, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

মিরেরসরাইয়ে শিক্ষিত তিন পুত্রের বিরুদ্ধে এক হতভাগ্য বাবার মামলা

প্রকাশ: ২০১৮-০৯-১৪ ১২:৫৬:০৯ || আপডেট: ২০১৮-০৯-১৪ ১২:৫৬:০৯

Spread the love

মিরেরসরাইয়ে শিক্ষিত তিন পুত্রের বিরুদ্ধে এক হতভাগ্য বাবার মামলামিরেরসরাই, চট্টগ্রামঃ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষিত তিন পুত্রের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক হতভাগ্য বাবা। মামলায় তিনি পুত্রদের বিরুদ্ধে বাবা-মাকে ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার পূর্ব মালিয়াইশ গ্রামের ধনমিয়া বাড়ির সাইদুল হক বুধবার চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হেলাল উদ্দিন’র আদালতে তিন পুত্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত পুত্ররা হলেন- নাজমুল হক হেলাল (৪৪), সাইফুল হক (৩৬) ও মাইনুল হক (৩৪)।

পরিসংখ্যান কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন সরকারি চাকরি করেন সাইদুল হক (৭২)। চাকরি শেষে অবসরে গ্রহণ করেন। চাকরিকালে নিজের সর্বস্ব দিয়ে তিন পুত্র ও এক কন্যাকে শিক্ষিত করেন। সন্তানরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তিন পুত্র এখন তাদের বাবা-মাকে দু’বেলা খাবার দিতে রাজি নন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী তিন সন্তানের কাছে পিতা-মাতা আজ বোঝা। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ভরণপোষণ দেয়া তো দূরের কথা তাদের খোঁজ-খবর নেয়া, চিকিৎসা বা ওষুধ খরচ দেয়ার কথাও প্রয়োজন মনে করে না। শেষ পর্যন্ত অসহায় বাবা ভরণপোষণের জন্য আদালতের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

তিনি বলেন, মেয়েদের স্বামীরা যে সাহায্য করেছে, তা দিয়েই চোখের অপারেশনের খরচ মেটানো হয়েছে। তবে ওই তিন ছেলে বৃদ্ধ অসুস্থ এই বাবাকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার প্রয়োজনটুকুও মনে করেনি।

মামলায় সাইদুল হকের আইনজীবি, বিশিষ্ট মানবাধিকার নেতা অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান জানান, সাইদুল হক ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পরিসংখ্যান কর্মকর্তার সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই তিনি চরম অর্থ সংকটে নিজের অন্নবস্ত্র যোগাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। তার ছেলেরা তাকে দু বেলা খাবার দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করে।

সাইদুল হকের বড়ছেলে নাজমুল হক হেলাল একজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার। দ্বিতীয়পুত্র সাইফুল হক এমকম পাশ এবং সিএন্ডএফ ফার্ম রাজিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আর ছোটপুত্র মাইনুল হক রনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে বর্তমানে ন্যাশনাল ব্যাংকের ঢাকার গুলশান শাখার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। এছাড়া একমাত্র কন্যা লিপি আক্তারকেও বাংলায় মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করার পর বিয়ে দিয়েছেন বাবা।

আলাপকালে প্রাক্তণ সরকারি কর্মকর্তা সাইদুল হক বলেন, ‘তিন পুত্রকে চাকরিজীবনের সর্বস্ব দিয়ে মানুষ করেছি। সবগুলো সন্তান মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। সবাই ভালো আয় রোজগার করে। কিন্তু তাদের কাছে আমরা পিতা-মাতা এখন বোঝা। বাবা-মাকে ভরণপোষণ দিতে রাজি নয়। আপোষে বার বার ভরণপোষণ আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আমি শেষ পর্যন্ত আদালতের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।’

মানবাধিকার আইনজীবী এ.এম জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘আমরা সাইদুল হকের পক্ষে মামলা দায়ের করেছি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১১ অক্টোবর আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

Logo-orginal