, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

সামাজিক সংগঠন আমি কেন করব ?

প্রকাশ: ২০১৮-০৮-২০ ২০:১১:২৩ || আপডেট: ২০১৮-০৮-২০ ২০:১৪:২০

Spread the love

সামাজিক সংগঠন আমি কেন করব??
বর্তমান তরুণ সমাজ মানেই ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটস আফ ইত্যাদি ইত্যাদি। আজ তরুণ সমাজ ভুলতে বসেছে, তারা কি?
তাদের আদৌ কি কাজ?
তাদের এসময়টার গুরুত্বই বা কি?
তাদের ইতিহাস কি?

তরুণ ত-সে, যার মধ্যে আছে তারুণ্য। আমি বয়স দিয়ে তারুণ্য মাপতে চাইতে না। আপনার বয়স ১৮, অতচ আপনি পড়ে রইলেন বয়োবৃদ্ধের মত। তাহলে আমি আপনাকে তরুণ বলতে পারিনা কিংবা বলতে চাইনা।

তারুণ্যের এই হতাশার মধ্যে তাদের একাংশ গড়ে তুলে কিছু সামাজিক সংগঠন। আবার অনেকে বলে সামাজিক সংগঠন করে লাভটাই বা কি??? তাদের জন্যই আজ আমার লিখ।
সংগৃহীত ছবি

সামাজিক সংগঠন আমি কেন করব??? তার ৫টি কারণ আমি নিম্মে লিখার চেষ্টা করছি৷ তবে মনে রাখবেন, এটি আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামত।

১/তারুণ্যঃ সামাজিক সংগঠন কেন করব, তার পিছনে প্রথম কারন হচ্ছে, তারুণ্য। আমরা আমাদের এ তরুণ সময়টা লেখাপড়া কিংবা চাকরির মধ্য দিয়েই চালাই। একটু খেয়াল করুন, লেখাপড়া কিন্তু দিনের ২৪ ঘন্টাই হয় না। লেখাপড়ার বাইরে আমরা অনেক সময় অবসরে খাটিয়ে দেই। আমরা চাইলে বিনোদনের মাধ্যমে সেই সময়কে তারুণ্যের শক্তিতে রূপান্তর করতে পারি। এসময়টা যদি আমরা সমাজের জন্য ব্যয় করি, তাহলে আমাদের ত কোন ক্ষতি হচ্ছে না। উল্টো লাভই হচ্ছে। কারন সমাজের উন্নয়ন মানে আমাদের উন্নয়ন। এ সমাজের সামান্য উন্নয়ন হলে, তা আমাদের কল্যাণেই আসবে। তাই আমাদের কল্যাণে তারুণ্যের অবসর সময়টা সমাজের তরে কাজ করতে পারি।

২/ দেশপ্রেমঃ ইসলাম ধর্মে আছে, “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ”। ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য দেশকে ভালবাসতে হবে। দেশকে ভালবাসা মানে দেশের প্রতি নামমাত্র ভালবাসা নয়। দেশ-প্রেম মানে দেশের কল্যাণে কাজ করা। আমরা চাইলেও একা একা দেশের জন্য কিছু করতে পারব না। তবে দশজনে একত্রে চাইলে অনেককিছু করতে পারি। কথায় আছে, ” দশের লাঠি একের বুঝা”। দশের একাত্বতা মানেই সংগঠিত হওয়া। সংগঠনের আওতায় আসা। একটি সংগঠনের কর্মী হয়ে আমরা চাইলেই আমাদের উপর দেশের অধিকারটুকু পালন করতে পারি। তাই আমাদের দেশের, সমাজের কল্যাণের জন্য সামাজিক সংগঠনের আওতায় আসতে হবে।

৩/ বিবেকঃ মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে, জ্ঞান, বুদ্ধি। এ দুটির কারনেই আমরা সৃষ্টির সেরা জীব, আশরাফুল মাকলুকাত। আমরা যেখানে জন্মগ্রহণ করেছি, যে পরিবেশে আমরা বাঁচতে শিখেছি, সেই পরিবেশ রক্ষা আমাদের মৌলিক দায়িত্ব। সেই পরিবেশের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। কারন আমাদের বিবেক আছে। আমাদের বিবেক না থাকলে আমরা অন্য প্রাণীর মত যা ইচ্ছা তা করতে পারতাম, পরিবেশের যেমন ইচ্ছা তেমন ক্ষতি করতে পারতাম। কিন্তু বিবেক আছে বলেই, এ পরিবেশের আমরা ক্ষতি করতে পারি না। এপরিবেশ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ চাইলেও একা একা রক্ষা করা যাই না। তার জন্য প্রয়োজন সামষ্টিক উদ্যোগ। আর এসকল উদ্যোগ গুলোই গ্রহন করে সামাজিক সংগঠন গুলো। তাই আমাদের সামাজিক সংগঠনের আওতায় আসতে হবে।

৪/ নৈতিকতাঃ বর্তমান তরুণ সমাজের একটি অংশ মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। এদেরকে রক্ষা করতে হবে।
যখন আপনি এক বা একাধিক সামাজিক সংগঠনের আওতায় চলে আসবেন তখন আপনার একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে। আপনি চাইলেও এসব অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না। কারন আপনার প্ল্যাটফর্ম আপনাকে বাঁধা দিবে।
যখন একটি সংগঠনের ব্যানারে আপনি মাদক, ইভটিজিং, জঙ্গিবাদের বিপক্ষে কথা বলবেন, তখন অন্যত্র এই অপরাধের সাথে আপনি সম্পৃক্ত হতে পারবেন না। কারন আপনার বিবেক আপনাকে বাধা দিবে। তাই এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির জন্য আপনাকে সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আসতেই হবে।

৫/ নিজের ক্যারিয়ারঃ আপনি যখন সংগঠনের হয়ে আপনার মত আরো ১০,২০,১০০ জনের সাথে কাজ করবেন, তখন সেখান থেকে অনেক দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। কারন একেক জনের মেধা একেক রকম। সংগঠনের সকলের মেধার বিনিময়ে যেহেতু কাজ হয়, সেহেতু শ্রেষ্ট কাজটিই তখন আপনি করবেন। এতে আপনার সাংগঠনিক যোগ্যতা, নিজেকে প্রেজেন্টেশন করা, স্মার্টনেস, ইভেন্ট কমপ্লিটে কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। এতে আপনি আপনার সমমান অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবেন। প্রতিযোগিতার এবিশ্বে আপনার ক্যারিয়ার গঠনে যা ভুমিকা রাখবে।

পরিশেষে একটা কথাই বলি, আসলেই কি আমার সামাজিক সংগঠন করা উচিৎ???
প্রশ্নটা নিজেকে নিজে করুন।

লেখকঃ
আবদুল্লাহ আল মামুন
তরুণ লেখক ও সমাজকর্মী

Logo-orginal