, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

admin admin

অন্তরঙ্গ ছবি ফেসবুকে আপলোড করায় শুভকে গলা কেটে হত্যা করে পপি

প্রকাশ: ২০১৮-০৮-১৮ ১৫:৪১:০২ || আপডেট: ২০১৮-০৮-১৮ ১৫:৪৩:৫১

Spread the love

অন্তরঙ্গ ছবি ফেসবুকে আপলোড করায় গলা কেটে হত্যা করে পপি চট্টগ্রামঃ বিবাহিত অবস্থায় তোলা কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে আপলোড করায় মাইন উদ্দিন আহমদ শুভকে গলা কেটে হত্যা করেছে বলে তার সাবেক স্ত্রী রোকসানা আক্তার পপি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম বিষয়টি জানান। শনিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব কথা বলেন।

নিহত মাইন উদ্দিন ফেনী জেলার ছাগলনাইয়ার জয়পুর গ্রামের মৃত সিরাজুল হকের ছেলে। আসামি রোকসানা আক্তার পপি মিরসাইয়ের জোরারগঞ্জ থানার মেহেদী নগর এলাকার আবু আহমেদের মেয়ে। বর্তমানে তার পরিবার চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাধীন আলফালাহ গলির রশিদা ভবনে থাকে।

তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে নিহত মাইন উদ্দিনের সঙ্গে রোকসানা আক্তার পপির বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর পারিবারিক বিরোধ ও দাম্পত্য কলহের কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর ২০১৫ সালে রোকসানা আক্তার চীনে ডাক্তারি পড়তে যান।

সম্প্রতি মাইন উদ্দিন তাদের কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি একটি ফেক আইডি রোকসানার আইডিতে পোস্ট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসামি রোকসানা ক্ষিপ্ত হয়ে মইনকে উদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে সেই অনুযায়ী হত্যা করে।

আমেনা বেগম বলেন,‘গত ১৭ আগস্ট ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাধীন ফয়ে’স লেক এলাকার লেকসিটি মোটেল ফাইভের ২০৩ নম্বর কক্ষ থেকে মাইন উদ্দিনের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।’

তিনি আরও বলেন,‘১৫ আগস্ট আত্মীয় স্বজনদের অজান্তে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৩৯ ফ্লাইটে করে রোকসানা ঢাকায় আসেন। পরদিন রাত দেড়টার দিকে মাইন উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে মোটেল ফাইভ আবাসিক হোটেলের যায়। তারা ওই হোটেলের ২য় তলার ২০৩ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেয়। ওই দিন রাত তিনটার দিকে মাইন উদ্দিনকে ধারালো ছুরি দিয়ে উপূর্যপরি কুপিয়ে ও জবাই করে হত্য করে রোকসানা। সে হত্যার পর মইনের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে একটি পলিথিনে ঢুকিয়ে ওই কক্ষে রাখা প্লাস্টিকের ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।পরে রোকসানা কৌশলে হোটেল থেকে বের হয়ে ঢাকায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সীতাকুন্ডের বড় দারোগার হাট এলাকায় যাওয়ার পর সে বাস থেকে নেমে আবার চট্টগ্রাম আসে। এসময় নগরীর দুই নম্বর গেটের আলফালাহ গলি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়।

এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রোকসানা আক্তার ছাড়া আর কেউ জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে আমেনা বেগম বলেন,‘এখন পর্যন্ত কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। আসামি একাই মাইন উদ্দিনকে হত্যা করেছে।’

থানা পুলিশ সূত্র জানায়, মাইন উদ্দিনকে যে ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে তা সার্জারির কাজে ব্যবহৃত হয়। এই ছুরিটি রোকসানা চিন থেকে নিয়ে এসেছে। ঘটনার পর পুলিশ হোটেলের ওই রুম থেকে ছুরিসহ হত্যাকাণ্ডের সময় রোকসানার পরণে থাকা কামিজও উদ্ধার করেছে।

খুলশী থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাইন উদ্দিনের বড় ভাই মো জাফর উদ্দিন থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আসামি রোকসানা আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

এজহারে উল্লেখ করা হয়, রোকসানার সঙ্গে মৃত মাইন উদ্দিনের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। সর্ম্পকের এক পর্যায়ে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে তারা দুইজন পরিবারের অমতে বিয়ে করে। পরে রোকসানার পরিবারের লোকজন বিয়ের বিষয়টি মেনে না নেওয়ায় ২০১৪ সালে মাইন উদ্দিন তাকে ডিভোর্স দেয়। সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন।

Logo-orginal