admin
প্রকাশ: ২০১৮-০৯-২৭ ১৬:২০:৫৮ || আপডেট: ২০১৮-০৯-২৭ ১৬:২০:৫৮
ঢাকা: লিফটে ওঠা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভপতি রুহুল আমিনকে মারধর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস নিজেও মারধরে অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
এ ঘটনায় রুহুল আমিনসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন ভুক্তভোগী রুহুল। বিচার না পেলে আত্মহত্যা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) নতুন ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রুহুল আমিনের বড়ভাই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিমের শাশুড়ি মারা গেলে লাশ নিতে রুহুল আমিন, আব্দুর রহিম এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানা ও রুহুল আমিনের ভাবী ঢাকা মেডিকেলে আসেন। মেডিকেলের লিফটে ওঠার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের বড়ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে সনজিতের কয়েকজন অনুসারীও লিফটে ঢুকেন। রুহুল সনজিতের অনুসারীদের কয়েকজনকে লিফট থেকে নেমে তাদেরও লিফটে উঠতে সুযোগ দেয়ার অনুরোধ জানান। এসময় সনজিতের ভাইয়ের সাথে রুহুলের কথা কাটাকাটি হয়। এর ৪০ মিনিট পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের শতাধিক নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজের নতুন ভবনের ৮ তলায় উঠে রুহুল আমিনকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। মারতে মারতে রুহুলকে ৮ তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসেন।
এসময় হাসপাতালে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ। লাশটিকে ২ ঘণ্টাব্যাপী আটকে রাখে ছাত্রলীগ।
এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করে। মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনের উল্লেখযোগ্য পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে ওই এলাকায় থাকা ঢাকা আলিয়া মাদরাসা ও ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রলীগ কর্মীকেও মারধর করা হয়েছে। মারধরের পর গুরুতর আহতাবস্থায় তাদেরকে বিরোধী সংগঠনের বলে পুলিশের হাতে তুলে দেয় তারা। তারা হলেন আলিয়া মাদ্রাসার ডিগ্রি ২য় বর্ষের কাজী শাওন ও ঢাকা কলেজের ২০১২-১৩ সেশনের ম্যানেজমেন্ট এর ছাত্র মমিনুর রহমান রকি। তারা উভয়েই পূর্ব পরিচিত।
তাদের উভয়ের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কোনো কোনো স্থান হতে রক্ত ঝরতেও দেখা গেছে।
মারধরে বিষয়ে কাজী শাওন বলেন, ১২ টার একটু পরে ভাত খেতে বের হয়েছিলাম মেডিকেলের সামনে। এ সময় ১৫-২০টা ছেলে জিজ্ঞেস করে কোথা থেকে আসছি। ঢাকা আলিয়া বলার সাথে সাথেই উপর্যুপরি মারধর করে। তারা আমার মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে যায়।
শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হলের মুজাহিদ ও সোলায়মান, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ইমন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের হৃদয় হাসান সোহাগ, বঙ্গবন্ধু হলের শান্তসহ ২০-২৫ জন নেতকর্মী হামলায় অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আহত রুহল আমিন। মারধরকারীরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী।
ঘটনার বিষয়ে রুহুল আমিন বলেন, বড় ভাইয়ের সামনে ছোট ভাইকে মারধর কতোটা হৃদয় বিদারক। তারা ২ ঘণ্টা যাবৎ আমার খালার লাশ আটকে রেখেছে। এটা মেনে নেয়া যায় না।
রুহুল দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, হল থেকে ছাত্রলীগ করে এসেছি, হলের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, কেন্দ্রীয় কমিটিতেও দায়িত্বপালন করেছি। কিন্তু এত বড় অপমান জীবনে কখনো হইনি। এ অন্যায়ের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি কিছুই খাবো না। আমাকে যদি জোর করে কিছু খাওয়াতে আসে তাহলে আমি সুইসাইড করবো।
মারধরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, রুহুল আমিন আমার ভাই ও ভাবীকে ধাক্কা দিয়েছিল। আমার ভাই পরিচয় দেয়ার পরেও গালি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মীরা যায়। আমি তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে আসি। উৎসঃ শীর্ষ নিউজ।