামান বলেন, সাবানার গোটা পরিবার মাদক ব্যবসায়ী। সাবানার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর ফেনসিডিল পাচারের মামলা রয়েছে। পুলিশের নথিতে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী তিনি। তার স্বামী আবদুল হান্নানের বিরুদ্ধেও সদর থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। তবে যেহেতু আদালত তদন্ত করতে বলেছেন, সেহেতু সাবানার অভিযোগ তদন্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। সুত্র: জাগোনিউজ।

Logo-orginal